দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনা-আবহে যাবতীয় সুরক্ষাবিধি মেনে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য বাণিজ্যের কাজ চালু করার অনুরোধ জানিয়ে শনিবার বন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক। লকডাউনের পর থেকে প্রায় ৭৫ দিন পণ্য আমদানি-রফতানি কার্যত বন্ধ থাকার পর ফের রবিবার পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে এদিন ২৪টি পণ্য বোঝাই ট্রাক বাংলাদেশে পাঠিয়ে রফতানির কাজ শুরু করলেন বন্দর কর্তৃপক্ষ।
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, শনিবার ল্যান্ড পোর্ট অথরিটির পেট্রাপোল বন্দরের ম্যানেজারকে লেখা ওই চিঠিতে জেলাশাসক চৈতালী চক্রবর্তী পণ্য রফতানির কাজ শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাটাও জরুরী, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে যাবতীয় সুরক্ষা নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রের খবর,গত বৃহস্পতিবার বিকালে পেট্রাপোলে নো ম্যানস ল্যান্ডে ভারত-বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা বৈঠক করেন। ‘‘ওই বৈঠকে দু’দেশের প্রতিনিধিরা একমত হন, দ্রুত বাণিজ্য শুরু করতে হবে। প্রশাসনের নির্দেশের অপেক্ষা করা হচ্ছিল।’’ বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, জেলাশাসকের চিঠি পাওয়া গিয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশ আসার পরই বাণিজ্যের কাজ নিয়ম মেনে শুরু হল৷
লকডাউন পরবর্তী পরিস্থিতিতে পেট্রাপোল দিয়ে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে নানা জটিলতা দেখা দিয়েছিল। বাণিজ্য বন্ধের জন্য কেন্দ্রের কোনও নির্দেশ ছিল না। সীমান্ত দিয়ে অত্যাবশক পণ্যের যাতায়াত চালু রাখার কথাই বলা হয়েছিল। কিন্তু বন্ধ ছিল আমদানি-রফতানি। ক্ষতির সম্মুখীন হন ব্যবসায়ীরা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দাবি, রাজ্য সরকার কোনও রকম আইনি বিজ্ঞপ্তি জারি না করে একতরফা ভাবে সীমান্ত বন্ধ করেছে। রাজ্য প্রশাসনের পাল্টা যুক্তি ছিল, বাংলাদেশের জেলাগুলিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে। বাণিজ্য চালু থাকলে এ দেশের ট্রাক চালকদের বাংলাদেশে পণ্য খালি করতে গিয়ে কয়েক দিন থাকতে হবে। তাঁরা ফিরে এলে এ দেশে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে নানা জটিলতার পরে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য রফতানি চালু হয়েছিল মে মাসের শুরুতে। নো ম্যানস ল্যান্ডে ট্রাকে পণ্য ওঠানো নামানোর কাজ হয়। কিন্তু দু’একদিন পরেই তা ফের বন্ধ হয়ে যায়। রফতানি বন্ধ করার দাবি তোলেন লোডিং-আনলোডিংয়ের কাজে যুক্ত শ্রমিকেরা এবং স্থানীয় গ্রামবাসী। এরপর থেকেই বন্ধ ছিল বাণিজ্যে৷
কেন্দ্রের নির্দেশ আসার পরই রবিবার দুপুর থেকে স্বাস্থ বিধি মেনে চালু হল পেট্রাপোল সীমান্ত বাণিজ্য । কাজ শুরু হওয়ায় খুশির হাওয়া দু’দেশের ব্যাবসায়ী মহলে।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শুল্ক দফতরের নোটিফিকেশন ইস্যু করার পরই পুরোদমে চালু হল রফতানির কাজ, এদিন মোট ২৪টি পণ্য বোঝাই ট্রাক বাংলাদেশে ঢুকেছে, সোমবার থেকে পুরোদমে কাজ করা যাবে বলে মনে হচ্ছে, আমদানির কাজও ধাপে ধাপে শুরু হয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে ।”