মোহনবাগানের হাতে এল আইলিগ ট্রফি, রাজপথে শোভাযাত্রা সমর্থকদের

0
536

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনার আবহেও দুর্গাপুজোর আগেই যেন আগাম বোধন মোহনবাগান সমর্থকদের কাছে। রবিবার ছুটির দিনে কলকাতার দখল নিল সবুজ-মেরুন জনতা। ক্লাবের আইলিগ জয়ের আনন্দে ভাগীদার হতে তিলোত্তমাকে সবুজ-মেরুনে রাঙিয়ে দিলেন তাঁরা।  প্রতীক্ষার অবসান। অবশেষে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ২০১৯–২০ আই লিগ ট্রফি উঠল মোহনবাগান কর্তাদের হাতে। বাইপাসের ধারে একটি পাঁচতারা হোটেলে আই লিগ সিইও সুনন্দ ধরের উপস্থিতিতে মোহনবাগানের হাতে ট্রফি তুলে দিলেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায় এবং মোহনবাগানের শীর্ষকর্তারা। ছিলেন ক্লাব সভাপতি টুটু বসু। 

এই উপলক্ষ্যে সকাল থেকেই উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে মোহনবাগান সমর্থকদের মধ্যে। সবুজ মেরুন জার্সিতে ছয়লাপ বাইপাস থেকে শুরু করে শহরের একাধিক জায়গা।

বিজ্ঞাপন:

এদিন আইলিগের সিইও সুনন্দ ধর ও রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের উপস্থিতিতে আইলিগ ট্রফি তুলে দেওয়া হল বাগান কর্তাদের হাতে। টুটু বসু, সৃঞ্জয় বসু, দেবাশিস দত্ত-সহ বাগানের সব কর্তা হাজির ছিলেন এদিন। দেখা গেল বাগানের আইলিগ জয়ী একাধিক ফুটবলারকে। সবাই মিলে ভাগ করে নিলেন আনন্দ।

এদিকে এই ট্রফি জয় উপলক্ষ্যে শহরের রাস্তা ভরিয়ে দিয়েছেন সবুজ-মেরুন সমর্থকরা। দলের জার্সি গায়ে রাস্তায় নেমেছেন তাঁরা। উড়ছে আবির। কেউ বাইকে, তো অনেকে আবার ম্যাটাডোরে চেপে এই উৎসবে সামিল হয়েছেন। শুধু কলকাতা নয়, আশাপাশের একাধিক জেলা থেকে মোহনবাগান সমর্থকরা পৌঁছে গেছেন আনন্দের ভাগীদার হতে। গান বাজছে ‘আমাদের সূর্য মেরুন…’ সেই সঙ্গে সবার মুখে ‘জয় মোহনবাগান’ স্লোগান।

যাঁদের হাত ধরে ট্রফি এসেছিল, তাঁরা থাকতে পারবেন না। কেউ এ মরসুমে থাকলেও দলের সঙ্গে গোয়ায় রয়েছেন। আর অধিকাংশই দল ছেড়ে এবার অন্য শহরে চলে গিয়েছেন। সবুজ মেরুনের যিনি হেডস্যার ছিলেন, সেই কিবু ভিকুনা গোয়ায় রয়েছেন কেরালা ব্লাস্টার্সের কোচ হয়ে। তিনি সমর্থকদের কাছে অনুরোধ করেছেন, উৎসবের ছবি যেন তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মারফৎ।

বিজ্ঞাপন:

সল্টলেকের হোটেল থেকে খোলা জিপে একটি কাঁচের সুদৃশ্য বাক্সে সেই ট্রফি নিয়ে শুরু হবে মিছিল। শহরের চারটি জায়গা থেকে ওড়ানো হবে বিশেষ বেলুন। সেই চারটি জায়গা হল হাওড়া, ধর্মতলা, দেশপ্রিয় পার্ক এবং হেদুয়া-বিবেকানন্দ রোড। হোটেল থেকে বেরিয়ে কাদাপাড়া বাইপাস, দত্তাবাদ বাইপাস, বেঙ্গল কেমিক্যাল বাইপাস ধরে মিছিল যাবে উল্টোডাঙ্গা হাডকো মোড়ে।

তার পরে সমর্থকদের ওই মিছিল যাবে অরবিন্দ সেতু ধরে খান্না, এপিসি রোড ধরে ফড়িয়াপুকুর, শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে। পরে হাতিবাগান, হেদুয়া, বিবেকানন্দ রোড, গিরীশ পার্ক, সিআর অ্যাভিনিউ, ধর্মতলা হয়ে পৌঁছবে মোহনবাগান ক্লাবে।

শনিবার থেকেই সবুজ মেরুন তাঁবু আলো ঝলমল করছে। পুরো মাঠে আলপনা দিয়ে আঁকা হয়েছে সুদৃশ্য আই লিগ ট্রফি ও পালতোলা নৌকা। সমর্থকদের উচ্ছ্বাস শুধুমাত্র বাঁধভাঙা হওয়ার অপেক্ষা। আর সেটা শুরু হয়ে গিয়েছে রবিবার সকাল থেকেই।

অবশেষে কলকাতার রাজপথকে সবুজ–মেরুনে রাঙিয়ে দেওয়ার দিন। আজ অর্থাৎ রবিবার ভারতসেরা ট্রফি হাতে পেল মোহনবাগান। হাজারো সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটিয়ে সেই ট্রফি নিয়ে শুরু হয়ে গেল সমর্থকদের ভিকট্রি সেলিব্রেশন। আগামী দু’‌দিন এই সেলিব্রেশন চলবে শহরজুড়ে৷

তবে এই দিনটাই তো আলাদা, একেবারে অন্যরকম। এ হল শহরের ফুটবলপুজোর দিন। পুজোর দিনে তো সব কিছু মেনে নেওয়াই যায়।
হোটেলের গেট থেকে সুসজ্জিত গাড়িতে আই লিগ যখন বেরিয়ে এল রাজপথে, দু’পাশে তখন শুধুই সবুজ–মেরুন জার্সি। গেটের ওপাশে সমর্থকদের ভিড়। বারবার উঠল জয়ধ্বনি। রাস্তার কোথাও দেখা গেল মস্ত বড় পতাকা। কোথাও হল ছোট্ট অনুষ্ঠান। সারাক্ষণই বাজল গান। 

ছুটির দিনে হাজারো হাজারো বাগান সমর্থক বাড়ির যাবতীয় কাজ ফেলে শোভাযাত্রায় সামিল। 
বাইপাস সংলগ্ন পাঁচতারা হোটেল থেকে ময়দানের ক্লাব তাঁবু, যাত্রাপথ ধরে বাতাসে উড়ল আবির, দুলল পতাকা। চলল গান। সমর্থকদের ঠাসাঠাসি ভিড় উড়িয়ে দিল কোভিড সতর্কতা। হল যানজটও। অনেক সময়েই থমকে গেল শহরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। 

এই করোনার সময়েও মোহনবাগান জনতা দেখিয়ে দিলেন সবুজ–মেরুন আবেগের সামনে তুচ্ছ বাকি সব কিছু। সামাজিক দূরত্বের বিধিনিষেধকে অগ্রাহ্য করে আবেগে মাতল ফুটবলনগরী।

Previous articleত্বকের উপর প্রায় ৯ ঘণ্টা বেঁচে থাকে করোনাভাইরাস
Next articleফের করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল কলকাতা পুলিশের এক অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টরের

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here