নিজস্ব সংবাদদাতা,ঠাকুরনগর : মা হারা হলেন মতুয়া ভক্তরা। ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়ি প্রাঙ্গন জুড়ে এখন শুধুই মতুয়া ভক্তদের হাহাকার। ঠাকুরবাড়ির নাট মন্দিরে বরফের উপর শায়িত বড়মা বীণাপাণি ঠাকুরের নশ্বর দেহ শেষবারের মতো ছুঁয়ে, প্রণাম করে শ্রদ্ধা জানানোর পালা।
মঙ্গলবার রাতে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার খবর ছড়িয়ে পড়তেই হতাশ হয়ে পড়েন দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা হাজার হাজার মতুয়া ভক্তরা। সংবাদমাধ্যমের সূত্রে তাদের অনেকেই জানতে পারেন বুধবার সকালে ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়ি তে এসে পৌঁছাবে বড় মায়ের দেহ।
তাই তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে রাত থেকেই ঠাকুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন মতুয়া ভক্ত রা। প্রশাসনিক তৎপরতাও ছিল তুঙ্গে। বুধবার সকাল ১১ টা নাগাদ খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু তৃণমূলের প্রচুর নেতা মন্ত্রী দের সঙ্গে করে মরদেহ এসে পৌঁছায় ঠাকুরবাড়িতে।
মঙ্গলবার রাত থেকেই এই জেলা ছাড়াও জেলার বাইরে থেকেও প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয় । বাশের ব্যারিকেড করে শৃংখলাবদ্ধ ভাবে বড় মাকে শ্রদ্ধা জানানোর ব্যবস্থা করা হয় ।যদিও রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল নেতৃত্ব যত পরিমাণ মতুয়া ভক্তের সমাগমের ভাবনা
ভেবেছিলেন তার তুলনায় এদিন বিকেল পর্যন্ত মতুয়া ভক্তদের ঠাকুরবাড়িতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের ঢল অনেকটাই কম ছিল বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল। একজন মতুয়া হিসেবে ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ঠাকুরনগর এর বাসিন্দা রবি হালদারের। তিনি চোখের জল মুছতে মুছতে জানান একসময় আমরাই দেখাশোনা করতাম বড় মাকে।
এখন সবকিছুই রাজনৈতিক নেতাদের হাতে চলে গেছে। ফলে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। আর এখন বড়মাও নেই, ঠাকুরবাড়িতে আমাদের মত সাধারণ মতুয়া ভক্তদের আনাগোনাও কমে যাবে।
মঙ্গলবাড় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বড়মা বীণাপাণি ঠাকুরের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে ঠাকুরবাড়িতে।
সেই অনুযায়ী ঠাকুরবাড়ির কামনা সাগরের পাশে একটি জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। তবে মতুয়া ভক্তদের কথা মাথায় রেখে বুধবার বড়মার শেষকৃত্য সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘ। বড় মার মরদেহ রাখা হয়েছে নাটমন্দিরে৷সেখানেই বড়মা কে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে অসংখ্য ভক্ত আসছেন দূর-দূরান্ত থেকে৷ বৃহস্পতিবার গান স্যালুট দেওয়া হবে বড় মাকে।
প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও বড়মার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন৷ টুইট করে তিনি বলেন,”বড়মা আমাদের সময়ের একজন আইকন।
বহু মানুষের কাছে তিনি শক্তি ও অনুপ্রেরণার উৎস ছিলেন৷ তাঁর উচ্চ মতাদর্শ পরবর্তী প্রজন্মকেও প্রভাবিত করবে।এই দুঃখের সময়ে আমরা মতুয়া সম্প্রদায়ের পাশে আছি”।