দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ নিমতার তরুণ দেবাঞ্জন দাসের সঙ্গে প্রাক্তন প্রেমিকার ঘনিষ্ঠতা সহ্য করতে না পেরেই তাকে খুনের ছক কষেছিল প্রিন্স সিং। তদন্তকারীদের দাবি, পুলিশি জেরায় এ কথা স্বীকার করে ধৃত প্রিন্স এবং পুলিশি হেফাজতে থাকা তার বন্ধু বিশাল মারু জানিয়েছে, নবমীর দিন দুপুরে তারা দু’জন কৈখালি এলাকায় বন্ধু শ্যামের ফ্ল্যাটে যায়। সেখানে মেজাজ হারিয়ে প্রিন্স ঠিক করে দেবাঞ্জনকে খুন করবে। এর পর বিরাটির এক অপরাধীর সঙ্গে যোগাযোগ করে আগ্নেয়াস্ত্র জোগাড় করে সে। রাতে সল্টলেক সেক্টর ফাইভের একটি পানশালাতে যায় তারা। সেখানে মাত্র ২ ঘণ্টায় চূড়ান্ত হয় খুনের পরিকল্পনা।
রবিবার ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে প্রিন্সকে ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। ওই হত্যাকাণ্ড ঘিরে এখনও কিছু অমীমাংসিত প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে। প্রিন্সকে হেফাজতে নিয়ে তদন্তকারীরা সেগুলির জবাব পাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাঁদের বক্তব্য, নবমীর রাতে বিশালের স্কুটারে প্রিন্স দেবাঞ্জনের গাড়ি অনুসরণ করে।
রাত ২টো নাগাদ দেবাঞ্জন নিমতা সর্দারপাড়ায় প্রেমিকাকে বাড়িতে নামিয়ে ফেরার পথে প্রিন্স ও বিশাল তার পথ আটকায়। দেবাঞ্জন চালকের আসনের দিকের কাচ নামালে শুরু হয় তুমুল বচসা।
আচমকা গাড়ির বাইরে থেকে পরপর দুটি গুলি চালায় প্রিন্স। তবে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের মতে, পেছন থেকে গুলি না চালালে দেবাঞ্জনের দেহের ওই জায়গায় ক্ষত হওয়া সম্ভব নয়। ঘটনাস্থলে কোনও সিসি ক্যামেরা না থাকলেও কিছু দূরে একটি সিসি টিভির ফুটেজে বিশালের স্কুটারে দু’জনকে পালিয়ে যেতে দেখা যায়।
একাদশীর দিন পর্যন্ত প্রিন্স বাড়িতেই ছিল। তার পর সে আশ্রয় নেয় দমদমের মল রোডের বিশালের ফ্ল্যাটে। সেখান থেকে পালায় বজবজের চড়িয়ালে মাসির বাড়িতে। জানায়, একটি মারপিটের ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছে সে। আশ্রয় নিতে চায়। চুল–দাড়ি কেটে ভোলও পাল্টায়। তবে শেষরক্ষা হয়নি।
শনিবার দুপুরে ওই বাড়িতে হানা দেয় বজবজ থানার পুলিশ। খাটের তলায় লুকিয়ে থাকা প্রিন্সকে টেনে–হিঁচড়ে নিয়ে যায়। সন্ধে ৭টা নাগাদ নিমতা থানার পুলিশ পৌঁছলে তাদের হাতে ধৃতকে তুলে দেওয়া হয়।