দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ দূর থেকে সেনার কনভয় নজরে আসতেই হাজার হাজার মানুষের ‘জয় হিন্দ’, ‘বন্দেমাতরম’ স্লোগানে ফেটে পড়ল ওয়াঘা সীমান্ত। আকাশে উড়ল তেরঙ্গা। নিখুঁত তালে বেজে উঠল ঢোল। অপেক্ষার অবসান। দেশে ফিরলেন বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। সন্ধ্যা ৮ টা ৫০ মিনিটে অভিনন্দনকে নিয়ে আসার জন্য রওনা হয়ে যায় ভারতীয় কনভয়। তাঁকে ফেরত দেওয়ার আগে পাকিস্তান এমন কয়েকটি নথিপত্র চায়, যা তখন ভারতীয় অফিসারদের ছিল না। সেগুলি আনতে খানিক দেরি হয়। অনেকের ধারণা, ইচ্ছা করেই অভিনন্দনের প্রত্যর্পণে দেরি করেছে পাকিস্তান।

প্রায় ৬০ ঘণ্টার দমবন্ধ উৎকণ্ঠা, উদ্বেগের অবসান। শুক্রবার রাত ঠিক ৯.‌১৫ মিনিট। ভারতের মাটিতে পা রাখলেন ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। বিএসএফ তাঁকে স্বাগত জানায়। তারপর তাঁকে বায়ুসেনা এবং সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।বায়ুসেনা এবং সেনার কনভয় তাঁকে মেডিক্যাল চেক আপের জন্য নিয়ে যায়। সেখান থেকে বায়ুসেনার সদর দপ্তরে যাবেন অভিনন্দন বর্তমান। পুরো বিষয়ের উপর নজর রেখেছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।

পাকিস্তানের লাহোর হয়ে সড়কপথে ওয়াঘা সীমান্তে পৌঁছয় অভিনন্দনের কনভয়। কিন্তু প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত নথিতে জটিলতার ফলে তাঁর হস্তান্তর প্রক্রিয়া দেরি হয়।ওয়াঘার গেট পেরিয়ে অভিনন্দন ভারতে ঢুকতেই উল্লাসে ফেটে পড়ে জনতা। জাতীয় পতাকা আর ‘‌ভারত মাতা কি জয়’‌ ধ্বনিতে শুক্রবার দিনভর মুখরিত ছিল ওয়াঘা সীমান্ত। দেশবাসী বিকেল থেকেই অকাল দিওয়ালিতে মাতেন।

প্রথমে পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলা। তারপর ভারতের আকাশপথে প্রত্যাঘাত এবং পাকিস্তানের পাল্টা হামলা।সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ বছর বাদে সম্মুখ সমরে দুই দেশের বায়ু সেনা। এই আবহে ভারতীয় বায়ু সেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে মুক্তি দেয় পাকিস্তান।
বুধবার পাকিস্তানের মাটিতে মিগ ভেঙে পড়লে পাক সেনার হাতে বন্দী হন উইং কমান্ডার অভিনন্দন। কিন্তু তারপরই আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে ইসলামাবাদ। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সংসদে অভিনন্দনকে মুক্তির কথা ঘোষণা করেন।

বৃহস্পতিবার বিকেলেই পাকিস্তান জানিয়েছিল শুক্রবার ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে পাক সেনার হাতে আটক ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে। ভরা সংসদে এ কথা ঘোষণা করেছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তারপর থেকেই ভারতবাসীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ছিল তুঙ্গে।


শুক্রবার সকাল থেকেই ওয়াঘা সীমান্তে ভিড় জমিয়েছিলেন আশেপাশের গ্রামের বাসিন্দারা। কারও হাতে ঝলমল করছে তেরঙ্গা। কেউ বা মাথায় পরেছেন ভারতের পতাকার ছবি দেওয়া টুপি। কারও হাতে ছিল ফুলের মালা। বায়ুসেনার বিশেষ দলের পাশাপাশি ওয়াঘা পৌঁছেছিলেন অভিনন্দনের বাবাও।

কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে ওয়াঘা সীমান্ত। জানা গিয়েছে, এখান থেকে কনভয়ে করে অমৃতসর এয়ারবেসে নিয়ে যাওয়া হবে অভিনন্দনকে। তারপর সেখান থেকেই বিমানে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হবে উইং কম্যান্ডারকে। যে যে জায়গায় অভিনন্দন যাবেন, সব জায়গাই কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলেছে পাঞ্জাব পুলিশ।

ছবি- সংগৃহীত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here