দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পাঞ্জাব এবং হিমাচল প্রদেশের সবক’টি লোকসভা আসনের পাশাপাশি আজ শেষ দফার ভোট বিহার, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চণ্ডীগড়েও। মোট ৫৯টি আসনে ভোট হবে এ দিন। যার মধ্যে বাংলায় ৯টি।

সকাল থেকেই বুথে বুথে মানুষের লম্বা লাইন। একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ আজ। ভোট হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কেন্দ্র বারাণসীতে। বিহারের পাটনা সাহিবে মুখোমুখি লড়ছেন শত্রুঘ্ন সিনহা এবং কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ।

বাংলাতেও একাধিক বড় মাপের নেতার দিল্লির টিকিট কনফার্ম করার লড়াই। শেষ দফায় বাংলায় যে ন’টি আসনে ভোট সেগুলি হলো, বসিরহাট, দমদম, ডায়মন্ডহারবার, জয়নগর, মথুরাপুর, যাদবপুর, দুই কলকাতা এবং বারাসত। হেভিওয়েটদের মধ্যে রয়েছেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দুই অভিনেত্রী প্রার্থী মিমি চক্রবর্তী এবং নুসরত জাহান, সিপিএমের বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, বিজেপির সায়ন্তন বসু, শমীক ভট্টাচার্য।

লোকসভার পাশাপাশি বেশ বিধানসভার উপনির্বাচনও রয়েছে এ দিন। যার মধ্যে অন্যতম ভাটপাড়া। অর্জুন সিং-এর পুত্র পবন সিং-এর সঙ্গে লড়াই মদন মিত্রের। বাংলায় অবাধ ভোট করাতে মরিয়া কমিশন। ১০০ শতাংশ বুথে থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাড়ানো হয়েছে কুইক রেসপন্স টিম।

বুথের পর বুথে ইভিএম বিকল-

ছ’দফা ভোট হয়ে গিয়েছে বাংলায়। সব দফাতেই একটা-আধটা বুথে ইভিএম বিকল হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পনেরো মিনিট, আধঘণ্টার মধ্যে তা বদলে ভোট শুরুও হয়েছে। কিন্তু সপ্তম দফায় ইভিএম খারাপ যেন ছোঁয়াচে রোগে পরিণত হয়েছে। সন্দেশখালি থেকে ভাঙড়, জয়নগর থেকে দমদম। বুথের পর বুথে ভোট যন্ত্র বিকল হওয়ার ঘটনা ঘটেছ এ দিন।

শুধু তো বিকল নয়, তা বদলে ভোট চালু করতেও বেশ কিছু জায়গায় ঘণ্টা দুয়েক সময় লেগেছে বলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অভিযোগ। কিন্তু কেন এমন ঘটনা তার উত্তর না মিললেও, তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস—প্রায় সব দলের নেতারাই প্রশ্ন তুলেছেন এই ঘটনা নিয়ে। সবারই একই কথা, এতে সবচেয়ে বেশি নাজেহাল হতে হচ্ছে সাধারণ ভোটারদের।

কমিশনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলছে রাজনৈতিক দলগুলি। তাঁদের বক্তব্য, মেশিন বিকল হতেই পারে। কিন্তু তা বদলাতে কমিশনের যেন ঘুমই ভাঙছে না। কোথাও দেড়ঘণ্টা, কোথাও দু’ঘণ্টা পর্যন্ত ভোট বন্ধ থেকেছে। সোনারপুরের একটি বুথে সকাল সাড়ে দশটা পর্যন্ত ভোট চালু করা যায়নি। ফলে বহু ভোটার দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর ঘরমুখো হাঁটা দিয়েছেন। ভোটারদের বক্তব্য, এই গরমে এ ভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব নয়।

কমিশনের তরফে বলা হয়েছে, কিছু ভোটযন্ত্র বিকল হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বিঘ্নেই চলছে ভোট। ভোটযন্ত্র বিকল হওয়ার ঘটনা নিয়ে সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারদের থেকে রিপোর্ট চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই রিপোর্ট পাঠানো হবে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে। কিন্তু যেখানে যেখানে যতক্ষণ ভোট বন্ধ হয়েছে সেখানে কি ততটা বাড়তি সময় ভোটগ্রহণ হবে? কমিশন সূত্রে খবর, নির্ধারিত সময় পর্যন্ত যাঁরা লাইনে দাঁড়াবেন তাঁদের ই ভোটগ্রহণ হবে।

কোথাও ইভিএম খারাপ তো কোথাও ভিভিপ্যাটের সমস্যা। এমন কোনও লোকসভা কেন্দ্র নেই যেখানে এই ঘটনা ঘটেনি। পর্যবেক্ষকদের মতে, বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর মিললেও, সপ্তম দফার ভোটের শুরুতে ভিলেন ভোটযন্ত্র।

লাইনে দাঁড়িয়ে মৃত্যু ভোটারের-

বিক্ষিপ্ত অশান্তির মধ্যেই সকালটা কাটল সপ্তম তথা শেষ দফার বাংলার ভোট। প্রবল গরমে লাইনে দাঁড়িয়ে মৃত্যু হল এক ভোটারের। ঘটনাটি ঘটেছে যাদবপুর লোকসভার অন্তর্গত সোনারপুরের রানিয়া কাস্ট পাড়ায়। মৃতের নাম অধীর মণ্ডল (৫৫)।

উত্তর কলকাতার কাশীপুর, বেলগাছিয়া, পাইকপাড়া-সহ বিভিন্ন অঞ্চলে সিপিএম এজেন্টদের বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে সকালেই আরজিকর হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভে বসে পড়েন বাম প্রার্থী কনীনিকা ঘোষ।

নয় লোকসভা আসনের একাধিক জায়গা থেকে ভোটযন্ত্র বিকল হওয়ার খবর এসেছে। ডায়মন্ড হারবার, মথুরাপুর, জয়নগর, বারাসত, দমদম, বসিরহাটের বহু বুথে ভোট যন্ত্র খারাপ হয়ে যায়। বেশ কিছু বুথে সলা নটা পর্যন্ত ভোট চালু হয়নি বলে জানা গিয়েছে।

সল্টলেকের বিএল ব্লক এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বুথে লোডশেডিং-এর কারণে বেশ কিছুক্ষণ থমকে থাকে ভোটগ্রহণ।

রাজারহাটে বিজেপি-র ক্যাম্প অফিস পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

মিনাখা, সন্দেশখালি, হাড়োয়ায় বিজেপি এজেন্টদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী সায়ন্তন বসু বলেন, “বেশ কিছু জায়গায় তৃণমূল গুণ্ডামী করছে। তবে মানুষের প্রতিরোধের সামনে পিছু হঠতে হচ্ছে শাসকের ভাড়াটে বাহিনীকে।”

ডায়মন্ড হারবার লোকসভার অন্তর্গত সাতগাছিয়া, ফলতায়, একাধিক বুথে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ছাপ্পার অভিযোগ তুলেছে সিপিএম। প্রার্থী ফুয়াদ হালিম নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও জানিয়েছেন।

রবিবার শেষ দফায় সকাল ৯টা পর্যন্ত পড়েছে

দমদম- ১৬.৫৭%

বারাসত- ১৪.৭৮%

বসিরহাট- ১৫.৬৭%

জয়নগর- ১১.৪৩%

মথুরাপুর- ১৫.৬৮%

ডায়মন্ড হারবার-১৩.৩২%

যাদবপুর- ১৭.১১%

কলকাতা দক্ষিণ- ১১.৯২%

কলকাতা উত্তর- ১১.০৮%

গড়- ১৪.১৭ ছবি তুলেছেন- অর্পিতা দে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here