দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মতুয়া মেলা বন্ধ করার আবেদন জানিয়ে বনগাঁর সাংসদকে স্মারক লিপি দিতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের মারে আহত হলেন পাঁচজন বিজেপি নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে একজনের আঘাত গুরুতর। এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে বনগাঁর বিজেপির সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। এব্যাপারে এখনও অবশ্য শান্তনু ঠাকুরের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতার জন্য বারুণী মেলা বন্ধ করার আবেদন জানিয়ে রবিবার ঠাকুরনগর স্টেশনের কাছে মাইক লাগিয়ে প্রচার করেন স্থানীয় বিজেপি নেতাকর্মীরা। ঠাকুরনগরে মতুয়াদের বারুণী মেলা বন্ধ করার ব্যাপারে তাঁরা গণসই সংগ্রহ করেন। মেলা বন্ধের আবেদন জানিয়ে সোমবার তাঁরা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে স্মারকলিপি জমা দেন।
সোমবার রাতে জনাপাঁচেক বিজেপি নেতা-কর্মী যান বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা ঠাকুরনগরের মতুয়া মহাসঙ্ঘের নেত্রী মমতাবালা ঠাকুরের কাছে। তাঁর কাছে স্মারকলিপি জমা দেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। সুটিয়া অঞ্চলের বিজেপি নেতা বাবলু দাসের অভিযোগ, তাঁরা বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে গেলে তিনি তা নেননি। তাঁর কাছ থেকে বেরিয়ে এসে ওই বিজেপি নেতাকর্মীরা গাড়িতে উঠতেই শান্তনু ঠাকুরের লোকজন এসে বেধড়ক মারধর করে। যে গাড়িতে তাঁরা এসেছিলেন সেই গাড়ির সব কাচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় মোট পাঁচজন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মলয় মণ্ডল নামে একজনেএকজনের অবস্থা গুরুতর।
তাঁর কানে সেলাই পড়েছে।
শান্তনু ঠাকুর নিজেও ঠাকুরবাড়ির লোক এবং মমতাবালা ঠাকুরের নিকট আত্মীয়। বাবলু দাস বলেন, “শান্তনু ঠাকুর মতুয়া তবে আমরা বিজেপি। আমরা চাই করোনাভাইরাস এড়ানোতে প্রধানমন্ত্রী যখন জমায়েত এড়াতে বলছেন তখন এই মেলা বন্ধ থাক।”
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে জমায়েত বন্ধ করার আবেদন করা হচ্ছে প্রশাসনের সব পক্ষ থেকে।
ধর্মস্থানেও জমায়েত নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। রোমের ভ্যাটিকান সিটিতে ইস্টার উপলক্ষে এক সপ্তাহ ধরে যে উৎসব চলে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পশ্চিম এশিয়ার মক্কা-মদিনা-জেরুজালেমেও বন্ধ হয়েছে জমায়েত। দেশের বহু মন্দিরের দরজা বন্ধ হয়েছে। বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ভোগ বিতরণ পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে করোনা থেকে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে। বনগাঁর বিজেপি নেতা দেবদাস মণ্ডল এ বিষয়ে কোন বক্তব্য দেননি৷তবে প্রবীণ কিছু বিজেপি নেতারা বলেন আগে মানুষের জীবন, আর সেটা রক্ষা করার দায়ীত্ব আমাদের সকলের৷দলমত নির্বিশেষে আমরা চাইছি জমায়েত এড়াতে এবছর ঠাকুরনগরে মতুয়ামেলা বন্ধ থাক। ব্যবসায়ায়িক স্বার্থেই অনেকে এই মেলা বন্ধ করতে চাইছেন না বলে অভিযোগ করেন তাঁরা৷ পাশাপাশি এটাও বলেন শান্তনু ঠাকুরের সিদ্ধান্তকেও তাঁরা গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন।