দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ বাংলায় কখনওই জাতীয় নাগরিক পঞ্জী বা এনআরসি তিনি করতে দেবেন না। বৃহস্পতিবার এনআরসি–র প্রতিবাদে সিঁথির মোড় থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মিছিল শেষে এমনটাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিনেত্রী লকেট চ্যাটার্জি বলেছিলেন, বাংলায় এনআরসি হবেই, কমপক্ষে দুকোটি মানুষের নাম বাদ যাবে।
সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মমতার কড়া বার্তা, ‘বাংলা থেকে বলছে দুকোটি লোককে বাদ দেবে। একটা লোকের গায়ে হাত দিয়ে দেখ। এনআরসি কী তৃণমূল কংগ্রেস দেখে নেবে ভালো করে। আরেকটা বঙ্গভঙ্গ বা দেশভাগের চেষ্টা করবেন না। বাংলার সংস্কৃতিকে অপমান করা হয়েছে।’ তবে প্রধানমন্ত্রীর পদকে তিনি কখনও অসম্মান করেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
অসমে এনআরসি–তে বাদ পড়া ১৯ লক্ষের মধ্যে অনেক মুসলিমের সঙ্গে বৌদ্ধও আছে। এমনকি জন্মের শংসাপত্র দিয়েও তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন অনেকে। পুলিসের ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। সেকথা উল্লেখ করে মমতা বলেছেন, ‘বাংলা কখনও মাথা নত করবে না।
স্বাধীনতা হয়ে গিয়েছে ৭৩ বছর এখন প্রমাণ দিতে হবে আমরা দেশের নাগরিক কিনা। পুলিস দিয়ে অসমে মুখ বন্ধ করতে পার। বাংলার মুখ বন্ধ করা সহজ নয়। আমরা বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে লড়াই করার লোক। বাংলায় ভাষা, ধর্মে ভিত্তিতে এনআরসি করতে দেব না।’
বন্দে মাতরম্ স্লোগান বাংলা থেকেই তৈরি হয়েছিল বলে এদিন রাজ্যবাসীকে মনে করিয়ে দিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, ‘আগুন নিয়ে খেলবেন না।’ এনআরসি–র বিরুদ্ধে রাজ্যবাসীর কাছে জোটবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান করে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘জনবিরোধী নীতি নিলে আন্দোলন হবেই। অস্তিত্ব সংকট হলে আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই তার উত্তর দিতে হয়।
কেউ কাউকে বাঁচায় না। নিজেকেই লড়াই করতে হয়।’
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির তল্লাশি অভিযানকে কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলায় দুর্গাপুজোর আড়ম্বরের উল্লেখ করেছেন।
কলকাতা থেকে ইউবিআই এবং এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের হেডঅফিস তুলে দিল্লি এবং চেন্নাই নিয়ে যাওয়ার সমালোচনা করেছেন। এদিন দেশের অর্থনৈতিক বেহাল দশা নিয়ে কেন্দ্রকে তুলোধনা করে মমতা বলেছেন, ওই সমস্যা থেকে দেশবাসীর নজর ঘোরাতে এবং সেটা ধামাচাপা দিতেই অন্যান্য ইস্যু তুলে আনছে কেন্দ্র। এয়ার ইন্ডিয়া, বিএসএনএল, রেল, সেল, অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি সব কিছুই বেসরকারি হাতে তুলে দিতে চাইছে মোদি সরকার বলেও তীব্র কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।