দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গ, অসম, তামিলনাড়ু সহ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট আসছে। রবিবার তারই প্রচারের মহরৎ করে ফেললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার সকালে প্রথমে অসমে সভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তার পর হলদিয়ায় হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে সভা করছেন মোদী। বাংলায় একুশের ভোটের আবহে এটাই তাঁর প্রথম রাজনৈতিক সভা।

এদিন হলদিয়ায় রাজনৈতিক সভায় যোগ দিয়ে সরাসরি মুখ্য়মন্ত্রীকে একের পর এক তোপ দাগলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । তিনি বলেন, ‘মমতা দিদি পরিবর্তনের কথা বলেছিলেন। মানুষ ভরসা করেছিল। কিন্তু, নির্মমতা পেয়েছেন। পরিবর্তন হয়নি, সুদ সহ বাম শাসনের পুনরুজ্জীবন হয়েছে।’ তাঁর সংযোজন, ‘অপরাধ, হিংসার পুনরুজ্জীবন হয়েছে।’ পাশাপাশি কৃষক সম্মান নিধি বাংলায় চালু করতে দেওয়া হয়নি এই অভিযোগ তুলে তৃণমূল সরকার কৃষক বিরোধী বলেও মন্তব্য করেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি, ‘কৃষকদের অধিকার আমি দিয়েই ছাড়ব।’ কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক প্রকল্প বাংলায় চালু করতে না দেওয়া নিয়েও সরব হয়েছেন তিনি। মন্তব্য করেছেন, ‘বাংলাতেও দ্রুত উন্নয়ন করতে ডবল ইঞ্জিন সরকার চাই। দুর্নীতি আর তোলাবাজি তখনই বন্ধ হবে যখন বাংলায় আসল পরিবর্তন আসবে।’ কী এই পরিবর্তন? মোদী বলেন, ‘ত্রিপুরার মানুষ তা অনুভব করছেন।’

তিনি বলেছেন, ‘কংগ্রেস এখানে দুর্নীতি করেছে, বাম এসে এর সঙ্গে অত্যাচারটাও জুড়েছিল।’ তাঁর খোঁচা, ‘তৃণমূল একটার পর একটা ফাউল করেছে। বাংলার মানুষ সব দেখেছে। তাই এবার বাংলার মানুষ তৃণমূলকে রাম কার্ড দেখাবে।’ বিজেপি-র অন্য নেতাদের মতো তিনি ‘বুয়া-ভাতিজা’-র প্রসঙ্গ তোলেন।

বক্তব্যের শেষের দিকে তিনি বলেন, ‘আমাদের লড়াই তৃণমূলের সঙ্গে। তবে বাম, কংগ্রেস, তৃণমূল একসঙ্গে ম্যাচ ফিক্সিং করছে। সতর্ক হতে হবে। কোনও ধোঁকাবাজি যাতে না হয় তা দেখতে হবে।’ তাঁর অভিযোগ, বাংলার সরকার ঠিক সময়ে মাইনে দিতে পারে না। তাঁর প্রতিশ্রুতি, ‘আমাদের সরকার গঠনের পর মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে কৃষকদের জন্য এই প্রকল্প চালু করার সিদ্ধান্ত নেবে।’ মোদীর কটাক্ষ, ‘দিদিকে উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন করলে রেগে যান। ভারত মাতার স্লোগান শুনলেও রেগে যান মমতা। দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে, অথচ দিদি চুপ কেন।‘ বক্তব্যের শুরুতেই তিনি বলেন, ‘একটি প্রশ্ন করতে চাই, এক সময় বাংলা দিশা দেখাত। কেন বাংলায় উন্নয়নের সেই গতিধারা ধাক্কা খেল? উন্নয়নের সেই ধারা বজায় থাকলে বাংলার ছবি বদলে যেত।’

পাশাপাশি এদিনের সভায় উত্তরাখণ্ডে তুষারধস নিয়ে উদ্বেগ শোনা যায় প্রধানমন্ত্রীর গলায়। বলেন, ‘সবাইকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। উদ্ধারকাজ চলছে।’ শুরুতেই সবাইকে চমকে বাংলাতেই সম্বোধন করে তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয় মা, বোন, ভাই, বন্ধুরা। মেদিনীপুরের মাটিতে আসতে পেরে ভালো লাগছে। ভারতকে দিশা দেখানো এই মাটিকে আমি প্রণাম জানাচ্ছি। এই মাটিতেই তৈরি হয়েছিল তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার।’রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন, পূর্ব মেদিনীপুর থেকে এদিন একপ্রকার নির্বাচনী প্রচার শুরু করলেন মোদী।

উল্লেখ্য, তেখালির সভা থেকে নন্দীগ্রামের প্রার্থী হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই জেলাতেই রাজনৈতিক সভা করলেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্যে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শুভেন্দু রায়ের, মুকুল রায়, দেবশ্রী চৌধুরী, রাজীব বন্দ্য়োপাধ্য়ায় সহ আরও অনেকে। শিল্পশহরে মোদী শেষ কর্মসূচি করেছিলেন ২০১৯ সালে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here