দেশের সময়: দু’দিন আগেই কলকাতার শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে চারজন ডোম নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল রাজ্য সরকার। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ যখন দানবীয় কায়দায় আছড়ে পড়ছে, লম্বা হচ্ছে মৃত্যু মিছিল তখন জেলাতেও মৃতদেহ সত্‍কারের কাজের জন্য ডোম নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করল স্বাস্থ্য ভবন।

শনিবার রাতে স্বাস্থ্য দফতর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে নদিয়া জেলার জন্য ৮ জন ডোম নিয়োগ করা হবে। বলা হয়েছে জেলার ৪টি মহকুমায় ২ জন করে ডোম কাজ করবেন। মোট ৮ জন। আপাতত ছমাসের জন্য তাঁদের নিয়োগ করা হবে। মাসিক বেতন ১০ হাজার টাকা।

কলকাতায় কোভিডে মৃত্যু বাড়ছে। এবার কি জেলাতে সেই আশঙ্কা করছে রাজ্য সরকার? সূত্রের খবর, বিভিন্ন জেলায় প্রয়োজন বুঝে এ ভাবেই কোভিড পরিস্থিতিতে ডোম নিয়োগ করবে স্বাস্থ্য ভবন।


বাংলার সংক্রমণ প্রতিদিন রেকর্ড ভাঙছে। শনিবার রাতে যে বুলেটিন প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে ১৪ হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৫৯ জনের। নদিয়াতে সংক্রামিত হয়েছেন ৬০০-র বেশি। মারা গিয়েছেন তিন জন।

রাজ্যের পাশাপাশি বনগাঁ মহকুমাতেও করোনা রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। বনগাঁ হাসপাতালে নতুন করোনা ওয়ার্ড চালু হওয়ার পরই সেখানে তিনজন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এই মুহূর্তে সেখানে ১১ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছেন।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে কাবু গোটা দেশ। তার সঙ্গে রাজ্য বিশেষ করে কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকেরাও নাজেহাল হয়ে পড়ছেন। প্রতিদিন যে পরিমাণে করোনা টেস্ট হচ্ছে তার বাইরে অনেক রোগী উপসর্গহীন অবস্থায় রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও এ ব্যাপারে অজানা আতঙ্কে ভোগার কোন দরকার নেই বলে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন। সবাইকে সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য অনুরোধ করছেন তাঁরা।

এই পরিস্থিতিতেও রাস্তায়, বিভিন্ন বাজারে যে পরিমাণে ভিড় হচ্ছে তাতে আরো বেশি আশঙ্কার মেঘ দেখছেন মানুষ। এখনো অনেকে মাস্ক ছাড়াই রাস্তায় ঘোরাঘুরি করছেন, বাজারে যাচ্ছেন। অকারনে বাজারে ভিড় যাতে না হয়, সে ব্যাপারে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন সচেতন মানুষ। অনেকেই মনে করছেন, এলাকাভিত্তিক লকডাউন এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যদিও এখনও এ ব্যাপারে কোনো সরকারি সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানা গেছে। অভিজ্ঞ মহল মনে করছে, রাজ্যের যেসব এলাকায় নির্বাচন শেষ হয়ে গেছে, সেইসব এলাকায় অবিলম্বে প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ জারি করা প্রয়োজন। এখনই এ ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত না নেওয়া হলে, পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে, করোনার ব্যাপারে ইতিমধ্যেই বনগাঁ পৌরসভার পক্ষ থেকে কয়েকটি বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পাড়ায় পাড়ায় মাইক প্রচার চালানো হচ্ছে। অকারণে বাড়ির বাইরে না যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।

সীমান্ত শহর বনগাঁর করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, এলাকাভিত্তিক লকডাউনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here