দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ফের বন্ধ হয়ে হয়ে গেল রফতানির কাজ৷ বন্দর সূত্রের খবর, বাংলাদেশের রফতানিকারীদের একাংশ এ দেশ থেকে পণ্য বোঝাই ট্রাক বেনাপোলে ঢুকতে বাধা দেওয়ায় বাণিজ্যে বাধা আসে বুধবার খেকে । বুধবার এ পার থেকে পণ্য নিয়ে কোনও ট্রাক বেনাপোলে ঢুকতে পারেনি।
বেনাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’ সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে,বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য রফতানি চালুর দাবি জানিয়ে এ দেশের প্রশাসনকে আগেই চিঠি দিয়েছিল।কিন্তু এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের দিক থেকে কোনও ট্রাককে পেট্রাপোলে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। তার ফলে বিপুল ক্ষতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাঁদের। তাঁরা জানিয়েছেন, বেনাপোল থেকে পেট্রাপোলে ট্রাক প্রবেশের সবুজ সঙ্কেত না মেলা পর্যন্ত ভারতের ট্রাককে ও দেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
বেনাপোলের ওই সংগঠন সূত্রে জানা আরও গিয়েছে,বেনাপোল বন্দরে পণ্য নিয়ে প্রায়৭০০-৮০০ বাংলাদেশি ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে।আটকে থাকা বাংলাদেশি ট্রাকের মধ্যে রয়েছে তাঁতের শাড়ি, ওড়না, নকশি কাঁথা, বিভিন্ন পোশাক সামগ্রী, চট, মাছ ধরার জাল।
“বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য রফতানির কাজ শুরু না হওয়ায় ব্যাবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতি বাড়ছে। লরির যন্ত্রপাতি নষ্ট হতে বসেছে ।”
বাংলাদেশ ব্যবসায়ীরা প্রশ্ন তুলেছেন, ভারতীয় চালকেরা পণ্য নিয়ে বেনাপোলে ঢুকতে পারলে ও পারের চালকেরা কেন পেট্রাপোলে প্রবেশ করতে পারবেন না?
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের দাবি, বেনাপোল বন্দর এলাকা এখন করোনামুক্ত, গ্রিন জ়োনে রয়েছে। ফলে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা নেই। ট্রাক চালকেরা সুরক্ষা পোশাক পরেই ভারতে ঢুকবেন এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও কোন হেল দোল নেই পেট্রাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের৷
পেট্রাপোল সীমান্তের ব্যবসায়ীরাও চাইছেন, বেনাপোল থেকে পণ্য আমদানি শুরু হোক। ‘পেট্রাপোল এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি পরিতোষ বিশ্বাস দেশেরসময় কে জানান, “বেনাপোল থেকে পণ্য রফতানির কাজ এই মুহুর্তেই শুরু হোক। না হলে বহু ব্যবসায়ী এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকারও।” স্বাস্থ্য বিধি মেনে কাজ শুরু হোক দ্রুত,দু’পারের অসংখ্য মজদুরও আর্থিক সংকটে ধুকছেন,তাঁদের কথাও সরকার কে ক্ষতিয়ে দেখতে হবে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি গোপাল শেঠ জানিয়েছেন, বাংলাদেশের বেনাপোল বন্দর থেকে পণ্য আমদানি শুরু করার জন্য রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবকে তিনি চিঠি দিয়েছেন।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এন্ড স্টাফ ওয়েল ফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, বেনাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’ সংগঠনের দাবি আমরা কোন ভাবেই অস্বীকার করতে পারিনা,তাঁদের সঙ্গে আলোচনা চলছে ,তবে লকডাউন পর্বে ৭৫ দিন বন্ধ থাকার পরে দীর্ঘ জটিলতা কাটিয়ে ৭ জুন থেকে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে শুরু হয়েছিল পণ্য রফতানির কাজ। ধীরে ধীরে তার গতিও বাড়ছিল দু’দেশের বাণিজ্যে ফের জোয়ার আসতে শুরু করেছিল ,তা ফের ধ্বাক্কা খেল, এতে দু’দেশের আর্থিক ক্ষতি যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, পাশা পাশি এই সীমান্ত থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন বহু ব্যাবসায়ী যার ফল আগামী দিনে দু’পারের কয়েক হাজার সাধারণ মানুষের কাজ হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। তাই দু’দেশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছেই আমাদের এ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ খেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়ে সীমান্ত বাণিজ্য ফের সচল করতে হবে।
বাবেনাপোল ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার পেট্রাপোলের ম্যানেজার শুভজিৎ মণ্ডল বলেন, “বেনাপোল থেকে পেট্রাপোল বন্দরে পণ্য আমদানির কাজ শুরু করার জন্য রাজ্যের প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা আসেনি। রাজ্যের কোনও স্থলবন্দর থেকেই পণ্য আমদানির জন্য রাজ্য সরকার অনুমতি দেয়নি এখনও পর্যন্ত।”