দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: দেশ জোড়া লক ডাউনের কারণে ট্রাক, লরির যাতায়াত বন্ধ হয়েছে আগেই। করোনার ভয়ে চালক–খালাসিরাও বেশিরভাগ কাজ ছেড়ে চলে গেছেন। ফলে লক ডাউনের দ্বিতীয় পর্যায়ে, ২০ এপ্রিল থেকে কেন্দ্র সরকার অত্যাবশ্যক পণ্য পরিবহণে ছাড় দিলেও লোক পাওয়া যাচ্ছে না ট্রাক চালানোর। এরকম আরও কিছুদিন চললে, পণ্য পরিবহণ এবং জোগান বন্ধ থাকলে, নিশ্চিত টান পড়বে খাদ্য খাবারেও!
চালক, খালাসিদের করোনা আতঙ্ক ছাড়াও এখন রাস্তায় যাতায়াতের আরও বহু অসুবিধে। হাইওয়ের ধারের ধাবা সমস্ত বন্ধ। ফলে খাবার জুটবে না। বাড়তি ঝামেলা হাইওয়েতে, শহরে–গঞ্জে পুলিসের উৎপাত। সেই কারণেই লক ডাউনের আগে যে সব ট্রাক, লরি রাস্তায় নেমেছিল, সেগুলোও এখন দুধারে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে। ভারতে এ ধরনের ভারি পণ্যবাহী যান প্রায় ৫০ লাখ। তার ৫০ শতাংশেরও বেশি এখন গ্যারেজবন্দি। ৮৫% চালক, খালাসির কোনও হদিস নেই। সবাই করোনার ভয়ে উধাও। ফলে ট্রাক–মালিকরা ইচ্ছে থাকলেও পণ্য পরিবহণ চালু করতে পারছেন না।
এমনিতেই ১৪ এপ্রিল দেশে লক ডাউন ঘোষিত হওয়ার পর থেকে পণ্যের আমদানি–রপ্তানি বন্ধ থেকেছে টানা ২১ দিন। পেট্রাপোল সীমান্ত সহ দেশের সমস্ত সীমান্তে পণ্যবাহী যান আটকে গিয়েছিল। কাজ নেই, রোজগার বন্ধ, তাই বিভিন্ন গোডাউনে মাল খালাস করেন যে শ্রমিকরা, তাঁরাও যে যার মতো চলে গেছেন। ফলে সরকার এখন পণ্য পরিবহণকে ছাড় দিলেও ট্রাকের চাকা আর গড়াচ্ছে না।
সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ভারতে সড়কপথে পণ্য পরিবহণে যুক্ত প্রায় ৮০ লক্ষ চালক, এক কোটিরও বেশি খালাসি। প্রায় ৩ কোটি মানুষ সরাসরি যুক্ত, সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ কোটি মানুষের রুটিরুজি এই ব্যবসা।
লক ডাউন চলতে থাকলে শুধু এই ১৫ কোটি মানুষই নয়, আরও বহু কোটির জীবন বিপন্ন হবে। কারণ মালের জোগান না থাকলে শহরের দোকানপাটও ক্রমশ খালি হয়ে যাবে। আর ট্রাক মালিকদের রুটিরুজিও বন্ধ হবে, সীমান্ত বাণিজ্যের সাথে যুক্ত প্রদীপ দে’র কথায়,যাঁদের অনেকে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে আমদানি ও রপ্তানি এবং পরিবহণ ব্যবসায় নেমেছেন। এঁরা ঋণ শোধ করতে না পারলে নতুন করে অনাদায়ী ঋণের বোঝা চাপবে দেশের ব্যাঙ্কগুলোর ওপর। দেশে লকডাউন ঘোষণার পর প্রায় ৬৩% শতাংশ ট্রাক মালিক এমনিতেই ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। রাতারাতি কর্মহীন হয়েছেন লাখ লাখ দিনমজুর।পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ারের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান,শ্রমিকদের মন থেকে করোনা ভয় দূর করতে পেট্রাপোল স্থল বন্দরে স্বাস্থ্য পরিষেবায় আরও জোর দিতে হবে সরকারকে৷ এখানে স্বাস্থ পরিষাবার পরিকাঠামো একেবারেই নেই বললেই চলে। ট্রাক চালক খালাসি থেকে সমস্ত শ্রমিকদেরকে বুঝিয়ে ফের কাজে নিযুক্ত না করলে দেশের অর্থনিতিও তলানিতে ঠেকবে বলে ধারনা৷সেই সাথে খাদ্য খাবারের সংকট দেখা দেবে চরম ভাবে৷