দেশের সময় ওযেবডেস্কঃনারদ মামলায় নাটকীয় মোড়। চার অভিযুক্তের শর্তসাপেক্ষে অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চের। ২ লাখ টাকার ব্যক্তিগত বণ্ডে জামিন পেলেন ফিরহাদ হাকিম, শোভন চট্টোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায়। একইসঙ্গে আদালতের নির্দেশ, নারদ মামলা সহ পুরনো কোনও মামলা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সাক্ষাৎকার দিতে পারবেন না এই চার অভিযুক্ত। কোনও তথ্য প্রমাণও বিকৃত করা যাবে না বলে সতর্ক করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার অর্থাৎ গতকাল সন্ধেবেলাতেই মদন মিত্রের একটি ভিডিও ফেসবুকে হঠাৎ ভাইরাল হয়ে যায়। বছর দুয়েক আগের সেই ভিডিওতে মদনবাবু রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইছিলেন— “আমার মুক্তি আলোয় আলোয়, এই আকাশে…!”
কাকতালীয় ভাবে তার পরেই নারদ মামলার শুক্রবারের শুনানি শেষে মুক্তি পেলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্যায়রা। শর্তসাপেক্ষে চার নেতা-মন্ত্রীর জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতানৈক্যের কারণেই এই মামলায় বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করতে হয়েছিল হাইকোর্টকে। তবে এদিন পাঁচ বিচারপতিই ধৃত চার জনের জামিনের পক্ষ মত দিয়েছেন।
এদিন শুনানির শুরুতেই সিবিআইয়ের জামিন মঞ্জুর না করার আবেদন খারিজ করে দেয় বৃহত্তর বেঞ্চ। খারিজ করে দেওয়া হয় প্রভাবশালীর যুক্তিও। আদালত বলে, এই চার জন আগেও প্রভাবশালী ছিলেন। তাহলে তখন তাঁদের গ্রেফতার করা হয়নি কেন? কেন চার্জশিট দেওয়ার পরে গ্রেফতার করার প্রয়োজন পড়ল?
সিবিআইইয়ের আইনজীবী তথা কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটার উদ্দেশে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের একটি পর্যবেক্ষণ রয়েছে। সিবিআই নারদ-মামলার তদন্ত শুরু করেছিল ২০১৭ সালে। এতদিন ৪ নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেফতার করেনি কেন? সাধারণত তদন্তের স্বার্থেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়ে থাকে। আগেও তো এঁরা প্রভাবশালীই ছিলেন। তবে এখন চার্জশিট জমা দেওয়ার পর গ্রেফতার করা হল কেন?’’
কী কী শর্ত দিয়েছে আদালত?
চার জনকেই ব্যক্তিগত দু’লক্ষ টাকার বন্ডে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয়েছে।
নারদ মামলা সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে এই চার জন সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনও রকম মন্তব্য করতে পারবেন না।
তদন্তের স্বার্থে যখনই তদন্তকারী অফিসাররা ডাকবেন তখনই এই চার জনকে হাজিরা দিতে হবে।
যদিও এই চার জনের পক্ষে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আদালতের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, তদন্তকারী অফিসারদের কাছে এই চার জনের হাজিরার বিষয়টি যেন ভার্চুয়াল মাধ্যমে করা হয়। কোভিড পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করেই এই আর্জি জানানো হয় বৃহত্তর বেঞ্চের কাছে। তবে এ নিয়ে আদালত কোনও মন্তব্য করেনি।