Home News India নাবালিকার ধর্ষককে,সৌদি থেকে ধরে আনলেন কেরলের এই মহিলা আইপিএস মেরিন

নাবালিকার ধর্ষককে,সৌদি থেকে ধরে আনলেন কেরলের এই মহিলা আইপিএস মেরিন

834
0

দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ রিয়াধের মাটিতে পা দেওয়ার আগেই মনে মনে সংকল্প করে ফেলেছিলেন কোল্লামের এই দুঁদে আইপিএস অফিসার। যেমন করেই হোক অপরাধীকে বাগে আনবেনই তিনি। মাসের পর মাস বছর তেরোর কিশোরীর উপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছে যে, তাকে ছাড়া যাবে না কোনও ভাবেই। তখনও অবশ্য জানতেন না রিয়াধে পৌঁছনোর পরিকল্পনা কতটা বাস্তবায়িত হবে। কিন্তু, অভিযুক্ত গা ঢাকা দিয়ে আছে এখানেই। অতএব, তাকে পাকড়াও করতে হবে যে কোনও উপায়েই।

পরিকল্পনা সফল। নাবালিকা ধর্ষণে অভিযুক্ত সুনীল কুমার ভদ্রনকে (৩৮) গত মঙ্গলবারই সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াধ থেকে ধরে এনেছেন কোল্লামের আইপিএস অফিসার মেরিন জোসেফ। শুরু হয়েছে তদন্ত।

ঘটনা ২০১৭ সালের। কোল্লামের সরকারি মহিলা মন্দিরম হোমের এক নাবালিকার আত্মহত্যার ঘটনাকে ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়। পুলিশ জানায়, নিজের পাড়ারই এক কাকুর যৌন লালসার শিকার হয়েছিল সেই মেয়েটি। শরীরে দগদগে ক্ষত নিয়ে দীর্ঘদিন তার চিকিৎসা চলেছিল হাসপাতালে। সেখান থেকে বেরনোর পরে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল কিশোরী। বাড়িতেও ঠাঁই হয়নি তার। পুলিশই তাকে ভর্তি করে দেয় কোল্লামের ওই সরকারি হোমে। মাস কয়েকের মধ্যে সেখানেই আত্মঘাতী হয় সে।

কিশোরীর পরিবার মুখে কুলুপ আঁটলেও, এগিয়ে আসেন নির্যাতিতার এক আত্মীয়। তিনিই অভিযোগ করেন সুনীল কুমারের নামে। জানা যায়, সুনীলের বাড়ি ওই নাবালিকার বাড়ির কাছেই। মেয়েটির এক কাকুর বন্ধু সুনীল। কর্মসূত্রে থাকে রিয়াধে। ওই বছর সে কোল্লামে নিজের বাড়িতে ফিরেছিল। চকোলেটের লোভ দেখিয়ে নিজের বাড়িতে ডেকে এনে যৌন নির্যাতন চালিয়েছে কিশোরীর উপর। লাগাতার তিন মাস ধরে চলে এই নির্যাতন। হুমকি দিয়ে মেয়েটির মুখ বন্ধ রেখেছিল সে। পরে কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে, সে চম্পট দেয় বাড়ি থেকে। পরে জানা যায়, সুনীল ফিরে গেছে রিয়াধেই।

তদন্ত শুরু হয়। তার মাঝেই আত্মঘাতী হন কিশোরীর সেই আত্মীয়ও। লুকআউট নোটিস জারি হয় সুনীলের নামে। তদন্তের দায়িত্ব তুলে নেন কোল্লামের মহিলা আইপিএস মেরিন জোসেফ। চলতি বছরেরই জুনে কোল্লাম কমিশনারের পদে বহাল হয়েছেন তিনি।

মেরিন জানিয়েছেন, প্রথম যখন কিশোরীর কথা শোনেন তিনি, চোখে জল ধরে রাখতে পারেননি। বজ্র কঠিন মন হলেও, নির্যাতিতার যন্ত্রণা প্রতি মুহূর্তে পীড়া দিত তাঁকে। তখনই অপরাধীকে খুঁজে বার করার প্রতিজ্ঞা নেন। তৈরি করেন বিশেষ তদন্তকারী দল। সিবিআই-এর সাহায্য নিয়ে সমস্ত সাক্ষ্য প্রমাণ সাজিয়ে নেন। তার পর সৌদি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়।

মেরিনের কথায়, “লাগাতার দু’বছর ধরে অপরাধীকে খুঁজছিলাম আমরা। আমার গোটা টিম ও সিবিআই কর্তারাও জড়িত ছিলেন এই তদন্তের কাজে। কেরল পুলিশের আন্তর্জাতিক তদন্তকারী শাখা সৌদি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তার পরই আমরা একটা পরিকল্পনা বানাই। গোটা দল নিয়ে পৌঁছই রিয়াধে। সৌদি পুলিশের সাহায্যে খুঁজে বার করা হয় অভিযুক্ত সুনীল কুমারকে। “

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here