দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ওমিক্রন যখন মাথা তুলছে তখন রাজ্যে রাজ্যে নাইট ক্লাব, পাব, রেস্তোরাঁয় বর্ষবরণের উৎসবে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। বাংলা কোন পথে হাঁটবে সেই প্রশ্নে বিষ্যুদবার মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ভাবে কোনও বিধি আরোপ করছে না।

এদিন সাগরের হেলিপ্যাডে মমতা বলেন, “নতুন বছরকে আমি আটকাব কী করে? কে কী উৎসব করবে সেটা আমি ঠিক করে দিতে পারি?” মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্ন ছিল, অন্যান্য রাজ্য যখন বিধিনিষেধের পথে হাঁটছে তখন পশ্চিমবঙ্গ সরকার কোনও কোনও পরিকল্পনা করছে কি না। জবাবে সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা নেগেটিভ খেলবেন না। অযথা আতঙ্ক ছড়াবেন না। এর আগে কোভিডের দুটি ঢেউয়ের সময়ে সংবাদমাধ্যম যথেষ্ট সহযোগিতা করেছিল, আশা করব এবারও আপনারা তাই করবেন।”

সামনেই বর্ষ বিদায় এবং বর্ষবরণের উৎসব। সেই সময় বহু মানুষ রাস্তায় নামবেন। ফলে করোনা সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘ তবে আমরা বর্ষবরণের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি।’’ এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকেও সচেতন থাকার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘সকলকে কোভিড বিধি মেনে চলার অনুরোধ করছি।’’ গঙ্গাসাগর মেলা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘গঙ্গাসাগরে মানুষের মেলা তাই আটকাতে পারব না।’’

রাজ্যে করোনা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। তবে পরিস্থিতি পর্যালোচনা না করে এখনই সব কিছু বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে নন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার গঙ্গসাগর থেকে কলকাতায় ফেরার আগে করোনার নয়া রূপ ওমিক্রন যে ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘‘করোনার জন্য অর্থনীতি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। আবার নতুন করে সব কিছু বন্ধের পথে গেলে সাধারণ মানুষের উপর চাপ তৈরি হবে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তবেই এ ব্যাপারে সিন্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ কেন পর্যালোচনা প্রয়োজন তা ব্যাখা করে তিনি বলেন, ‘‘কোভিড তো প্রায় ছ’মাস-আট মাস ছিল না। তাই অনেক জায়গায় কোভিড হাসপালগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সার্বিক ভাবে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।’’ লোকাল ট্রেন এবং স্কুল-কলেজ বন্ধ নিয়ে সরকার এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি। এ ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

বর্ষবরণের পার্টিতে যেতে কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করেছে গোয়া প্রশাসন। চেন্নাই পুলিশ শহরের সব অনুষ্ঠান বাতিল করেছে। মুম্বই পুরসভা নিষিদ্ধ করেছে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান, জমায়েত। দিল্লিতে চালু নাইট কার্ফু। কর্ণাটক, বিহারেও সব অনুষ্ঠান বন্ধ।

বর্ষবরণে প্রতিবছরই লাগামছাড়া হুল্লোড়ে মেতে ওঠে কলকাতা। বড় দিনে যে থিকথিকে ভিড়ের ছবি পার্কস্ট্রিটে দেখা গিয়েছিল তা দেখে অনেকেই বলেছেন, গণবিস্ফোরণ হয়েছে কলকাতায়। কিন্তু এর মধ্যেই দেশজুড়ে ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন সাংঘাতিক আকার নিয়েছে। কলকাতাও তার বাইরে না।

ইতিমধ্যেই রয়্যাল ক্যালকাটা গলফ ক্লাব, টলি ক্লাবের মতো বেশ কিছু অভিজাত প্রতিষ্ঠান বর্ষবরণের অনুষ্ঠান বাতিল করেছে। তবে মমতা এদিন ইঙ্গিত দিয়ে দিয়েছেন, নবান্ন এ ব্যাপারে কোনও বিধি চাপিয়ে দেবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here