রাতভর বৃষ্টিতে ভিজেছে রাজ্যের একাংশ। ভোর রাত থেকে বৃষ্টির বেগ আরও বেড়েছে, সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। আঝ, বুধবার দুপুরেই আছড়ে পড়তে চলেছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’। পারাদ্বীপ এবং সাগরের মাঝখানে ধামড়ার উত্তরে এবং বালাসোরের দক্ষিণে স্থলভাগে ল্যান্ডফল হওয়ার কথা।পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘণ্টায় ১৩০-১৪০ কিলোমিটার বেগে বইবে ঝড়। হাওয়ার বেগ কখনও কখনও ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটারেও পৌঁছে যেতে পারে।

আইএমডি-র শেষ আপডেট বলছে, ধামড়া থেকে আর মাত্র ৪৫ কিমি দূরে রয়েছে ইয়াস। ফলে দুপুর নয়, সকাল ১০-১১টা নাগাদ আছড়ে পড়তে পারে ইয়াস। দিঘা থেকে ৮৫ কিমি দূরে রয়েছে এই সাইক্লোন। আবদুল কালাম দ্বীপের অদূরে ওড়িশার চাঁদবালি ও ধামারা বন্দরের মাঝখানে আছড়ে পড়বে ইয়াস। ল্যান্ডফলের সময় ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৫০-১৬০ কিলোমিটার, বেড়ে হতে পারে ১৮৫ কিলোমিটার (গাস্টিং)।

অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের দাপট বেশি দেখা যাবে ওড়িশার চার জেলায়—কেন্দ্রপাড়া, ভদ্রক, জগৎসিংপুর ও বালাসোর। এই চার জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নিচু এলাকাগুলি থেকে মানুষজনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ওড়িশার উপকূলবর্তী জেলাগুলি থেকে এখনও অবধি ৮১ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাছাড়া ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ, জয়পুর, কটকেও ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ওড়িশায় প্রবল ঝড়বৃষ্টি চলছে একটানা।

স্থলভাগের আরও কাছাকাছি চলে এল অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার বুলেটিন অনুসারে, ওড়িশার ধামরা থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার পূর্বে রয়েছে ইয়াসের কেন্দ্রস্থল। পারাদ্বীপ থেকে ৯০ কিমি পূর্ব এবং উত্তর-পূর্বে রয়েছে ইয়াস। পশ্চিমবঙ্গের দিঘা থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে ইয়াস। বুধবার বেলার দিকে ওড়িশার উপকূলে ইয়াস আছড়ে পড়বে মনে করছে আবহাওয়া দফতর। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশার উপকূলবর্তী এলাকায় লাল সতর্কতা জারি হয়েছে।

ভোর সাড়ে ৫টার বুলেটিন জানাচ্ছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে আসছে। মনে করা হচ্ছে, ওড়িশার ধামারার আশপাশেই তা আছড়ে পড়বে। বঙ্গোপসাগরের ২০ ডিগ্রি ৭ মিনিট উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৭ ডিগ্রি ৪৫ মিনিট পূর্ব দ্রাঘিমায় তা অবস্থান করছে। ওড়িশার ভদ্রক জেলার ধামরা এবং বালেশ্বরের মধ্যবর্তী উপকূলভাগের দিকেই এগিয়ে আসছে। বুধবার সকালেই সেখানে হানা দিতে পারে ‘অতি শক্তিশালী’ ইয়াস। যার জেরে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ওড়িশার উপকূলবর্তী ওই এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা। অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাও বাড়াচ্ছে৷

যে গতি নিয়ে ইয়াস স্থলভাগের দিকে এগিয়ে আসছিল, শেষ ৬ ঘণ্টায় তা একটু বেড়েছে। শেষ ৬ ঘণ্টায় ঘণ্টা প্রতি ১৫ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে ইয়াস। স্থলভাগে আছড়ে পড়ার আগে বুধবার ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ১৩০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার। তবে এর সর্বোচ্চ (গাস্টিং) ১৫৫ কিলোমিটার হতে পারে।

বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে ওড়িশার বালেশ্বর, ভদ্রক, কেন্দ্রাপড়া, জগৎসিংহপুরের মতো উপকূলবর্তী বিভিন্ন জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। অতি ভারী থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা পশ্চিবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও। দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি এবং উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকাতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here