দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভোর রাতে নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বালাকোটে জইশ ই মহম্মদের জঙ্গি ঘাঁটি উড়িয়ে দিল ভারতীয় বায়ু সেনা, সে দিন দুপুরেই রাজস্থানের চুরুতে পূর্ব নির্ধারিত ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজনৈতিক সভা। রাজস্থানের যে চুরু, ঝুনঝুনু, শিকারের মাটিকে বলা হয় ‘বীরের মাটি রুক্ষ, শুষ্ক এ প্রান্তরের বলতে গেলে প্রতি ঘর থেকেই ফি বছর ছেলেপুলে দলে দলে যোগ দেন সেনবাহিনীতে। সীমান্ত থেকে আকছার শহিদের দেহ আসে চুরু, ঝুনঝুনর গ্রামে।
মঙ্গলবার দুপুরে সেই চুরুর মাটিতে দাঁড়িয়েই, মাথা বাঁধনি পাগড়ি পরে, ষোল আনা আবেগ গলায় ঢেলে মোদী বললেন, সৌগন্ধ মেরে মিট্টি, ইয়ে দেশ নেহি মিটনে দুঙ্গা৷ তাঁর হাত মুঠো করা, চোয়াল শক্ত। না বলা কথায়, সেখান থেকে গোটা দেশকে যেন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন, দেশ কি তাঁর মতোই কোনও মজবুত নেতা চায়? না কি ফের কোনও নরম নেতা৷
লোকসভা ভোটের আগে এ দিন চুরুতে বিজেপি-র রাজনৈতিক সভা ছিল। স্বাভাবিক ভাবে রাজনীতির মঞ্চে দাঁড়িয়ে জাতীয়তাবাদের হাওয়া সবটাই বিজেপি-র অনুকূলে টানতে চেষ্টা করেন প্রধানমন্ত্রী। নিজেকে ফের প্রধান সেবক আখ্যা দিয়ে বলেন, দেশ একেবারে নিরাপদ আছে, চিন্তার কিছু নেই। দেশের মাথা নিচু হতে দেব না।” তাঁর কথায়, দেশ জাগছে, প্রত্যেক ভারতবাসীর জয় হবে। আমাদের কাছে নিজের থেকে বড় দল, দলের চেয়ে বড় দেশ। আজকের এই বিশেষ দিনে সেই দেশ জাগছে।এ কথা বলে মোদী ঘোষণা করেন, যাঁরা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন, তাঁদের সম্মানে রাষ্ট্রীয় যুদ্ধ স্মারক তৈরি করা হবে।
শুধু দেশ বা যুদ্ধ নয়, কৃষক ও সাধারণ মানুষের কথাও ভাষণে বলেন মোদী। এ দিন কৃষকদের প্রসঙ্গে টেনে মোদী বললেন, কৃষক সম্মান নিধি প্রকল্প চালু হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। এতে কৃষকদের ব্যাঙ্ক আকাউন্টে সরাসরি টাকা দিচ্ছে সরকার। কিন্তু রাজস্থানের কংগ্রেস সরকারের জন্যই রাজস্থানের কৃষকেরা সেই টাকা পাচ্ছেন না। কারণ রাজস্থানের কৃষকদের তালিকাই কংগ্রেস দেয়নি কেন্দ্রকে। আগামী দশ বছরে সাড়ে সাত লক্ষ কোটি টাকা কৃষকদের অ্যাকাউন্টে ঢুকবে বলে দাবি করেন মোদী।
মোদী ভাষণে আরও দাবি করেন, দেশের ১৩ লাখ মানুষকে বিনা পয়সায় চিকিৎসা পরিষেবা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু সে পরিষেবা রাজস্থানের এক জনও পায়নি। এ জন্য রাজস্থানের কংগ্রেস সরকারকেই দায়ী করেন তিনি। গত চার বছরে কেন্দ্রীয় সরকার দেড় কোটি গরিব লোকের বাড়িও বানিয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি এ দিন বলেন, এক পদ, এক পেনশন নীতি আমিই প্রথম এনেছি। জাতীয় সড়ক, রেল পরিষেবায় গত চার বছরে দেশ কতটা উন্নতি করেছে, তার খতিয়ানও দেন তিনি। বাদ ছিল না বিদ্যুৎ পরিষেবা ও পানীয় জলের প্রসঙ্গও। সেই সঙ্গে উল্লেখ করেন, রান্নার গ্যাসের উজ্জ্বলা যোজনার কথা। জানান, এতে রান্নাঘরের মা-বোনেরা সুবিধা পাবেন।
ভাষণ শেষে দেশমাতৃকার জয় ঘোষণা করেন মোদী। আরও এক বার মনে করিয়ে দেন, সবার ওপরে দেশ সত্য। তার উপর কোনও আঘাত মেনে নেওয়া হবে না।