দীপাবলির দীপে, চিনা আলোর থাবাঃ দেশের সময়ঃ

0
801

নীলাদ্রি ভৌমিক: বারাসত: তিমির বিনাশী আলোর উৎসব ‘আগামী ১৯কার্তিক অমাবস্যার রাতে। যেখানে মা-কালীর আরাধনায় অন্যতম প্রধান উপাচার হল চিরায়ত ঐতিহ্যের মাটির প্রদীপ। আবহমান কাল ধরে বাংলার ঘরে ঘরে সংস্কার পুজোর আগের দিন চৌদ্দ শাক খাওয়া এবং সূর্য ডুবতেই বাড়ির চারপাশে চৌদ্দ প্রদীপ দিয়ে আলোকিত করা। যা আরও বড় আকার ন্যায় পুজোর দিন বাড়ির মণ্ডপ থেকে সমস্ত কালীমন্দির হয়ে বারোয়ারি পুজো প্রঙ্গেণে ৷ ফলে, দত্তপুকুর, দেগঙ্গা, বনগাঁ, বসিরহাট ও বারাকপুরের কুমোরপাড়ায় প্রতিমার পাশাপাশি মাটির প্রদীপ বানানোর ধুম পড়ে যেত। যার মধ্যে সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার ছিল উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর অঞ্চল। এখানকার বহু পরিবারের আয়ের সবচেয়ে বড় উপাদান। কিন্তু, এবার সেই মাটির প্রদীপ নির্মাতা পাল পরিবার গুলি পুজোর প্রাক্ মূহুর্তে চরম উৎকণ্ঠা ও হতাশায় আক্রান্ত। কারণ, মাটির প্রদীপের বাজারে গুটিগুটি পায়ে আপন পসরা নিয়ে হাজির চিনা আলো । প্রদীপের বিকল্প সাধ্যের মধ্যে বাহারি আলোতে ছেয়ে গেছে কালীপুজোর আলোর বাজার। নিম্ন মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত সব ঘরে ,মন্দিরে এবং বারোয়ারি পুজোর অনুষঙ্গে এই চিনা আলো আজ সন্তর্পণে থাবা বসিয়েছে। সেইসঙ্গে মুখ থুবড়ে পড়েছে, বাঙালির সনাতনী ঐতিহ্য এবং মাটির প্রদীপ নির্মাণের মৃৎশিল্পীরা। তাঁদের রোজগার এক ধাক্কায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। অতীতে যে হারে পাইকারি ও খুচরো প্রদীপ বিক্রি হত, এবার তার সিকিভাগও এখনও পর্যন্ত হয়নি ৷ পুজো উদ্যোক্তরাও প্রাচীন প্রথা থেকে সরে আধুনিকতার সঙ্গে নিজেদের অজান্তেই যুক্ত হয়ে পড়েছেন। আর, এই আলো জ্বালানোর কারিগররা হতাশায় এই ব্যবসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে মনকে প্রস্তত করছেন। কবির ভাষায় – আমি যেন সেই বাতিওয়ালা, যে অন্ধকার রাজপথে, পথে বাতি জ্বালিয়ে ফেরে, অথচ নিজের ঘরেই দুঃসহ অন্ধকার।

Previous articleমোহনবাগানের ইতিহাসে এই প্রথম একসঙ্গে ৫জনকে সাম্মানিক আজীবন সদস্যপদ দেওয়া হল।
Next articleঅসমে নাগরিক পঞ্জিতে নাম নথিভুক্ত করার শেষ দিন জানিয়ে দিল,শীর্ষ আদালতঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here