দেশের সময়: হে কফিনবন্দি ভারতীয় সেনা,তোমরা ঘুমিয়ে পড়,দেশ পাহাড়ার গুরু দায়িত্ব থেকে এখন তোমরা মুক্ত,এখন তোমাদের অখন্ড অবসর,এখন তোমাদের সীমাহিন বিশ্রাম।কফিনবন্দি অবস্থায় তোমাদের যে দেহগুলি বাড়িতে ফিরে এসেছে,আমরা জানি তাতে কার হাত কার শরীরের সঙ্গে জুড়ে গেছে তার কোন নিশ্চয়তা নেই তবে তা নিয়ে আমাদের তো বটেই জাওয়ানদের পরিবারের মানুষ জনদেরও কোন অপত্তি নেই কারণ যাদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে আরডিএক্সের ভয়ঙ্কর তীব্রতায় তাঁরা প্রত্যেকেই এই দেশের সন্তান,তাই বিহার বা উত্তরপ্রদেশের কোন জওয়ানের দেহের অংশের সঙ্গে যদি বাংলার সেনা জাওয়ানের দেহের অংশবিশেষ একাকার হয়ে গিয়ে থাকে তাতে কারোর কোন আপত্তি নেই,আমরা সেই দেহকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করতে কোন কার্পণ্য করবো না।হে দেশের সৈনিক কত রাত,কত দিন আপনারা আমাদের পাহাড়া দিয়েছেন,নিজেদের সুখ স্বাচ্ছন্দকে হেলায় তুচ্ছ করে দুর্গম পথে প্রান্তরে ছুটে বেড়িযেছেন তার কোন হিসেব আমরা রাখিনি{আপনাদের নিথর দেহগুলির সামনে দাঁড়িযে তাই আমরা আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই আপনাদের পরিবারের পাশে আমরা থাকবো,সরকারকে বাধ্য করবো অপনাদের পরিবারকে উপযুক্ত সাহচার্য দিতে।না যে সৈনিকদের প্রাণ গেল তাঁদের ঋণ শোধ করা আমাদের অসাধ্য,সে ঋণ শোধ করবো বলার স্পর্ধাও আমাদের নেই,আমরা শুধু এই ভয়াবহ শোকের আবহে আমাদের দায় ও দায়িত্বকে স্মরণ করতে চাইছি।যে জঙ্গি ও সন্ত্রাস এমন ভয়াবহ মৃত্যুর চিত্র নাট্য লেখে আমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে প্রতিনিয়ত আমরা তাকে প্রতিহত করার চেষ্টা করবো,তার বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখতে সরকার ও সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির কাছে আহ্বান জানাবো,জানাতেই থাকবো।না কোন রাজনৈতিক দলকেই এই মর্মান্তি শোকের রাশ নিজের দিকে টেনে ভোটের ফায়দা তুলতে আমরা দেবো না।এই মৃত্যু এই হাহাকার নিয়ে কোন রাজনীতি করা চলবে না,এই দাবি যেমন আমাদের থাকবে তেমনি আমরা মনে করি দেশের নিরাত্তার দায়িত্বে থাকা সেনা জাওয়ানদের নিরাপত্তা দিতে আর কোঠর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।দেশের শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই চলুক,কিন্তু একই সঙ্গে কোন খামতি ও অসচেতনতা এমন করে মূল্যবান প্রাণগুলি কেড়ে নিল তাও খুঁজে বার করতে হবে।জাওয়ানদের এই বলিদান যদি কোন গাফিলতির কারণে হয়ে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধেও সোচ্চার হওয়ার দরকার আছে।মৃত্যু ব্যবসায়ীদের হাতে আমরা আমাদের দেশের নিরাপত্তারক্ষীদের জীবন ছেড়ে দিতে পারি না।বাইরের শত্রুর বিরুদ্ধে আমরা লড়বো তবে ঘরের মধ্যে কোন শত্রু ঢুকে পড়েছে কিনা তাও দেখতে হবে।দেশ বন্দনার জামা গায়ে দেশের শত্রু ঘুরে বেড়াচ্ছে কিনা তাও খুঁজে বার করতে হবে।এ বিষয়ে সতর্ক থাকাটাও আমাদের সৈনিকদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধাতারই নামান্তর।এখন আমাদের তাই সতর্ক থাকার সময়,আবেগকে যুক্তি দিয়ে সংযত করার সময়,চারপাশকে পর্যবেক্ষণ করার সময়।আমরা আমাদের কফিনবন্দি সৈনিকদের শ্রদ্ধা জানিয়ে বলছি তোমরা ঘুমিয়ে থাকো আমরা জেগে আছি,এই জেগে থাকা মানে চেতনাকে জাগিয়ে রাখা,বোধকে জাগিয়ে রাখা।বোধ ও চেতনা জেগে না থাকলে দেশ ও দেশপ্রেম কোনটাই জেগে থাকে না।