দেশের সময় ওয়েবডেস্ক:বুধবার দুপুরে ঠাকুর নগরে সভা করল তৃণমূল। এদিনের সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কয়েকদিন আগে সেখানে করে যাওয়া নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতাকে তীব্র আক্রমণ করলেন উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। মঞ্চ থেকে তিনি বলেন “এটা কোনও পাল্টা সভা নয়। আমরা পাল্টা সভায় বিশ্বাস করিনা। শুধু নিজেদের ক্ষমতাটা জাহির করে গেলাম।”গত সপ্তাহেই ঠাকুর নগরে এসেছিলেন মোদী। দেখা করেছিলেন বড়মা বীণাপাণিদেবীর সঙ্গে। এ দিন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “আমাদের দলে আগে ছিল, এখন বিজেপিতে গিয়েছে। কী নাম জানেন? “গদ্দার রায়”। ওই গদ্দার রায় মতুয়া ভোট নেওয়ার জন্য মোদীকে বড়মার ঘরে ঢুকিয়েছিলেন।” এরপরই খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হবে না। বনগাঁর উপনির্বাচনে আপনারা মমতা ঠাকুরকে জিতিয়েছিলেন দু’লাখ ১১ হাজার ভোটে। এ বার মার্জিনটা আরও এক লাখ বাড়িয়ে দিতে হবে। তিন লাখ ১১ হাজার ভোটে জেতাতে হবে।

”ফিরহাদ হাকিম থেকে মদন মিত্র, সুজিত বসু থেকে ব্রাত্য বসু,বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ, বনগাঁ পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য সহ তৃণমূলের একাধিক শীর্ষ নেতা এ দিন উপস্থিত ছিলেন ঠাকুর নগরের সভায়। এ দিন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক নিজের বক্তৃতা শেষে স্লোগান দিতে গিয়ে নজিরবিহীন ভাবে সেখানে বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ।

হরিচাঁদ ঠাকুর জিন্দাবাদ। গুরুচাঁদ ঠাকুর জিন্দাবাদ। বড় মা বীণাপাণিদেবী যুগ যুগ জিও।”এ দিন সভায় বক্তৃতা দেন রাজ্যের পুর ও নগোরন্নয়নমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও। তিনি বলেন, “যত ভোট এগিয়ে আসছে, ততই নরেন্দ্র মোদী থরথর করে কাঁপতে শুরু করেছেন।”মোদীর সভায় যে জনপ্লাবন দেখা গিয়েছিল, এ দিন তৃণমূলের সভাস্থল ছিল ঠাকুরনগর হাইস্কুলের পিছনের মাঠে । ভিড় নিয়ে তৃণমূলকে খোঁচা দিয়েছে বিজেপি-ও। যদিও তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, “ওরা লোক এনেছিল সাত-আটটা জেলা থেকে। আর আমরা শুধু ঠাকুর নগরের লোক নিয়ে এই মিটিং করেছি।”প্রসঙ্গত, মতুয়া সমাজ ২০১১-র পর থেকে এত দিন ছিল তৃণমূলেরই দুর্ভেদ্য দুর্গ। ঠাকুরবাড়ি থেকে মন্ত্রী এবং সাংসদও করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এখন কিছুটা পরিস্থিতি বদলেছে। মতুয়া ভোটে থাবা বসাতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। এবং এ ক্ষেত্রে বিজেপি-র ব্রহ্মাস্ত্র মুকুল রায়। ঠাকুর নগরে সভার মাঠ নিয়ে তৈরি হওয়া জট ছাড়াতে মুকুলই ছুটে গিয়েছিলেন সেখানে। মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের ছেলে শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে গোপন বৈঠক করে সভা করিয়েই ছেড়েছেন। জমি জট ছাড়িয়ে, তৃণমূলের হুঁশিয়ারিকে ডজ করে মুকুল যে ভাবে গোল করেছিলেন ঠাকুর নগরের ময়দানে, তাতে অনেকেই বলেছিলেন মুকুল যেন মারাদোনা।তাঁকে ‘গদ্দার রায়’ বলে জ্যোতিপ্রিয়বাবুর খোঁচা প্রসঙ্গে মুকুলবাবুর বক্তব্য, “কে গদ্দার, কে গদ্দার নয় তা জনগণ বিচার করবে। আমি তো বলেইছি তৃণমূল করে আমি পাপ করেছি। এখন প্রায়শ্চিত্ত করছি। আমি জানি মতুয়া সমাজ দিদি আর তাঁর ভাইদের কথায় আর ভুলছে না।”সে দিন মোদীর সভা। তারপর সপ্তাহ কাটার আগেই এ দিন তৃণমূলের সভা। লোকসভা ভোটের আগে মতুয়া সমাজের মনের দখন নিতে মরিয়া দুই শিবিরই৷ এখন দেখার সময়ের সাথে মাতুয়ারা কোন শিবিরকে এগিয়ে রাখে৷

ঠাকুরনগরে ছবিগুলি তুলেছেন-দেবানন্দ পাইন/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here