দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ প্রতিবছরই নিজের বাড়ির কালীপুজো বেশ ধুমধাম করেই করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের নেতা, কর্মীরা আমন্ত্রিত থাকেন। পুজো দেখা, ভোগ খাওয়া, গল্পগুজবে জমজমাট হয়ে থাকে মমতার বাড়ির চত্বর। মমতা নিজে তদারক করেন প্রত্যেকের ভোগ পরিবেশনে। নিজেও হাতায় করে তুলে দেন প্রসাদ। রান্নাঘরেও তাঁর থাকে সমান নজর। নিজেও খুন্তি হাতে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী।

কিন্তু এবার কোভিড আবহে যেমন বিজয়া সম্মীলনীও করেননি মমতা, তেমনই পুজোতেও মেনেছেন কোভিড বিধি তিনি।  এবারও নিজে দাঁড়িয়ে থেকে পুজোর আয়োজনের তদারক করেছেন মমতা। যাতে পুজোর উপাচারে কোনও ত্রুটি না থাকে। তবে কোভিড বিধি মেনে, পুরোহিত থেকে মুখ্যমন্ত্রী নিজে, সবার মুখেই ছিল মাস্ক।

পুজোর স্থানেও পালন করা হয়েছে কোভিড সুরক্ষা বিধি। প্রত্যেকে পরস্পরের থেকে সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনেছেন। কোভিড আবহে পুজোর আড়ম্বরও এবার সীমিত করেছেন মমতা। রাজ্যবাসীকে কালীপুজো এবং দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে লিখেছেন, দূরত্ব বিধি মেনে, মাস্ক পরে সবাই যেন আনন্দ করেন উৎসবে।

তাঁকে একটু দেখবে বলে বছরভর বাড়ির সামনে ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু অবাধ সুযোগটা মেলে কালীপুজোয় । যে কোনও জায়গা থেকে যে কেউ তাঁর বাড়িতে আসতে পারেন। যতক্ষণ খুশি থেকে বাড়ির পুজো দেখে ফিরতে পারেন। কিন্তু এবার কোভিডের জেরে পরিস্থিতি ভিন্ন। যার গুরুত্ব অনুযায়ী সমস্ত বিধি মেনে নিজের বাড়ির পুজো সারলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এবার যাঁরা তাঁর বাড়ি গিয়েছেন, তাঁদের কাছে একেবারে অচেনা ছিল শনিবার সন্ধের দৃশ্য। অন্যবার নিরাপত্তা বলয় পেরিয়ে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি ঢুকলেই দেখা যায় একেবারে ‘ভিভিআইপি মুভমেন্ট’। কে থাকেন না সেখানে। রাজ্যপাল এসেছিলেন গত বছর। থাকেন রাজ্যের সর্বোচ্চ স্তরের আমলারা। একেবারে সপিরবারে। থাকেন মন্ত্রী, বিধায়করা। যেখানে পুজোর আয়োজন হয় তার ঠিক উলটোদিকের একটা হলঘরে প্রবীণদের বসার ব্যবস্থা থাকে। ফি বছর এই পুজো দেখতে আসেন একটি বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকরা। তাঁদের গান শোনানোর আবদার থাকে। মুখ্যমন্ত্রীর কথামতো তা রাখতেই হয় মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনকে চলে চুটিয়ে আড্ডা।

এবার ছবিটা সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে বলা যায়। সকালেই এদিন রাজ্যবাসীকে কালীপুজো ও দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধির জন্য এদিন বাড়িতে অতিথিদের আসার ক্ষেত্রে ছিল কিছু নিয়ন্ত্রণ। বয়সের কারণে আনা হয়নি বৃদ্ধাশ্রমের কাউকে। অতিথি বলতে শুধু পরিবারের সদস্য আর দলীয় নেতৃত্বের মধ্যে হাতে গোনা দু-একজন। ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারে নতুন অতিথি তাঁর ছেলে। কোলে কোলে ঘুরেছে সেও।

এসবের মধ্যেও সদা সতর্ক। যেখানে সেখানে স্যানিটাইজ না করে বসে পড়তে বারবার রাজ্যবাসীকে বারণ করেন। নিজেও সেই বিধি মেনেছেন। চট করে কেউ কিছুতে হাত দিলে সঙ্গে সঙ্গে স্যানিটাইজার ঢেলেছেন। যে ক’জন এসেছেন তার মধ্যেই চলেছে আতিথেয়তা। রাত বাড়তে সপরিবারে বসেছেন পুজোয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here