দেশের সময়, বনগাঁ: কথিত আছে, আনুমানিক  ৪০০ বছর আগে এক জমিদার বাড়িতে সাত ভাই-এর দল ডাকাতি করতে যায় । সেই জমিদারবাড়ির  সমস্ত কিছু নেওয়ার পর মন্দিরের বাসন সামগ্রীও ডাকাতি করে। ডাকাতির পরে জমিদার বাড়ির মন্দিরের জাগ্রত মা ডাকাতদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তোরা আমার সবই যখন নিয়ে যাচ্ছিস, তখন  আমাকেও নিয়ে চল।’ আদেশ মতো মায়ের মূর্তিকে নিয়ে আসে ওই ডাকাতদল।  ডাকাতদের আস্তানা সেই পুরাতন বনগাঁতে এসে চক্রবর্তীর পরিবারের হাতে পুজোর দায়িত্ব দেয় তারা।ইছামতী নদীর পাড়ে বটগাছের নীচে মায়ের মূর্তি প্রতিষ্ঠা হয়। তারপর থেকে এই মন্দিরের নাম হয় ‘সাতভাই কালীতলা।’ 

উত্তর২৪পরগনার বনগাঁ শহরের এই সাতভাই কালীতলা পুরাতন বনগাঁ হিসেবে পরিচিত।এই সাতভাই কালীতলায় প্রতি বছর পৌষ মাস জুড়ে শুরু হয় মেলা। প্রতি শনি ও মঙ্গলবার এই মেলাতে বনগাঁর পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকে কয়েক হাজার পুণ্যার্থী সমাগম ঘটে। কালীতলার স্থানীয় বাসিন্দা গৌর বিশ্বাস জানান, ‘‘প্রতিবছর মন্দিরের মাঠে খিচুড়ি রান্না হয়, অনেক ভিড় হয়। কিন্তু এবার সেসব কিছুই নেই। স্থানীয় আর এক বাসিন্দা বিদ্যুৎ ঘোষ বলেন , ‘‘এবারে করোনা নিয়ে মানুষ সতর্ক। সেই কারণে মন্দিরে পুজো দিয়ে কোনও রকমে চলে যাচ্ছেন পুণ্যার্থীরা।’’

বনগাঁর সাতভাই কালীতলা মেলাতেও করোনা এ বার থাবা বসালো। পৌষ মাস জুড়ে এই কালী মন্দির চত্বরে মেলা বসে। দূর দূরান্তের মানুষ এসে এই মন্দিরে পুজো দিয়ে মেলাতে অংশ গ্রহণ করেন । কিন্তু এ বারে পৌষের শুরুতেই এই মেলায় লোকের সমাগম তেমন দেখা যাচ্ছে না। করোনা সতর্কতার জন্যই লোক কম বলে মনে করছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য মন্দির কর্তৃপক্ষও একসঙ্গে ১০ জনের বেশি প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না। এর পাশাপাশি সারাক্ষণ মাইকে ঘোষণা করা হচ্ছে করোনা স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে। মাক্স ছাড়া কাউকে মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here