দেশের সময়: এখনও দিলীপ ঘোষের মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক থিতু হয়নি। এর মধ্যে দোসর হলেন বিজেপি নেতা তথা হাবরার প্রার্থী রাহুল সিনহা। শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে তিনি অনুতপ্ত তো ননই, উলটে জানিয়ে দিলেন, “ওখানে চার জনের বদলে আট জনকে গুলি করে মারা উচিত ছিল। কেন চার জনকে মারল, কেন আটজনকে মারেনি এই জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীকে শো-কজ করা উচিত।”

প্রাক্তন বিজেপি রাজ্য সভাপতি আরও বলেন, “বিজেপিকে ভোট দিচ্ছে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের ১৮ বছরের ছেলেরা বুথের লাইনে গুলি চালাচ্ছে। মমতা এদের নেত্রী হয়ে বসে আছেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী যোগ্য জবাব দিয়েছে।”রাহুলের এমন মন্তব্যে আলোড়ন শুরু হয়েছে।


রবিবার বরানগরের সভা থেকে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। হুঁশিয়ারির সঙ্গে দিলীপবাবু বলেন, “শীতলকুচি কী দেখেছেন! এরপর বেশি বাড়াবাড়ি করলে জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে।”


শীতলকুচির ঘটনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাহুল সিনহা বলেন, ঐদিন ভোটের লাইনে অল্প বয়সী বিজেপি কর্মী হিসেবে পরিচিত এক ভোটার ভোট দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। সিআরপিএফ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বোমা ছোড়ে ওই দুষ্কৃতীরা। এর পরে বাধ্য হয়ে দুষ্কৃতীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় সিআরপিএফ।

এই অভিযোগের পাশাপাশি রাহুল সিনহার সংযোজন, চারজনের বদলে আট জনকে গুলি করে মানলেও কোন অন্যায় করতো না সিআরপিএফ। তারা কেন আট জনকে মারে নি সেই কৈফিয়ত নির্বাচন কমিশনকে দিতে হবে সিআরপিএফকে। তাঁর আরও অভিযোগ, তৃণমূল নেত্রীর উস্কানিতে ভোট লুট করতে গিয়েছিল তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা।

সিআরপিএফ সঠিক সময়ে তাদেরকে গুলি না করলে উল্টে সিআরপিএফের চার পাঁচ জন জাওয়ানকে ওরা মেরে ফেলতো। তাঁর অভিযোগ, এক সময় বামেরা বুথ জ্যাম, ছাপ্পা ভোট করে ভোটে জয়লাভ করতো। সেই পথ ধরে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল জিতেছে। এবারেও সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এবারে তা আর সম্ভব হবে না।


এদিকে তার এই মন্তব্যের জেরে রাজনৈতিক মহলে সমালোচনা শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে হাবরার তৃণমূল প্রার্থী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, বিজেপি নামক দলটিকে ব্যান করে দেওয়া উচিত নির্বাচন কমিশনের। গোটা দলটাই অসভ্য, বর্বরের দল। নুসরত তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানান, যিনি (রাহুল সিনহা) এমন মন্তব্য করতে পারেন, তাঁর জনপ্রতিনিধি হওয়ার কোনো যোগ্যতা নেই।

রাহুলের বক্তব্য নিয়ে মমতা এদিন রানাঘাটের সভা থেকে বলেন, ‘গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়ে বলছে ৪ জনের জায়গায় ৮ জনকে মারা উচিত ছিল? এরা দেশের নেতা হবে?’’ নাম না করে দিলীপ ঘোষ রাহুল সিনহাদের নির্বাচনী প্রচারে ব্যান করার দাবি জানিয়েছেন মমতা। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফেও এই মর্মে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here