দেশের সময়ঃ-আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক যে ভাবে থানায় ঢুকে এক যুবককে বেদম প্রহার করলেন ও অশ্রাব্য গালিগালাজ করলেন তাতে মনে হওয়া স্বাভাবিক এঁরা আইন-শৃঙ্খলার রক্ষার দায়িত্ব প্রাপ্ত হওয়ার আদৌ যোগ্য কিনা!আলিপুরদুয়ারের যে যুবককে জেলাশাসক থানায় ঢুকে মারধোর করেছেন,তার বিরুদ্ধে অভিযোগ,তিনি জেলাশাসকের স্ত্রীর সম্পর্কে ফেসবুকে অশ্লীল কথা পোস্ট করেছিলেন।কোন সন্দেহ নেই ঐ যুবক এমনটা করে অন্যায় করেছেন,একজন মহিলাকে সোশ্যাল মিডিয়াতে অসম্মান করলে শাস্তি হওয়া উচিত,এ নিয়ে কারোর কোন দ্বিমত থাকার কথা নয়,আমাদেরও নেই,আমরাও মনে করি ঐ যুবকের আইন অনুসারে শাস্তিই কাম্য।কিন্তু প্রশ্ন হল সেই আইনের শেষ কথা কোন ভাবেই একজন জেলাশাসক হতে পারেন না।ঐ যুবক যদি ফেসবুকে অশ্লীল মন্তব্য করে আইন ভেঙে থাকেন তবে জেলাশাসক নির্মল নিখিলও আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে অন্যায় করেছেন।সোশ্যাল মিডিয়াতে ভইরাল হয়ে যাওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে,জেলাশাসক ও তাঁর স্ত্রী অভিযুক্ত ঐ যুবককে নির্বিচার চড়,লাথি,ঘুষি মেরে চলেছেন।থানার মধ্যে পুলিশ একেবারে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।যুবককে মারতে মারতে জেলাশাসক বলে চলেছেন,তিনি যদি আধ ঘন্টার মধ্যে ঐ যুবককে থানায় ধরে আনতে পারেন তবে তিনি নাকি ঐ যুবকে তার বাড়িতে গিয়ে খুনও করে ফেলতে পারেন।জেলাশাসক নিখিল নির্মল আর বলছিলেন,তাঁর জেলায় তার বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলতে পারবে না।জেলাসাসকের এই মন্তব্যের আমরা তীব্র বিরোধিতা করছি,কোন স্বাধীন গণতান্ত্রীক দেশে কেউ এভাবে বলতে পারে না,এই হুঙ্কার একেবারেই আইন-বিরুদ্ধ।আমাদের দাবি একজন আমলা হয়ে,প্রশাসনিক কর্তা হয়ে যিনি এরকম আচরণ করেন তাকে অবিলম্বে সরিয়ে দিয়ে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
আমাদের অভিজ্ঞতা বলে এদেশের আমলা ও পুলিশ কর্তারা মূলত ক্ষমতাবানদের দাসত্ব করতেই অভ্যস্ত,তারা সাধারণ মানুষ ও দেশের সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ হবার সংস্কৃতিতে রপ্ত হতেই শেখেন না।বিবেক-মনুষ্যত্ব মানবিকতাও কোন কিছুকেই এরা গ্রাহ্য করেন না।ক্ষমতাবান রাজনৈতিক নেতা নেত্রী আর অসাধু ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের সঙ্গেই এদের সখ্য তৈরি হয়,এদের স্বার্থ রক্ষাতেই এঁরা ব্যস্ত থাকেন,তাই সাধারণ নাগরিককে এঁরা মানুষ বলেই গন্য করেন না।সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও তাদের সমস্যা সমাধানও যে এঁদের কাজ তা এঁরা মনেই রাখেন না।এরা মনে রাখেন না যে আমাদের মত সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের পয়সাতেই এদের মোটা অংকের মাসোয়ারা বাড়িতে ঢোকে।এই সব আমলা ও পুলিশ অফিসাররাও যে কেউ আইনের উর্দ্ধে নন তা বুঝিয়ে দিতেই আলিপুরদুয়ারের ঐ জেলাশাসকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ দরকার।শুধু বদলি নয়,আইনের রক্ষক হয়েও আইন ভাঙার অপরাধে ঐ জেলাশাসকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া উচিত বলেই আমরা মনে করি।আইনের চোখে সবাই সমান এটা যে নিছক কথার কথা নয় সেটা বুঝিয়ে দেওয়ার সময় এসে গেছে।