দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে গত বাহাত্তর ঘন্টা ধরে আগুন জ্বলছে বাংলার বিভিন্ন জেলায়। বিক্ষোভ ও হিংসা এতটাই তীব্র আকার নিয়েছে যে কিছু জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করতে হয়েছে।
তবে সোমবার এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইন বিরোধী মিছিল শুরু করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পষ্টাপষ্টি জানিয়ে দিলেন, আন্দোলন করতে হবে গণতান্ত্রিক ভাবে। শান্তি বজায় রাখতে হবে। কোনওরকম অশান্তি পাকানোর চেষ্টা হলে সরকার ছেড়ে কথা বলবে না। কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এ ব্যাপারে কারও দল-মত বিচার করা হবে না।

https://www.facebook.com/MamataBanerjeeOfficial/videos/2521553071498850/

পূর্ব ঘোষণা মতো এদিন দুপুর ১ টায় বাবাসাহেব আম্বেদকরের মূর্তির পাদদেশ থেকে মিছিল শুরু করে তৃণমূল। তার আগে দলের কর্মী, সমর্থকদের শপথবাক্য পাঠ করান তৃণমূলনেত্রী।

যার মূল বক্তব্য হল,– “আমরা সবাই দেশের নাগরিক। সর্ব ধর্ম সমন্বয় আমাদের আদর্শ। কাউকে বাংলা ছাড়তে দেব না। বাংলায় এনআরসি-ক্যাব হতে দিচ্ছি না দেব না।”

প্রতিবাদের নামে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করলে কড়া ব্যবস্থা, দলকেও রেয়াত নয়, হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর

নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুর থেকে শুরু করে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্ত ভাবে যে তাণ্ডব চলেছে, তা গোটা দেশ দেখেছে। সরকারি-বেসরকারি বাস সহ দু’ডজনেরও বেশি গাড়িয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। উলুবেড়িয়া, বেলডাঙা, কৃষ্ণপুর স্টেশনে ভাঙচুর হয়েছে ও ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাথর ছোঁড়া হয়েছে যাত্রী বোঝাই ট্রেনে। তাতে বার বার বিপন্ন হয়ে পড়েছে বাংলার মানুষেরই জীবন।

এই অবস্থায় সোমবার নাগরিকত্ব আইন বিরোধী মিছিল শুরু করার আগে সবাইকে পই পই করে সতর্ক করতে চাইলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বাইরে থেকে লোক ঢুকিয়ে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা হচ্ছে। সেই প্ররোচনায় যেন কেউ পা না দেয়। আন্দোলন করতে হবে গণতান্ত্রিক ভাবে। তাঁর কথায়, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করলে, পথ অবরোধ করলে মানুষেরই ভোগান্তি বাড়বে। তাই তা থেকে যেন সবাই বিরত থাকেন।

মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে এও বলেন, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করলে কাউকেই ছেড়ে কথা বলা হবে না। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্তরা কেউ যদি তৃণমূলেরও সমর্থক হয়, তা হলে তাদেরও রেয়াত করার প্রশ্ন নেই বলে বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী।

যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য নিয়ে তাঁকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি লোকসভায় কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর আহ্লাদেই তৃণমূল আশ্রিতরা এই তাণ্ডব চালিয়েছে। তা নিয়ে মানুষ ক্ষেপে গিয়েছে বুঝে এখন বহিরাগত তত্ত্ব খাঁড়া করতে চাইছেন মমতা। তাঁর কথায় “যেখানে যারা এই লুঠতরাজ-অশান্তি করছে, তারা সবাই শাসকদলের লোক। এলাকার লোক কিছু জানে না আর বাইরে থেকে এসে সব করে দিয়ে চলে যাচ্ছে এই তত্ত্ব আমি মানি না।”

অধীরবাবু এদিন পুলিশি নিস্ক্রিয়তার জন্যও মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। তিনি বলেন, “পুলিশকে যদি মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ২৪ ঘণ্টা লাগবে। কিন্তু তিনি তা করছেন না। নিজে না পারলে পুলিশকে বলুন আমাদের কথা শুনতে। সব ঠান্ডা করে দেব।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here