দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ বাংলাদেশ থেকে সড়কপথে আসা কোনও নাগরিকের গায়ে জ্বর থাকলে তাঁকে ঢুকতে দিচ্ছে না ত্রিপুরা। এমনকি সীমান্তে যে হাট বসে, সেই হাটেও আসতে পারছেন না বাংলাদেশের কোনও অসুস্থ ব্যবসায়ী। সীমান্ত থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাঁদের। আবার পেট্রাপোল সীমান্তের চিত্রটা একেবারেই উল্টো৷ নিত্য যাত্রী সহ দু’দেশের বাণিজ্যের সাথে যুক্ত সমস্ত মানুষই যাতায়াত করছে নির্বিঘ্নে৷
যদিও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ব্যাবস্থায় এই সীমান্তেও থার্মাল স্ক্রিনিং চলছে ,তবে বিশেষ ভাবে লক্ষ্যণীয় পেট্রাপোল – বেনাপোল সীমান্তের স্থল বন্দরের কর্মী এবং শ্রমিকেরা অবাধে যাতায়াত চালিয়ে যাচ্ছে মাক্স ছাড়াই৷ বেশির ভাগ শ্রমিক ও ট্রাক চালক এবং খালাসিদেরই থার্মাল স্ক্রিনিং টেস্ট হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে৷
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এন্ড স্ট্রাফ ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন পরি কাঠামো একেবারে নেই বললেই ভাল হয়৷ স্বাস্থ্য কর্মী সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ঠ নয়৷ একদিকে নিত্য যাত্রীর সংখ্যা কয়েক হাজার ,অন্য দিকে দু’দেশের ট্রাক চালক সহ বিভিন্ন সংগঠনের শ্রমিক সংখ্যাটাও প্রায় পাঁচ হাজার । এই অবস্থায় এইটাই এই মুহুর্তে সবচেয়ে করোনা আতঙ্কের মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশা পাশি তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন ভিসা-পাশপোর্ট ছাড়াও কাঁটাতার পেড়িয়ে প্রশাসনের চোখে ধূলো দিয়ে অনায়াসেই বহু অনুপ্রবেশকারীদের যাতায়াত বেড়েছে বলেও যানা যাচ্ছে। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই চিকিৎ সার জন্য কলকাতা সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ছে৷ তাঁদের শরীরে কী ধরনের সংক্রমণ আছে সেটাই এখন কোটি টাকার প্রশ্ন!
বাংলাদেশের ও ত্রিপুরার সীমান্তের দৈর্ঘ্য ৮৫৬ কিলোমিটার। এই গোটা সীমান্তের সব ক’টি চেকপোস্টেই কড়া নজরদারি চলছে করোনাভাইরাসের আতঙ্কে। বিএসএফ এবং শুল্ক দফতরের আধিকারিকরা কড়া হাতে বিষয়টি দেখছেন। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নির্দেশ জারি করা হয়েছে, অন্য কোনও দেশের কোনও নাগরিককে এ দেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না। ভিসাও স্থগিত করা হয়েছে সমস্ত দেশের।
এই অবস্থায় থার্মাল স্ক্রিনিং চলছে ত্রিপুরা-বাংলাদেশ সীমান্ত জুড়েও। কারও শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দেখলেই তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশে। তাঁরা বেশির ভাগই চট্টগ্রামের বাসিন্দা। বাংলাদেশে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক জনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা চলছে তাঁদের।
অন্যদিকে করোনাভাইরাসকে বিশ্বজোড়া মহামারী অর্থাৎ প্যানডেমিক বলে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যে দ্রুততার সঙ্গে সারা বিশ্বে এই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে এবং মৃত্যুমিছিল দীর্ঘ হচ্ছে, তাতে আর হাল্কা ভাবে নেওয়া যাবে না এই অসুখকে। এই ঘোষণার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে আরও আঁটোসাঁটো হয়েছে সতর্কতা। কিন্তু অনেকেই বলতে শুরু করেছে- ফসকাগেড়ো ভারত- বাংলাদেশের পেট্রাপোল -বেনাপোল সীমান্ত।