কড়া নজরপেট্রাপোলসীমান্তে-পার্থ সারথি নন্দী।

দেশের সময়: কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় অনুপ্রবেশের জন্য শ’য়ে শ’য়ে বাংলাদেশীরা অপেক্ষা করছে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের পার্শ্ববর্তী গ্রাম গুলিতে,এমনটাই খবর ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে রয়েছে বলে জানা গেছে।পাশা পাশি সীমান্তের কাঁটাতার বিহীন বহু এলাকা রয়েছে এখনও,আর সেই পথ দিয়েই স্থানীয় দালাল চক্রের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে অনায়াসে এপার বাংলায় ঢুকে পরতে পারে বাংলাদেশীরা মনে করছে পুলিশ প্রশাসনও।

পেট্রাপোল সীমান্ত লাগোয়া পীরোজপুর, কালিয়ানী গ্রাম সহ গাইঘাটার আঙরাইল সহ বাগদা, বয়রা এলাকায় নদী পথে অনুপ্রবেশের ঘটনা নতুন কিছু নয়৷কারন দীর্ঘ দিন ধরেই এই পথে পাচার সহ অনুপ্রবেশের রমরমা চলছে তা পুলিশ প্রশাসনের কাছে নথীবদ্ধ রয়েছে।তবে এখন চিন্তার কারন দ্বিগুণ হয়েছে করোনা সংক্রমণে জন্য৷ বাংলাদেশও করোনার ভয়াল গ্রাসের মুখে এই অবস্থায় ওখান থেকে অনেক মানুষ আতঙ্কে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে আসতে চাইছে৷আর এই জন্যই সব চেয়ে সহজ পথ বলে হিসাবে পেট্রাপোল, আঙরাইল,বসিরহাটের মত সীমান্তকে বেছে নিতে চাইছে।

স্থানীয় এক পাচারকারীর কথায় অনুপ্রবেশকারীর প্রয়োজনে পাঁচ গুণ টাকা বেশি দিতে চাইছে এপার বাংলার আসার জন্য৷তার কথায় সাধারণ সময় মাথা পিছু এক হাজার টাকায় কাজ চলে, এখন পাঁচ হাজার দিতেও রাজি অনুপ্রবেশকারীরা৷ করোনার পর্বের প্রথম দিকে বহু মানুষ এসেছে অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে৷ যদিও দেশের সময় কে এই কথা জানালেও ,পাশা পাশি এটাও বলতে থাকে করোনার ভয়ে এখন অনেকেই পাচারের কাজ করছে না৷ তবে দালাল চক্রের সদস্যরা যাই বলুক না কেন স্থানীয় সূত্র বলছে, রাতের অন্ধকারে অনুপ্রবেশ চলছে রমরমিয়ে৷টাকা উড়ছে সীমান্ত এলাকায়৷ আঙরাইল এলাকার এক স্কুল শিক্ষকের কথায় এই সমস্ত পাচারকারীরা করোনাকেও পাত্তা দেয়না, এঁদের কাছে টাকাটাই সব জীবন বোধ নেই৷

প্রশাসন যদিও আশারবাণী শুনিয়ে রেখেছে লকডাউনের সুযোগে যাতে সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তান বা বাংলাদেশ থেকে ভারতে কেউ ঢুকতে না পারে সে ব্যপারে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সকে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

গত বৃহস্পতিবার বিএসএফ আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে তিনি নির্দেশ দেন, সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা আরও বাড়তে হবে। কোনওভাবেই যেন পাকিস্তান বা বাংলাদেশ থেকে কেউ ঢুকে না পড়তে পারে। যে অংশে কাঁটাতারের বেড়া নেই সেখানে আরও বেশি বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছেন শাহ।

গত শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রুটিন সাংবাদিক বৈঠকে এই খবর জানিয়েছেন দফতরের যুগ্ম সচিব পুণ্য সলীলা শ্রীবাস্তব। তিনি জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওই ভিডিও কনফারেন্সে বিএসএফ আধিকারিকদের আরও বলেছেন, সীমান্ত এলাকায় কৃষক বা গ্রামবাসীরা যাতে সামাজিক দূরত্ব ও লকডাউন মেনে চলেন তা সুনিশ্চিত করতে হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের সাহায্যও নিতে হবে। কিন্তু কোনওভাবেই অসাবধান হওয়া যাবে না।


স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে তথ্য দিয়ে বলা হয়েছে সারা দেশে ৩৭ হাজার ৯৭৮টি ত্রাণ শিবির চলছে। ১৪ লক্ষ ৩০ হাজার শ্রমিক, মজুরকে সেই ক্যাম্পগুলিতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ২৬ হাজার ২২৫টি খাদ্য সরবরাহের শিবির চলছে বলে.জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। প্রতিদিন এক কোটি মানুষ সেখান থেকে দু’বেলা খাবার পাচ্ছেন।


পুণ্য সলীলা শ্রীবাস্তব এদিন জানিয়েছেন, উৎসবের দিনগুলিতে যাতে লকডাউন মানা হয়, তা যাতে কোনওভাবেই শিথিল না করা হয় সে ব্যাপারে ফের রাজ্যগুলিকে অ্যাডভাইজারি পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহণ যাতে নির্বিঘ্নে হয় তাও সুনিশ্চিত করতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে।

পেট্রাপোল সীমান্তের ছবি- পার্থ সারথি নন্দী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here