দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ করোনা মহামারীর কারণে মাসের পর মাস স্কুল বন্ধ থাকায় ক্ষতির মুখে ৬১ কোটি ৬০ লাখ পড়ুয়া, বাড়ছে স্কুলছুটদের সংখ্যাও। এমনই ভয়ঙ্কর তথ্য দিল ইউনিসেফ।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘসময় স্কুল বন্ধ থাকায় ৬১ কোটির বেশি পড়ুয়া চরম ক্ষতির মুখে। বিসেব করে দেখা গেছে, ১০ শতাংশের বেশি লিখতে-পড়তেই ভুলে গেছে। দারিদ্র্য সমাজে এর প্রভাব পড়েছে বেশি। ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ শিশু আর স্কুলমুখো হতেই চাইছে না। পড়াশোনাতেও আগ্রহ হারাচ্ছে বাচ্চারা। চার দেওয়ালে বন্দি ছোট-ছোট মনগুলো তাই খারাপ থাকছে বেশির ভাগ সময়ই।

প্রায়  দু’বছর ধরে একপ্রকার বন্ধই রয়েছে স্কুল-কলেজ। মাঝে কিছুদিনের জন্য খুললেও করোনার প্রকোপ বাড়ায় ফের বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। ভারতে বটেই গোটা বিশ্বেই করোনার কারণে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শিকেয় উঠেছে। অনলাইন ক্লাসে অভ্যস্ত হচ্ছে শিশুরা। শিক্ষাব্যবস্থাও হয়ে উঠছে অ্যাপ নির্ভর। হারিয়ে যাচ্ছে স্কুলের জীবন। বাচ্চাদের মানসিক স্বাস্থ্য কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে তা বলে বোঝানোর নয়, এমনটাই মনে করছেন শিক্ষাবিদরা। ইউনিসেফ জানাচ্ছে, অবিলম্বে সমস্ত বিধি মেনে স্কুল খোলা উচিত।  তা না হলে গোটা শিক্ষাব্যবস্থাই প্রতিবন্ধকতার শিকার হবে।


শিক্ষাবিদদের বক্তব্য, প্রশ্নটা নিছক স্কুল খোলার বা না-খোলার নয়। নানা বিকল্প উদ্যোগে কী ভাবে লেখাপড়াটা যতটা সম্ভব চালিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সে জন্য নানা দিক থেকে পরিকল্পনা করা জরুরি ছিল, সেই সঙ্গেই জরুরি ছিল সমাজের বিভিন্ন স্তরে সেই পরিকল্পনা রূপায়ণের। এখন যে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তা অনেক আগেই আলোচনা ও নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে বাস্তবায়িত করা উচিত ছিল।কিন্তু সে-সবের কিছুই হয়নি। তার ফলে যে ক্ষতি ইতিমধ্যেই ঘটেছে, তার খতিয়ান কষবে ভবিষ্যৎ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্তে পড়ুয়াদের উপকারই হবে। একা একা নয়, একসঙ্গে বেড়ে ওঠে শিশুরা।

ইউনিসেফের শিক্ষা বিষয়ক প্রধান রবার্ট জেনকিন্স বলেছেন, “শিশুদের পড়াশোনায় অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তবে পড়াশোনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার অবসান ঘটাতে হবে এবং শুধু স্কুল পুনরায় খুলে দেওয়াই এক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়। পড়াশোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে শিক্ষার্থীদের সাহায্য করতে হবে শিক্ষকদেরই। পাশাপাশি, বাচ্চাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, পুষ্টি, বিকাশ সবদিকেই লক্ষ্য রাখতে হবে। যে ফাঁক তৈরি হয়েছে দীর্ঘসময়ের তা ভরাট করতে নতুন কর্মসূচী নিয়ে এগোতে হবে। ”

আগামী কয়েক বছর হয়তো কোভিড নিয়েই চলতে হবে আমাদের। দ্রুত কোভিড বিধিকে রপ্ত করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে হবে। আমজনতার অসাবধানতা এবং ভাইরাসের চরিত্র বদলে যাওয়ায় ঢেউ এর পর ঢেউ তো আসতেই পারে, তাই বলে এভাবে শিশুদের শৈশব নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না কিছুতেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here