দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ লোকসভা ভোটের আগে বৃহস্পতিবার দেশের এক কোটি বুথ স্তরের বিজেপি কর্মীকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিশ্বের বৃহত্তম এই ভিডিও কনফারেন্সে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে মোদী বলেন, “এক হয়ে লড়বে ভারত। জিতবেও ঐক্যবদ্ধ ভাবে।”
বুধবার বিরোধী দলগুলি দিল্লিতে বৈঠকের পর অভিযোগ তুলেছিল, পাকিস্তানে করা বায়ুসেনার এয়ার স্ট্রাইক নিয়ে বিজেপি ভোটের রাজনীতি করছে। ২৪ ঘণ্টা কাটার আগেই তার জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ দিন সেই দিল্লি থেকেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন শত্রুরা সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে তখন তা দেশের অগ্রগতির ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে আমরা একসঙ্গে, ঐক্যবদ্ধভাবে সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়াব। যাতে দেশের অগ্রগতি প্রতিহত না হয়।
মেরা বুথ, সবসে মজবুত’ কর্মসূচি থেকে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “মানুষের মধ্যে আবেগের স্রোত বইছে। সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়ানো আমাদের এখন একমাত্র কাজ। কারণ গোটা দুনিয়ার নজর এখন আমাদের উপর।” সেই সঙ্গে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে মোদী বলেন, ওরা দেশের মানুষের মধ্যে বিভাজন ঘটাতে চাইছে। আমরা তা রুখবই।
১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে আত্মঘাতী জঙ্গিহামলায় দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় প্রাণ যায় ৪০ জনের বেশি সিআরপিএফ জওয়ানের। সে দিন থেকেই সরকারের তরফে বলা শুরু হয়েছিল এর বদলা হবেই। পত্রের দিন সকালেই কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটের নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠক ডেকে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর গত মঙ্গলবার ভোরে ভারতীয় বায়ুসেনা প্রথম আঘাত হানে পাকিস্তানে।
৭১-এর পর এই প্রথম পাকিস্তানের অনেকটা ভিতরে ঢুকে গিয়ে বালাকোটে বোমা ফেলে জইশ ক্যাম্প উড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর বুধবার ভারত-পাক উত্তেজনার মাত্রা আরও বাড়ে। পাকিস্তানের একটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করে দেয় ভারতীয় বায়ুসেনা। পাল্টা পাকিস্তানও ভারতের একটি মিগ গুলি করে নামিয়ে নেয়। সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য বায়ুসেনার এক পাইলটকে নিজেদের কব্জায় নিয়ে ফেলে পাকিস্তান। ভারতের এক পাইলট যে নিখোঁজ তা বুধবার দুপুরেই নিশ্চিত করেছিলেন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার। বিকেলে সাউথ ব্লকে ডেকে পাঠানো হয় পাকিস্তানের ডেপুটি হাই কমিশনারকেও। সন্ধ্যায় নিরাপত্তা নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তপ্ত আবহাওয়ার মধ্যে মোদির এই ভিডিও কনফারেন্সের তীব্র সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। তাদের প্রশ্ন, দেশের এই অস্থির পরিস্থিতিতে কীভাবে ভোটের উদ্যোগ নিচ্ছেন। মোদি অবশ্য বিরোধীদের সমালোচনায় কর্ণপাত করেননি।