দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বুধবার ভারতের তরফে বারবার বলা হয়েছিল, পাক সেনার হাতে আটক উইং কম্যান্ডার অভিনন্দনকে ফেরাতেই হবে। চাপ বাড়ছিল পাকিস্তানের উপর। বৃহস্পতিবার সুর নরম করে ইসলামাবাদ জানিয়ে দিল, ভারতীয় পাইলটকে ফেরাতে ভারতের সঙ্গে আলোচনায় তাঁরা রাজি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলতে রাজি পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কিন্তু ভারতের তরফে জানানো হয়েছে, কোনও রকম আলোচনা নয়, ছাড়তেই হবে উইং কম্যান্ডার অভিনন্দনকে।

সূত্রের খবর, পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি জানিয়েছেন, উইং কম্যান্ডার অভিনন্দনকে ছাড়লে যদি ভারত-পাক সম্পর্কের উন্নতি হয়, তাহলে তাঁরা আলোচনায় বসতে রাজি। এমনকী পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সরাসরি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলতে রাজি আছেন বলে জানানো হয়েছে পাক বিদেশমন্ত্রকের তরফে। আরও জানানো হয়েছে, ভারত যে ডসিয়ার দিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্রের খবর, এই প্রস্তাবের জবাবে ভারতের তরফে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, উইং কম্যান্ডার অভিনন্দনকে ছাড়তে হবে পাকিস্তানকে। তার জন্য কোনও আলোচনা বা কোনও রকমের শর্তের কোনও জায়গা নেই। আগে অভিনন্দনকে ছাড়া হোক, তারপর এই ব্যাপারে কোনও রকমের আলোচনা করা হবে।

বুধবার সকালেই পাক সেনা মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, দুটি ভারতীয় মিগ-২১ যুদ্ধবিমানকে গুলি করে নামিয়েছে পাক সেনা। দুই ভারতীয় পাইলট আটক রয়েছেন। একজন হাসপাতালে ভর্তি। অন্যজন পাক সেনার হেফাজতে রয়েছেন। তারপর বিকেলের দিকে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, একটি পাক এফ-১৬ যুদ্ধবিমানকে গুলি করে নামিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। কিন্তু এই অপারেশনে ভারতীয় বায়ুসেনার এক পাইলট নিখোঁজ। পাকিস্তান দাবি করছে, তাদের হেফাজতে রয়েছেন ওই পাইলট। এই ব্যাপারে খতিয়ে দেখছে নয়াদিল্লি।

ইতিমধ্যেই পাক সংবাদমাধ্যমে পাইলট অভিনন্দনের কয়েকটি ভিডিও প্রকাশ পায়। দেখা যায়, তিনি রক্তাক্ত। ভারতের তরফে দাবি করা হয়, জেনেভা চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে আচরণ করা উচিত। কিন্তু তা করছে না পাকিস্তান। তার কিছুক্ষণ পরেই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে পাক সেনা মুখপাত্র জানান, এক ভারতীয় পাইলট তাঁদের হেফাজতে রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে সামরিক নীতি মেনেই আচরণ করা হচ্ছে। উইং কম্যান্ডার অভিনন্দনের ছবিও টুইট করেন তিনি।

বিকেলেই পাকিস্তানের ডেপুটি হাই কমিশনারকে ডেকে পাঠিয়ে এই ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়। যত দ্রুত সম্ভব, ভারতীয় পাইলটকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানায় নয়াদিল্লি। গোটা দেশজুড়ে অভিনন্দনকে ফেরানোর দাবি ওঠে। এমনকী পাকিস্তানের অনেক নাগরিক সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের সরকারের কাছে আবেদন জানায়, অভিনন্দনকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।

তারপরেই বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের তরফে এই আলোচনার প্রস্তাব এল। তবে ভারতের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মঙ্গলবার ভারতীয় বায়ুসেনা আক্রমণ করেছিল পাক অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত জইশ, লস্কর ও হিজবুলের প্রশিক্ষণ শিবির ও লঞ্চ প্যাডে। পাক সেনার বিরুদ্ধে কোনও আক্রমণ হয়নি। কিন্তু পাক আর্মি ভারতীয় সেনার উপর আক্রমণ করেছে। অর্থাৎ বোঝা যাচ্ছে, পরিস্থিতি কোন দেশ বেশি উত্তপ্ত করতে চাইছে। এই পরিস্থিতিতে কোনও মতেই আলোচনা করা সম্ভব নয়, জানিয়ে দিল নয়াদিল্লি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here