এনগেজমেন্ট পরে হবে, মা’কে কিডনি দিয়ে আসি বলেই হাসপাতালে ছুটল মেয়ে

0
1064

দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ মেয়েকে পৃথিবীর আলো দেখিয়েছিলেন মা। নিজের অঙ্গ দিয়ে মাকেই নতুন জীবন দিলেন এক তরুণী। প্রেমিকের হাত ছাড়িয়ে, এনগেজমেন্ট বাতিল করে মা’কে কিডনি দিতে ছুটে গেলেন হাসপাতালে। ডাক্তাররা বললেন, অবিবাহিত মেয়েদের মধ্যে এমন মানসিকতা সচরাচর দেখা যায়না। এই মেয়েটি ব্যতিক্রমী। তাঁর জীবনবোধ অনুপ্রেরণা দেবে নিজেকে নিয়েই মজে থাকা যুবসমাজকে।

বছর পঁচিশের ওই তরুণী বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা। তাঁর মায়ের কিডনির সমস্যা ধরা পড়ে কয়েক মাস আগে। ডাক্তাররা জানিয়ে দেনl, অবিলম্বে কিডনি প্রতিস্থাপন না করলে তাঁর মায়ের আয়ু আর এক বছরের বেশি নেই। তারপর থেকেই শুরু হয় কিডনির খোঁজ। কিন্তু কোথাও একই রক্তের গ্রুপের কিডনি না মেলায় সমস্যা বাড়তে থাকে। হতাশ হয়ে পড়েন তরুণী ও তাঁর বাবা।

এ দিকে দীর্ঘ দিনের প্রেমিকের সঙ্গে মেয়েটির এনগেজমেন্টের দিনও এগিয়ে আসতে থাকে। তখনই তরুণী সিদ্ধান্ত নেনে, তিনিই নিজের কিডনি দিয়ে বাঁচাবেন মা’কে। তরুণীর সিদ্ধান্তে বেঁকে বসেন তাঁর প্রেমিক। একটা কিডনি দান করা মানেই, শারীরিক ভাবে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়া। মানতে রাজি হয় না তাঁর প্রেমিকের পরিবারও। শেষে এনগেজমেন্ট বাতিল করারই সিদ্ধান্ত নেন তরুণী।

বেঙ্গালুরুর মণিপাল হাসপাতালে ওই মহিলার কিডনি প্রতিস্থাপন হয় গত ২১ জুলাই। হাসপাতালের নেফ্রোলজিস্ট ডঃ শঙ্করন সুন্দর বলেছেন, “অবিবাহিত মেয়েদের কিডনি নিতে আমরাই দু’বার ভাবি। কারণ তাঁদের বিয়ে, সন্তানধারণের বিষয়গুলো থাকে। কিন্তু, এই মেয়েটিকে আমরা মানা করতে পারিনি। তাঁর জেদ আমাদের সকলকে হারিয়ে দিয়েছে। নিজের স্বপ্নের থেকেও মায়ের জীবন তাঁর কাছে অনেক আগে ছিল। এই ভাবনা আজকালকার দিনে বিরল।” কিডনি প্রতিস্থাপন সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক্তার শঙ্করন।

ডাক্তারের কথায়, প্রথমে মেয়েটিকে বোঝানোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সে তাঁর সিদ্ধান্তে ছিল অবিচল। কিডনি না পেলে তাঁর মা’কে বাঁচানোও সম্ভব হত না। কারণ ভিন্ রাজ্য থেকে কিডনি নিয়ে এসে অস্ত্রোপচার করার প্রক্রিয়াটাও অনেক লম্বা। এ দিকে মহিলার শারীরিক অবস্থারও অবনতি হচ্ছিল।

মণিপাল হাসপাতালের নেফ্রোলজিস্ট এবং চেয়ারম্যান ডঃ সুদর্শন বল্লালের কথায়, “কিডনি দানের পরে মহিলাদের বন্ধ্যাত্ব, সন্তানধারণে জটিলতার মতো অনেক সমস্যা দেখা দেয়। শুধু অবিবাহিত কেন বিবাহিত মহিলারাও কিডনি দান করতে ভয় পান। আপত্তি করেন তাঁদের পরিবারও। অথচ এই পরিবারটির মানসিকতা আমাদের মুগ্ধ করেছে।”

মেয়ের কৃতিত্বে গর্বিত তাঁর বাবাও। জানিয়েছেন, তাঁরা আদতে বাংলাদেশের বাসিন্দা। দুই মেয়ের মধ্যে এক মেয়ে পরিবারকে বাঁচিয়েছে। এমন মেয়ের বাবা হতে পেরে তিনি ধন্য।

Previous articleআপনার চোখ এখন কেমন আছে? অভিষেককে মোদী:
Next articleটালিগঞ্জ ক্রসিংয়ের কাছে বাস যাত্রীর হাত ছিঁড়ে পড়ল রাস্তায়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here