দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনা আবহে এই প্রথম শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে প্রশাসনিক বৈঠকে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলাশাসক, মহকুমাশাসক আর বিডিওদের নিয়ে উত্তরবঙ্গের প্রশাসনিক বৈঠকে কেন্দ্রকে কৃষিবিল নিয়ে যেমন একাধারে সমালোচনা করলেন, তেমনি ‘এত’ কাজ করেও উত্তরবঙ্গের মন পেতে লোকসভায় ব্যর্থ হওয়া নিয়ে কিছুটা অভিমানও প্রকাশ পেল মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। এই প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে সকলকেই র‍্যাপিড কোভিড টেস্ট করিয়ে রিপোর্ট নিয়ে আসতে হয়েছে।

মমতা শেষবার শিলিগুড়ি এসেছিলেন জানুয়ারিতে। মঙ্গলবার তিনি বৈঠক করলেন কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে। বুধবার বৈঠকে করবেন দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে। এদিনের বৈঠক থেকে অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘পুজোর সময় করোনা নিয়ে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। 

যে কোনও ধরনের অসতর্কতা বিপদ ডেকে আনতে পারে। উত্তরবঙ্গে করোনা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেটা যেন নষ্ট না হয়।’ পুলিশ-সহ সমস্ত করোনা যোদ্ধাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কোভিড যোদ্ধাদের জন্য আমি গর্বিত। তাঁদের জন্যই উত্তরবঙ্গে কোভিড নিয়ন্ত্রণে আছে।’ সেইসঙ্গে উদ্বাস্তদের মন পেতে তিনি বলেন, ‘সেলফ ডিক্লারেশন সার্টিফিকেটেই সরকারি কাজ হবে। উদ্বাস্তুদের জন্যও এই সার্টিফিকেটই যথেষ্ট। অন্য কোনও সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হবে না।’

তবে তাঁর আফসোস, ‘উত্তরবঙ্গে প্রচুর কাজ হয়েছে। অথচ দাম পাইনি। বরং যারা কাজ করেনি ওকে, শুধু দাঙ্গার কথা বলেছে, তারা ফল পেয়েছে।’ উত্তরবঙ্গে লোকসভায় বিজেপির ব্যাপক সাফল্য নিয়েই যে মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য, তা স্পষ্ট। যদিও উত্তরবঙ্গে উন্নয়নের কাজ যে তিনি চালিয়ে যাবেন, তা স্পষ্ট করে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের জন্যে কাজে কোনওরকম গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না। জোর করে কোনও কাজ আটকানো যাবে না। কারও পেনশন আটকানো যাবে না।’ সেইসঙ্গে কৃষিবিল নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারকে বিঁধে বলেছেন, ‘কৃষকদের জীবন নষ্ট করার চক্রান্ত চলছে। আমরা তা হতে দেব না।’ এদিন কৃষকদের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে মুখ্যসচিবকে প্রয়োজনীয় পথ খোঁজার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, বুধবারের বৈঠকে জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা, মোর্চা নেতা বিনয় তামাং এবং জিটিএ কর্তারাও যোগ দেবেন। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বৈঠকগুলোয় শুধুমাত্র সরকারি প্রকল্পের অগ্রগতি ও গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিয়েই আলোচনা করা হচ্ছে। বর্ষায় উত্তরবঙ্গের বেহাল রাস্তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে।

আগামী এপ্রিল-মে মাসে রাজ্যে বিধানসভা ভোট। সেই অর্থে হাতে মাত্র ছ’ মাস সময়। তাই মুখ্যমন্ত্রীর এ বারের উত্তরবঙ্গ সফর রাজনৈতিক ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এখনই কোনও জনসমাবেশ করবেন না বলে জেলা প্রশাসনকে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন মমতা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here