দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ আর বাকি ২৪ ঘণ্টা। রাত পোহালেই ফাঁসি নির্ভয়ার চার দোষী অক্ষয় ঠাকুর, পবন গুপ্ত, বিনয় শর্মা ও মুকেশ সিংয়ের। ফাঁসির রায় সংশোধনের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করেছিল আসামি পবন গুপ্ত (২৫)। সেই পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দিল্লির এক আদালত ঘোষণা করে, আগামী ৩ মার্চ নির্ভয়া মামলার চার আসামীকে ফাঁসি দেওয়া হবে। এর আগে দু’বার তাদের ফাঁসির দিন ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু অপরাধীরা একে একে ক্ষমা চেয়ে আবেদন করায় তাদের ফাঁসি দেওয়া যায়নি। বিচারক ধর্মেন্দ্র রানা, জেল কর্তৃপক্ষকে নোটিশ পাঠিয়ে বলেছেন এই পিটিশনের শুনানি হবে ফাঁসির একদিন আগে অর্থাৎ ২ মার্চ। তবে ফাঁসির দিন পিছনোর বা সাজা মকুবের আর্জি খতিয়ে দেখার কোনও সম্ভাবনাই নেই। ফাঁসির সাদার বদলে যাবজ্জীবনের কারাবাস দেওয়া যায় কিনা সেই আর্জি জানিয়ে শীর্ষ আদালতে পিটিশন দাখিল করেছিল পবনের আইনজীবী এপি সিং। সেই আবেদন খারিজ হয়ে গেল আজ।
২০১২ সালে প্যারামেডিক্যাল ছাত্রীকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ ও নৃশংস অত্যাচারের পর খুনের ঘটনায় চার দণ্ডিত মুকেশ সিংহ, বিনয় শর্মা, অক্ষয় ঠাকুর ও পবন গুপ্তর ফাঁসির আদেশ দেয় নিম্ন আদালত। তার পর থেকেই দীর্ঘ আইনি লড়াই চলছে। পবন গুপ্ত বাদে তিন জনই তাদের সমস্ত আইনি বিকল্প শেষ করে ফেলেছে। দণ্ডিতদের আইনজীবী এপি সিং জানিয়েছেন, পবনের কিউরেটিভ পিটিশনের ফয়সালা হয়নি সুপ্রিম কোর্টে। যদিও এ ব্যাপারে শীর্ষ আদালতের তরফে কিছু জানানো হয়নি। এদিকে, বিনয়ের সর্বশেষ প্রাণ ভিক্ষার আর্জিও খারিজ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বাকি দু’জন অক্ষয় ঠাকুর এবং মুকেশ সিংহের সামনে আর কোনও আইনি রাস্তা খোলা নেই।
এর আগেও নির্ভয়া কণ্ডের দণ্ডিতদের ফাঁসির দিনক্ষণ নির্ধারিত করে দু’বার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছে পাটিয়ালা হাউস কোর্ট। প্রথম পরোয়ানায় ফাঁসি কার্যকরের তারিখ ছিল ২২ জানুয়ারি। তার পর দ্বিতীয় পরোয়ানায় সেই তারিখ ছিল ১ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু তার মধ্যেও সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় গত ৩১ জানুয়ারি পাতিয়ালা হাউস কোর্ট পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ফাঁসি কার্যকরের উপর স্থগিতাদেশ দেয়। দিল্লি হাইকোর্টের ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একসঙ্গে মামলা করেছিল কেন্দ্রীয় ও দিল্লির সরকার। দাবি ছিল, যাদের সামনে আইনের সমস্ত রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তাদের আলাদা ভাবে ফাঁসিতে ঝোলানো যাবে না কেন এবং এক অপরাধীর সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া শেষ হয়নি বলে বাকিদের ফাঁসি পিছিয়ে যাবে কেন সে প্রশ্নও তুলেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। হাইকোর্টের দেওয়া সময়সীমা শেষের পর শীর্ষ আদালত জানায়, নিম্ন আদালতে এ বার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করতে আর কোনও বাধা নেই। সেই মতো পাটিয়ালা হাউস কোর্টে মৃত্যু পরোয়ানার আর্জি জানায় সরকার পক্ষ।
৩ মার্চ মঙ্গলবার ভোরের অপেক্ষা করছেন নির্ভয়ার মা আশাদেবী। এই রায়দানের পরে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে নির্ভয়ার পরিবার। আশাদেবী বলেছেন, “বিচারব্যবস্থার উপর সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরবে। আমার মেয়েটা এবার ন্যায় পাবে।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here