দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ অবশেষে উদ্বেগের অবসান। হাসপাতাল থেকে ছুটি পেলেন বাংলার সেরা আইকন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবারই তাঁকে ছুটি দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি শেষমেশ নিজের ইচ্ছেতে থেকে যান আরও ২৪ ঘন্টা। বৃহস্পতিবার তিনি সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ডিসচার্জ হন। গতদিনও তাঁকে ডিসচার্জ সার্টিফিকেট দিয়ে দেওয়া হয়, বাড়ি থেকে যায় তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িও। কিন্তু তিনি ফেরেননি, এদিন অবশ্য সেই উদ্বেগ আর দীর্ঘায়িত হয়নি। তাঁকে খয়েরি জ্যাকেট পরে বেরিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে। তিনি গ্রিন করিডর দিয়ে বেহালার বাড়ির দিকে রওনা হন।
তাঁর জন্য যে সমর্থকদের আকুলতা ছিল, সেটি ভেবেই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন আমার জন্য যে এত চিন্তা করেছে, তার জন্য ধন্যবাদ। তিনি চিকিৎসকদের ধন্যবাদ দিয়েছেন। তিনি হাত নেড়েছেন। বলেছেন, ‘‘আমি আবারও কাজে ফিরব। এবার আমার জীবনে অন্য উড়ান শুরু হল।’’


সৌরভের জন্য গতকাল যেমন ভক্তকূলের দল ছিল, এদিন সেটি দেখা যায়নি। কারণ বৃহস্পতিবার পুলিসী তৎপরতা অনেক বেশি ছিল। সৌরভের জন্য পাইলট কার এসে গিয়েছিল। এমনকি পরিবারের পক্ষ থেকেও সবাই হাজির হয়ে গিয়েছিলেন। স্ত্রী ডোনা সারা রাত হাসপাতালেই ছিলেন। যদিও সকালে তিনি একটুর জন্য বাড়ি যান, আবার ফেরেনও সোয়া নয়টা নাগাদ।

বুধবারও সকাল থেকেই ভিড় উপচে পড়েছিল উডল্যান্ডস হাসপাতাল চত্বরে। দাদার কামব্যাক আরও একবার স্বচক্ষে দেখার লোভ অনেকেই সামলাতে পারেননি। সেই মতোই ব্যানার, হোর্ডিং নিয়ে প্রস্তুত ছিলেন সকলে। সাংবাদিকরাও সেখানেই ছিলেন। রাতও কাটিয়েছিলেন অনেকেই।


এমনকি সকাল থেকে সাউন্ডবক্সও লাগানো হয়েছিল হাসপাতালের বাইরে। সেটি এদিন তেমন দেখা যায়নি। পুলিশ এদিন অনেকবেশি সক্রিয় ছিল। তাই আশেপাশে কাউকে থাকতে দেয়নি। হয়তো সৌরভের পরিবারের পক্ষ থেকেও এমনটি চাওয়া হয়নি।
এদিকে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরবে, এই আশাতে বেহালা বীরেন রায় রোডের বাড়িতে হাজির ছিলেন এদিনও বেশ কিছু দাদার সমর্থক। তাঁদের হাতে নানা প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ছিল। তাঁর বাড়ির সদর দরজা খোলাই ছিল।

হাসপাতাল এদিন সকালে বুলেটিনে জানিয়েছে, আজও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের রুটিন ইসিজি হয়েছে। এর পরে ১৪ দিন বাদে তাঁকে পরীক্ষার জন্য ফের আসতে হবে হাসপাতালে। তখনই সব দেখে শুনে বাকি দুটি স্টেন্ট বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তার আগে পর্যন্ত কঠোর নিয়মে থাকতে হবে তাঁকে। তৈলাক্ত খাবার তো বাদ দিতে হবেই, সেই সঙ্গে চলবে পরিমিত শরীরচর্চা। ওষুধপত্র তো আছেই।


উডল্যান্ডসে হাসপাতালে মহারাজের দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন তিন সদস্যের প্যানেল। তাঁরা হলেন ডাঃ সরোজ মন্ডল, ডাঃ সৌতিক পান্ডা ও ডাঃ সপ্তর্ষি বসু। গত মঙ্গলবার তাঁকে দেখে যান ডাঃ দেবী শেঠী। সেদিনই জানিয়েছিলেন তিনি, সৌরভের হার্ট অনেকবেশি স্ট্রং, তিনি ক্রিকেট খেলতে পারবেন, বিমানও চালাতে পারবেন। শুধু দরকার একটু সতর্কতা।


প্রসঙ্গত, গত ২ জানুয়ারি সৌরভ বাড়ির জিমে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এতটাই দ্রুততার সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয়, যেটিকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় ‘গোল্ডেন আওয়ার’। বোর্ড প্রেসিডেন্ট ক্রমে সুস্থ হয়ে ওঠেন। তাঁর তিনটি আর্টারিতে ব্লকেজ ছিল, একটি স্টেন্ট বসানো হয়েছে। বাকি দুটিও বসতে পারে বলে জানা গিয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here