অর্পিতা দে :
মঙ্গলবার রাতেই দেখা গিয়েছিলো শোয়াল মাসের চাঁদ, আর তাই বুধবারই কলকাতায় পালিত হলো ঈদ -উল-ফিতর৷ একমাসব্যাপী রমজানের পর মঙ্গলবার রাতেই কলকাতার নাখোদা মসজিদ এর তরফ থেকে জানানো হয় বুধবারই কলকাতায় ঈদ পালিত হবে৷বুধবার তাই দিনের আলো ফোটার সাথে সাথেই কলকাতার চিৎপুর অঞ্চলের এই নাখোদা মসজিদ এর সামনে ভিড় জমতে শুরু করে৷
এই উৎসব মুখর দিন শুরু হয় নামাজ পড়ার মধ্য দিয়েই৷আগেরদিন রাত পর্যন্ত যে জ্যাকারিয়া স্ট্রিট এর রাস্তা ছিল ঈদের কেনা কাটা আর খাবারের পসরায় সাজানো, সকাল হতেই তার সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপ। জল দিয়ে পরিষ্কার করে ধোয়া রাস্তাটায় তখন সবাই নকশা করা গালিচা বিছাতে ব্যস্ত।একটুপরেই শুরু হয়ে যাবে নামাজ পাঠ; ছোট শিশু থেকে শুরু করে, নবীন, প্রবীণ, বৃদ্ধ নির্বিশেষে শ্বেতশুভ্র বস্ত্রে সবাই হাজির মসজিদ এর সামনে।নিজেদেরমতোন পছন্দসই আসন, গালিচা পেতে বসার জায়গা করে নিচ্ছেন।
অনেকে মজেছে সেলফিতে। কেউবা শেষ মুহূর্তে সজ্জার টান দিচ্ছে চোখে সুরমা লাগিয়ে, কেউবা আতর মাখাতে ব্যস্ত উৎসবের এই বিশেষ দিনটার জন্য কেনা নতুন জামাটায়৷
মসজিদের ভিতরেও তখন বেশ ভিড় জমে গেছে। নামজাদা হোটেলগুলোও যেন রাত পর্যন্ত হালিম বিক্রি করে ক্লান্ত, তখনও তারা তৈরী হয়ে হয়ে উঠতে পারেনি, নামাজের উদ্দেশ্যে৷ ঘড়িতে সকাল সাড়ে ছটা বাজতেই নামাজ পড়া শুরু হলো৷নাখোদার সামনে থেকে প্রায় এম জি রোড অবধি জ্যাকারিয়া স্ট্রিটের রাস্তাটা তখন সম্পূর্ণ সাদা হয়ে গেছে৷ মেঘলাদিনের সূর্যের উঁকি ঝুঁকিতে নাখোদার আকাশে তখন আজানের সুর জানান দিচ্ছে উৎসবের আমেজ৷ নামাজ পড়া শেষ হতেই শুরু হলো পরস্পরকে বুকে জড়িয়ে কোলাকুলি করে শুভেচ্ছা বিনিময় পর্ব। এরইমধ্যে স্থানীয় দু একজন দোকানী পসরা সাজিয়েছে সিমাইয়ের৷ দোকানীর গরম সিমাইয়ের ডাকে নিমেষে ভিড় জমে গেলো, এবার উপবাস ভঙ্গের পালা।
https://youtu.be/cooWttxFiDE
নাখোদার নামাজ পড়া শেষ হতেই সকাল ন’টা নাগাদ শুরু হয়ে গেলো কলকাতার রেড রোডে নামাজ পড়া৷ প্রতিবছরের মতোই এবছরও রেড রোডের নামাজ পড়ার সময় উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোহো আরো বিশিষ্টজনেরা। সাধারণ মানুষের মধ্যে উপস্থিত থেকে তাদের সাথে ঈদের নামাজ পড়ে মুখ্যমন্ত্রীও ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিলেন সকলের সাথে।
এদিন উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী কেও দেখা যায় স্থানীয় এক মসজিদে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে৷ পাশাপাশি সীমান্ত শহর বনগাঁ এবং কলকাতাও একজাতি একপ্রাণ মিলিত হয়ে পালন করলো আনন্দের ঈদ-উল-ফিতর৷