দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ আগুন নিয়ে খেলবেন না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এ ভাবেই তোপ দাগলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়ার এ দিন তীব্র সমালোচনা করেন রাজ্যপাল।

শুক্রবার সকালে জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনার সবিস্তার রিপোর্ট কেন্দ্রের কাছে পেশ করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। রাজ্যপালের রিপোর্টের ভিত্তিতেই সোমবার রাজ্যের মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে দিল্লিতে তলব করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।

এ দিন সাংবাদিকদের কাছে রাজ্যপাল রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রীকে একহাত নিয়ে বলেন, ‘কয়েক জন আমলা সরকারি কর্মী না হয়ে রাজনেতিক কর্মী হচ্ছেন। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের আচরণ সংবিধানের পক্ষে অবমাননাকর। রাজ্যে চারিদিকে দুর্নীতি। বিরোধীরা প্রতিবাদের জায়গাই পাচ্ছে না। নৃশংস ভাবে বিরোধীদের কার্যকলাপ দমন করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে রিপোর্ট পাঠিয়ে জানিয়েছি। এমন ঘটনা আর বরদাস্ত করা হবে না। এক জন দায়িত্বশীল মুখ্যমন্ত্রী কী করে এমন ভাষা প্রয়োগ করেন! ক্ষমা চাইলে ওঁরই সম্মান বাড়বে।’

মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দেগে রাজ্যপাল বলেন, ‘দেশের নাগরিকদেরই বহিরাগত বলছেন মুখ্যমন্ত্রী! যা ঘটল তা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জাজনক। ডায়মন্ড হারবারের মতো ঘটনা যেন আর না ঘটে। ভারত এক দেশ, সব নাগরিক সমান। আপনি সংবিধান থেকে সরলে আমার দায়িত্ব শুরু হবে। মুখ্যসচিব-ডিজিপিকে বলেছি, এমন ঘটনা ঠিক নয়। মানবাধিকার দিবসে কী হল রাজ্যে! ডায়মন্ড হারবারের ঘটনা সংবিধানের পক্ষে অবমাননাকর। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে সতর্ক করেছি, তা সত্ত্বেও রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে। দয়া করে আগুন নিয়ে খেলবেন না। আমি সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের শপথ নিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীরও সাংবিধানিক কর্তব্য রয়েছে।’

রাজ্যপালের অভিযোগ, ‘দুর্নীতি এবং পক্ষপাতমূলক আচরণকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। ১২ লক্ষ কোটির বিনিয়োগ কোথায়? মাটির নীচে না উপরে, সমুদ্রের গভীরে নাকি আকাশে? কোথায় বিনিয়োগ? কে বিনিয়োগ করছে? ১০ বছরের কৃতিত্ব দাবি করছেন। আমার চিঠির জবাবটা আগে দিন। বহু চিঠি দিয়েছি মুখ্যমন্ত্রীকে। কিন্তু একটারও জবাব আসেনি। এই গোপন তথ্য মুখ্যমন্ত্রীকে দেব। রাজ্যের উপদেষ্টার কাজটা কী? অবসরের পরেও কেন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে তাঁকে? এডিজি আইনশৃঙ্খলা নিজেই মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযুক্ত।’

তৃণমূল সরকারের আমলে রাজ্যে শিল্প এবং বিনিয়োগের অবস্থা নিয়েও শুক্রবার প্রশ্ন তোলেন ধনখড়। বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট নিয়ে রাজ্য সরকারের দাবিদাওয়া নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘১২ লক্ষ কোটির বিনিয়োগের প্রস্তাব রয়েছে বলে দেখিয়েছে রাজ্য সরকার। কোথায় বিনিয়োগ? মাটির নীচে না উপরে? সমুদ্রের গভীরে নাকি আকাশে?  কে বিনিয়োগ করছে?  ১০ বছরের রিপোর্টে সাফল্যের দাবি করছে সরকার। অথচ ২০০ কোটির কোভিড সরঞ্জাম কেনাতেই দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তদন্তের রিপোর্ট কোথায় গেল? আমার এ সব প্রশ্নের উত্তর যাতে দিতে না হয়, তার জন্য নতুন নতুন পরিকপনা করা হয়।’’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here