অর্পিতা দে, কলকাতা,দেশের সময়ঃ উত্তর কলকাতার বিধান সরণি একসময় যেমন সিনেমা পাড়া নাম খ্যাত ছিল তেমনি একে ষ্টুডিও পাড়াও বলা হতো৷আর বলা হবে নাই বা কেন এখানে ছিল স্বাধীনতার আমল থেকে নামি দামি ২০-২৫ টা ষ্টুডিও এই চত্বরেই ছিল৷ সেসময় সিনেমা হল থেকে বেরিয়ে কেবিনে কবিরাজি কাটলেট খেয়ে স্টুডিওয় গিয়ে একটা সুন্দর ছবি না তুললে বাঙালির মন পরিতৃপ্ত হতো না৷
যার ফলে ষ্টুডিও পাড়ার চাহিদাও ছিল; কিন্তু সময়ের সাথে হারিয়ে গেছে সেইসব দিন।আজ সেখানে না আছে সিনেমা না আছে ষ্টুডিও। আজ যারা নিজেদের সময়ের সাথে বদল করতে পেরেছে তারাই কোনোরকমে টিকে আছে বাকিদের স্থান হয়েছে অতীতের ঘরে৷
এই সমস্ত ষ্টুডিও গুলোর মধ্যে লুকিয়ে আছে কলকাতার ইতিহাস।
শ্রীমানী বাজারের কাছে শ্রী রতন দে ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন একটি ষ্টুডিও, সেই সাথে জার্মানি থেকে তিনি নিয়ে আসেন পেডেস্টাল টাইপ ব্যাক সাইড পেল্ট ক্যামেরা সেই দিয়ে শুরু হয় তার পথ চলা। এরপর পরবর্তীকালে তাঁর মেজো ছেলে চারুচন্দ্র দে এবং লক্ষীকান্ত দে এগিয়ে নিয়ে যান পারিবারিক ব্যবসা।
এরমধ্যে লক্ষীকান্ত দে ছিলেন একজন চিত্রসাংবাদিক। তারও পরবর্তীকালে রতন দে‘র সেজো ছেলে ও মণীন্দ্রচন্দ্র দে‘র একমাত্র পুত্র কেদারনাথ দে তার কাকা জ্যাঠাদের সাথে পারিবারিক ব্যবসার হাল ধরেন৷ তাদের তোলা বেশ কিছু ঐতিহাসিক চিত্র আজ রয়ে গেছে ডি রতন ষ্টুডিও‘র গুপ্তধন হয়ে৷ বর্তমান প্রজন্ম এগিয়ে চলেছে ডিজিটালের যুগোপযোগী করে নিজেদের পরিবর্তনের মাধ্যমে৷
ত্বৎকালীন আরেকজন মানুষ এই ষ্টুডিও ব্যবসায় বেশ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন তিনি হলেন সি গুহ। কলেজস্ট্রিট কফি হাউসের দোতলায় তার ষ্টুডিওটি আজ না থাকলেও, বয়ে নিয়ে চলেছে তার স্মৃতি ও ব্যবহৃত কিছু জিনিসপত্র। আর বাকি সমসাময়িক ষ্টুডিও নাম লিখিয়েছে ইতিহাসের পাতায়৷
সেইসমস্ত স্টুডিওর ক্যামেরা ও ব্যবহৃত জিনিসের কখনোও বা স্থান হয়েছে সুশীল কুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতন পুরোনো জিনিসের সংগ্রাহকদের অতীতের ঘরে৷আবার কিছু ষ্টুডিও আজও রয়ে গেছে নিজেদের যুগের সাথে তাল মিলিয়ে।