ইস্টবেঙ্গল ২ : ১ নেরোকা

আকাশ ভট্টাচার্য্য, দেশের সময়: মঞ্চটা হতে পারত নতুন লুকের জবি জাস্টিনের। লালহলুদের ‘নয়নমণি’ স্যান্টোস কোলাডো হয়ত হিরো হতে পারতেন। কিন্তু তা হল না। ইস্টবেঙ্গলের জয়ের মঞ্চটা তৈরি করে গেলেন সেই স্প্যানিশ স্ট্রাইকার এনরিকে এসকুয়েদা। যুবভারতীতে আইলিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে শুরুর তিন মিনিটে পিছিয়ে পড়েও মণিপুর নেরোকা এফসি-কে ২-১ গোলে হারাল ইস্টবেঙ্গল। জোড়া গোল করে ম্যাচের নায়ক ‘সুপার সাব’ এনরিকে। ৩ পয়েন্ট নিয়ে লিগ একপ্রকার জমিয়েই দিল লালহলুদ।

ম্যাচের শুরু থেকেই লালহলুদ বক্সে আক্রমণে চলে আসছিল সিংগম সুভাষ সিংহ, চেঞ্চো গেলতসেন, কাতসুমি ইউসারা। ইস্টবেঙ্গল স্টপারদের কার্যত দাঁড় করিয়ে ৩ মিনিটেই গোল করে নেরোকাকে এগিয়ে দেন বেঙ্গালুরু এফসি থেকে লিয়েনে আসা চেঞ্চো গেলতসেন। ইস্টবেঙ্গল বারবার আক্রমণে গেলেও নেরোকার দুই স্টপার এডুয়ার্ডো ফেরেইরা আর ভারনে ক্যালনের কাছে আটকে যাচ্ছিলেন কোলাডো, জবিরা। তবে বল দখলের লড়াইয়ে অনেকটাই এগিয়ে ছিল লালহলুদ। ম্যাচে ৬৮ শতাংশ বলদখল ছিল রালতে, কাশিমদের। বরাবরের মতই ডিফেন্সের পাশাপাশি বল তৈরির কাজ করছিলেন বোরহা গোমেজ, জনি অ্যাকোস্টারা।

চেঞ্চোর একটা গোল ছাড়া ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার রক্ষিত ডাগরকে তেমন কোনও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়নি। আজ ৪-৪-১-১ ফর্মেশনে দল নামিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেজ। জবির একটু পিছনে রেখেছিলেন কোলাডোকে। বামদিকে টনি ডোভালে কিছুটা নিষ্প্রভ থাকলেও ডানমাওইয়া রালতে আর লালরিন্দিকা রালতে আর কাশিম আইদারা যে ফুটবলটা খেললেন তা অবশ্যই প্রশংসার যোগ্য।

বিরতির পর ১-০ এগিয়ে থাকা নেরোকা কেমন অগাছোলো ফুটবল খেলল। মাঝমাঠেই মিস পাস আর অপ্রয়োজনীয় ট্যাকল করে ইস্টবেঙ্গলকে অক্সিজেন পাইয়ে দিয়েছিল কাতসুমি, উইলিয়ামস, সেবাস্তিয়ানরা। ৪-৩-২-১ ছকে খেলতে নামা নেরোকা হঠাৎই অ্যাটাকে লোক বাড়িয়ে ডিফেন্স দূর্বল করে ফেলল। ৫৮ মিনিটে টনি ডোভালের পরিবর্তে ‘তরতাজা’ এনরিকে নামতেই যেন তেড়েফুঁড়ে আক্রমণ শুরু করেছিল লালহলুদ। ৬৭ মিনিটেই কোলাডোর মাপা পাস থেকে জাল নড়িয়ে দেন টনির পরিবর্তে নামা এনরিকে। এরপর জবিও অনেকগুলো তুলনামূলক সহজ নষ্ট করলেন যা একেবারেই জবিসুলভ নয়। ম্যাচ যখন ১-১ হয়েই শেষ হতে চলেছে, তিন পয়েন্টের জায়গায় এক পয়েন্টের ভ্রূকুটি, ঠিক তখনই এনরিকে ম্যাজিক। ম্যাচের ৮৬ মিনিটে সালাম রঞ্জনের পাস নেরোকা ডিফেন্সে একটু ডিফ্লেক্ট হতেই জোরালো হেডে বল গোলে ঢুকিয়ে দেন এনরিকে এসকুয়েদা। দলকে ৩ পয়েন্ট উপহার দিয়ে ম্যাচের নায়কও তিনিই।

৩২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে এখন রিয়েল কাশ্মীর। ইস্টবেঙ্গল ১৪ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে চেন্নাই(৩০)-এর থেকে মাত্র ২ পয়েন্ট দূরে। লালহলুদের পরের ম্যাচ বর্তমান লিগ টপার রিয়েল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে তাদের ঘরের মাঠে। গোটা দল জয়ের মধ্যে আছে, দলে চোট-আঘাতও তেমন নেই। কাশ্মীরের ঠান্ডাই এখন আলেসান্দ্রোর চিন্তার বিষয়। তবে এই জয় যে ইস্টবেঙ্গলকে লিগজয়ের পথে অনেকটাই আত্মবিশ্বাস দেবে তা বলতেই হয়।

ছবি গুলিতুলেছেন- শান্তনু বিশ্বাস/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here