“রেল দায় এড়াতে পারে না”-(সম্পাদকীয়)- ‘দেশের সময়’

0
933
রেল দায় এড়াতে পারে না-(সম্পাদকীয়)-পাঞ্জাবের অমৃতসরে দশেরার দিন রাবণ দহন দেখতে গিয়ে যে মর্মান্তিক পরিণতির মুখোমুখি হতে হয়েছে সাধরণ মানুষকে তা এককথায় নজিরবিহীন।যে ৬১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে সরকারি হিসেব অনুসারে তাতেই বোঝা যায় ঘটনার ভয়াবহতা কতখানি।নানা মহলে ঘটনা নিয়ে নানা বিতর্ক শুরু হয়েছে,রেল বলছে ওখানে ওইভাবে রাবণ দহনের অনুষ্ঠানের কোন অনুমতি দেয় নি রেল কর্তৃপক্ষ।তাই যারা রেল লাইনের উপর দাঁড়িয়ে রাবণ দহনের দৃশ্য দেখছিলেন তারা বেআইনি ভাবেই জড় হয়েছিলেন।কেউ বলছেন দায় পাঞ্জাবের রাজ্য সরকারের তারা রেলকে না জানিয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মানুষগুলোকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে।আমরা জানি কোন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর এই দায় এড়ানোর খেলা শুরু হয়ে যায়।সবাই সবার দায় ঝেড়ে ফেলতে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন।স্বজন হারা যন্ত্রনা বুকে নিয়ে বেঁচে থাকতে হয় শুধু সাধারণ মানুষজনকে।অমৃতসরের ঘটনাও সেই দিকেই যাচ্ছে।আমাদের প্রশ্ন এতবড় একটা ঘটনার দায় কী ভাবে এড়িয়ে যেতে পারে রেল কর্তৃপক্ষ?আমরা যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নিই যে একেবারে বিনা অনুমতিতেই ওখানে রেল লাইনের উপর জড় হয়েছিলেন সাধারণ মানুষ,তারা বেআইনি কাজ করেছিলেন,তাহলেও কী চলন্ত ট্রেনের নিচে অতগুলো মানুষকে পিষে দেওয়ার কোন অধিকার জন্মায় রেল প্রশাসনের?ভারতবর্ষের সংবিধানে এভাবে মানুষ খুন করার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি।প্রশাসনের কোন মাথাই এভাবে মানুষ খুনের নিদান দিতে পারে না।কোন মানুষ যদি বেআইনি কাজ করে তাহলেও তাকে বিচারের আগে কোন শাস্তি দেওয়া যায় না,এটাই গণতন্ত্রের নিয়ম,নীতি।রেল কর্তৃপক্ষ তাদের দায় ঝেড়ে ফেলতে সেই গণতান্ত্রিক রীতিকে অস্বীকার করতে চাইছে।সর্বস্তর থেকে এর প্রতিবাদ হওয়া উচিত।এতগুলো মানুষের মৃত্যুর দায় রেলকে নিতে হবে,নিতে হবে পাঞ্জাবের রাজ্য সরকারকেও।একটা সামাজিক অনুষ্ঠানে সমবেত হওয়া মানুষজনদের দিকে এভাবে আচম্বিতে মৃত্যু এগিয়ে এসেছে,শুধুমাত্র প্রশাসনিক দায়হীনতার বদ অভ্যাসে।এই বদ অভ্যাস দূর করতেই হবে,তা নাহলে আর আর সাধারণ মানুষকে এভাবে মৃত্যুর অতল গহ্বরে তলিয়ে যেতে হবে।যে হাহাকার,যে যন্ত্রণা মৃত মানুষজনদের পরিবার গুলোতে দেখা দিয়েছে,শুধু আর্থিক ক্ষতিপুরণ দিয়ে তা মেটানো যাবে না,তা মেটাতে হলে এদেশের প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তি থেকে মন্ত্রী নেতা নেত্রী সবাইকে বুঝতে হবে শুধু তাদের জীবনটাই দামি নয়,এ দেশের সাধারণ মানুষের জীবনেরও মূল্য আছে। কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয় শুধু মাত্র নেতা মন্ত্রীদের নিরাপত্তার জন্য,আর সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে কারোর কোন ভাবনা নেই।সাধারণ মানুষের উপর দিয়ে চালিয়ে দেওয়া যায় ট্রেন,পিষে দেওয়া যায় তাদের।এটা গণতান্ত্রীক দেশের চরিত্র হতে পারে না।দেশের প্রশাসন ও নেতাদের একথা বুঝিয়ে দিতে সাধারণ মানুষকেই একজোট হতে হবে।সমস্ত রাজনৈতিক আনুগত্য ত্যাগ করে মানুষ তাদের নাগরিক অধিকার নিয়ে সোচ্চার হোক,এটাই সময়ের দাবি।অমৃতসরের ঘটনায় রেল কোন ভাবেই যেন তাদের দায় এড়িয়ে যেতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে সাধারণ মানুষকেই।
Previous articleলক্ষ্মীপুজোর বাজারে – ফল সবজি আকাশ ছোঁয়া:দেবন্বিতা চক্রবর্তী: বনগাঁ: দেশের সময়ঃ
Next article“রাজ্য সরকারের উদ্যোগে প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রা দিয়েই শেষ হল এবছর বাংলার দুর্গোৎসব। “দেশের সময়ঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here