রাজ্যে উপনির্বাচনের ফলে দিলীপের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন বিজেপির অন্দরেই

0
490
দেশের সময়: এ রাজ্যে তিনটি কেন্দ্রের উপনার্বাচনে বড়সড় ধাক্কা খেল বিজেপি।লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে যে আসনগুলিতে বিজেপি বড় ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে ছিল উপনির্বাচনে দেখা যাচ্ছে সেই সব আসনে ব্যবধান মুছে বিজেপিকে একেবারে ধরাশায়ী করে দিয়েছে এ রাজ্যের শাসক দল।

আর তাতপর্যপূর্ন হল খরগপুর যেখানে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিধায়ক ছিলেন কিছুদিন আগেও.তিনি সংসদে চলে যাওয়ায় যে আসন ফাঁকা হয়েছিল সেখানেও গো হারা হেরেছে বিজেপি।অথচ ভোটের আগে ও ভোটের দিন দিলীপ ঘোষ সংবাদ মাধ্যমের কাছে বড় মুখ করে বলেছিলেন তিনি নাকি হাতের তালুর মত চেনেন খরগপুর বিধানসভাকে।তিনি রেল কোয়ার্টারে বসেই নাকি সুরক্ষা দিয়েছেন তাঁর কেন্দ্রকে।তাঁর আসনে দাঁত ফোটাবার সাহস হবে না শাসক দলের।ভোটের ফল বেরুতেই অবশ্য উন্টো সুর গাইতে শুরু করেছেন দিলীপবাবু।

এখন বলছেন উপনির্বাচন এমনিতেই শাসক দলের প্রাধান্য থাকে তা ছাড়া এনআরসি ভীতি কাজ করেছে তাই এই ফল।কিন্তু বিজেপির অন্দর মোহলে ইতিমধ্যেই দিলীপবাবুর নেতৃত্ব নিয়ে প্রস্ন উঠতে শুরু করে দিযেছে।সাংবাদ মোহলের কোন কোন অংশ থেকে যদিও ভাসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে যে মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষ দুজনের নেতৃত্ব নিয়েই বিজেপির অন্দর মোহলে প্রশ্ন উঠছে আসল সত্যটা হল এ রাজ্যে এখনও সেভাবে নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণের দায়িত্ব দেওয়াই হয় নি মুকুল রায়কে।তিনি কার্যত পদহীন হয়েই থেকে গেছেন।

সেটা যে দিলীপ ঘোষদের কারসাজিতেই তাকে আড়াল করতেই সংবাদ মাধ্যমে এখন দিলীপ ঘোষের পাশাপাশি মুকুল রায়ের নাম ভাসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।এই উপনির্বাচনে কোন ভূমিকাই নিতে দেওয়া হয়নি মুকুল রায়কে,তাঁকে অনেকটা একঘরে করে রাখা হয়েছিল।তিনি কৌশল সাজাতে পারলে বা তাঁকে নিজের মত কাজ করতে দিলে অনেক হিসেব উন্টে যেতে পারত।কিন্তু তাতে দিলীপ ঘোষের মত মাথা মোটা ও ভাট বকা নেতাদের গুরুত্ব কমে যেতে পারে সেই আশঙ্কাতেই দিলীপবাবুরা বার বার মুকুল রায়ের পদ প্রাপ্তিতে আপত্তি তুলতে শুরু করেন।

লোকসভা ভোটের সাফল্য যে অনেকটা মুকুল রায়েরই অবদান সে কথা ভুলিয়ে দিতে গিলীপবাবুরা চেষ্টার কোন খামতি রাখেন নি।মুকুল রায় তাই এক সময় প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার কথাও ভাবতে শুরু করেছিলেন।আমরা দেশের সময়তে সেই প্রতিবেদন প্রকাশও করেছিলাম।

এখন যখন রাজ্য বিজেপির একেবারে অন্দরমোহলে দিলীপ ঘোষের নেতৃত্ব নিয়ে সরব দলেরই একাংশ তখন আবারও দিলীপবাবু ও তাঁর অনুগতরা এই ব্যর্থতার সঙ্গে মুকুল রায়ের নামটাও জুুরে দিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।অথচ এঁরাই লোকসভা ভোটের সাফল্য নিয়ে মুকুল রায়কে কোন কৃতিত্ব দিতে রাজি ছিলেন না।যে দলীপ ঘোষ এখন ব্যর্থতা নিয়ে নিজের দায় ঝেড়ে ফেলতে ব্যস্ত তিনি কেন কালিয়াগঞ্জ.খরগপুরে সংগঠন সেভাবে গড়ে তুলতে পারেন নি এই ক মাসে,কেন কালিয়াগঞ্জে ৫৭ হাজার ও খরগপুরে ৪২ হাজার ভোটের লিড মুছে যায় এত তাড়াতাড়ি।

দলের রাজ্য সভাপতি হিসেবে সেই দায় নিয়ে দিলীপবাবুর এখনই নেতৃত্ব থেকে সরে যাওয়া উচিত বলে মনে করেন রাজ্য বিজেপির অনেকেই।দিলীপবাবু যেভাবে দল চালাচ্ছেন সেটা অনেকটা জমিদারি মেজাজ বলে মনে করছেন রাজ্য বিজেপির অনেক নেতাই। কেন লোকসভা ভোটের অতবড় সাফল্যের পরেও দলের সেরকম কোন কর্মসূচি নেওয়া হল না?

এ রাজ্যে শিক্ষকের দুরবস্থা,জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি,বিদ্যুতের মাসুল এ রাজ্যে অন্য রাজ্য গুলির তুলনায় দ্বিগুন হওয়া নিয়ে একটা আন্দোলনের কর্মসূচি নিতে পারল না বিজেপি?রাজ্য নেতাদের ্অনেেকেই মনে করছেন শুধু মন্দির বা ধর্ম নয় দরকার মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা নিয়ে রাস্তায় নামা,সেটা না করাতেই বিজেপি ক্রমশ এ রাজ্যে মানুষের আস্থা হারাচ্ছে।আর জন্য সবচেয়ে বড় দায় হল দিলীপবাবুর।সংঘ ঘনিষ্ট হওয়াতে তিনি যতটা ধর্ম ও ভগবান নিয়ে ব্যস্ত তার সিকিভাগও মানুষের রোজকার সমস্যা নিয়ে ভাবতে জানেন না।নিজে আলটপকা মন্তব্য করেন অথচ কর্মী সমর্থকরা মার খেলে নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে আটকে থাকেন।মার খাওয়া কর্মীর পাশে ছুটে যেতে পারেন না।

রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় কৌশল সেই কৌশলের বিন্দু-বিসর্গ বোঝেন না দিলীপবাবু।অনেকেই মনে করছেন বিজেপিকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে সিলীপবাবুকে অবিসম্বে সরিয়ে দেওয়া উচিত।এই প্রতিবেদন যখন লেখা হচ্ছে সেই মুহূর্তে সূত্রের খবর এ রাজ্যের একাধিক বিজেপি নেতা এই মর্মে দিল্লিতে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে আবেদনও জানিয়ে এসেছেন।

ব্যাপারটা কানে গেছে দিলীপ ঘোষেরও।তিনি সংবাদ মা্ধ্যমের কাছে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন তাঁর চেয়ে যোগ্য কেউ থাকলে তাঁকে এখনই সরিয়ে দেওয়া হোক।পদ আগলাবার জন্য তিনি নাকি রাজনীতিতে আসেন নি।দিলীপবাবুর এই বিবৃতিকে কটা করে রাজ্যের কোন কোন বিজেপি নেতা একান্তে বলছেন দিলীপবাবু মুখে যাই বলুন বাস্তবে দেখা যায় তিনি পদ ধরে রাখতে শুধু মুকুল রায়কে নয় অন্য অনের রাজ্য বিজেপি নেতাকে চেপে রাখতে নানা কারসাজি করে যান।দিলীপবাবুর পদ ছেড়ে দেওয়ার বিবৃতিকে ইমোসনাল ব্ল্যাকমেইলিং এর চেষ্টা বলেও কটাক্ষ করছেন কেউ কেউ কেউ।

সব মিলিয়ে বিজেপি শিবিরে যে অশান্তির ঢেউ উঠতে চলেছে তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।

Previous articleমহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ উদ্ধব ঠাকরের
Next articleমহিলাদের জন্য মমতার নতুন প্রকল্প ‘জাগো’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here