দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি বিরোধিতায় গত বৃহস্পতিবার রানি রাসমণি রোডের সভা থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে ক’জন রয়েছেন আর বিপক্ষেই বা ক’জন তা জানতে গণভোট করা হোক। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের মতো নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানের নজরদারিতে হোক সেই নির্বাচন। সেই বিষয়ে রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দানের জনসভা থেকে মমতাকে তীব্র আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বললেন, মমতা তো সংসদে নিজেই চাইতেন অনুপ্রবেশকারীদের হটাতে। এখন উনি কলকাতা থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জে পৌঁছে গিয়েছেন। হঠাৎ এই বদল কেন দিদি?
রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের মতো নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানের নজরদারিতে হোক সেই নির্বাচন। সেই বিষয়ে রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দানের জনসভা থেকে মমতাকে তীব্র আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বললেন, মমতা তো সংসদে নিজেই চাইতেন অনুপ্রবেশকারীদের হটাতে। এখন উনি কলকাতা থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জে পৌঁছে গিয়েছেন। হঠাৎ এই বদল কেন দিদি?
এদিন রামলীলা ময়দানের সভায় প্রথম থেকেই এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে যে দেশজোড়া বিক্ষোভ হচ্ছে তার জবাব দেওয়া শুরু করেন মোদী। বোঝানোর চেষ্টা করেন, তাঁর সরকার সাধারণ মানুষের উন্নয়নের পক্ষেই রয়েছে। এই বিষয়ে বিরোধীরা ভুল বোঝাচ্ছে সবাইকে। তারপরেই মমতার প্রসঙ্গে আসেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “মমতা এখন কলকাতা থেকে সরাসরি রাষ্ট্রপুঞ্জে পৌঁছে গিয়েছেন। উনি তো নিজেই সংসদে চাইতেন অনুপ্রবেশকারীদের হটাতে। বলতেন শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হোক। স্পিকারের সামনে কাগজ ছুড়তেন। হঠাৎ এত বদল কেন দিদি? বাংলার মানুষের থেকে কি আপনার বিশ্বাস উঠে গেছে? বাংলার মানুষকে কেন নিজের শত্রু মনে করছেন আপনি? আপনি কাদের সমর্থন করছেন সেটা সবাই বুঝতে পারছে।”
গত কয়েক দিন ধরে নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। বাংলায় তৃণমূলনেত্রী সরাসরি নেতৃত্ব দিচ্ছেন এই দুই আইনের বিরোধিতায়। প্রতিদিনই কোনও না কোনও কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। জনসভা থেকে মমতা কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমাগত তোপ দাগছেন।
রীতিমতো চ্যালেঞ্জের সুরে বলছেন, তিনি কোনও ভাবেই বাংলায় নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি হতে দেবেন না। বিজেপি ধর্মের রাজনীতি করছে বলেই অভিযোগ করেছেন তৃণমূলনেত্রী। তারই জবাব এদিন দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার গণভোটের দাবি তুলেও পরের দিনই সেই দাবি থেকে সরে এসেছিলেন মমতা। শুক্রবার দুপুরে তপসিয়ায় তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে গণভোট সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি বলেছি নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে মানুষের মতামত নেওয়া হোক। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের কথা যেমন বলেছি তেমন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কথাও বলেছি।” তিনি এও বলেন, “গণভোটের ইংরেজি প্রতিশব্দটা কিন্তু বলিনি। বার বার বলছি, জনমত নেওয়ার কথা বোঝাতে চেয়েছি মাত্র। আমি ভাত আর আমি ভাত খাই এক ব্যাপার নয়।”
তিনি এও বলেন, “গণভোটের ইংরেজি প্রতিশব্দটা কিন্তু বলিনি। বার বার বলছি, জনমত নেওয়ার কথা বোঝাতে চেয়েছি মাত্র। আমি ভাত আর আমি ভাত খাই এক ব্যাপার নয়।”
মোদীর এদিনের মন্তব্যের পর রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, গণভোটের দাবি তোলা যে ঠিক হয়নি তা তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব নিজেরাই বুঝতে পেরেছিলেন। তাই তার সাফাইও দিতে হয় মমতাকে। বিজেপিও অভিযোগ করে, এই দাবি তুলে গণতন্ত্রের অপমান করেছেন মমতা।
সেই বিষয়কেই আরও একটু চাগিয়ে দিলেন মোদী। বোঝাতে চাইলেন, মমতা নিজেই একাধিকবার অনুপ্রবেশকারীদের হটানো ও শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যাপারে সংসদে সওয়াল করেছেন। তাহলে তাঁর বর্তমান বিরোধিতা শুধুমাত্রই মোদী ও বিজেপির বিরোধিতা করার জন্য। মোদী বোঝানোর চেষ্টা করলেন, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতেই বিরোধিতা করছেন মমতা, জনগণের জন্য নয়।