দেশের সময়ওয়েব ডেস্কঃ ভোট শুরু হতেনা হতেই এক ঘণ্টার মধ্যেই রণক্ষেত্রের চেহারা নিল আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের জেমুয়া। সকাল থেকেই জেমুয়া হাই স্কুলের পাঁচটি বুথে লম্বা লাইন ছিল ভোটারদের। কিন্তু ভোট শুরু করা যায়নি। বিজেপি-র পোলিং এজেন্টরা দাবি করেন, কেন্দ্রীয়বাহিনী না এলে ভোট শুরু হবে না। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, দ্রুত ভোট শুরু করতে হবে। খবর যায় সেক্টর অফিসে। সময় এগোতে থাকে। কিন্তু থমকে থাকে ভোট।

প্রায় সওয়া আটটা নাগাদ সেখানে পৌঁছয় বিরাট পুলিশবাহিনী। নেতৃত্বে পুলিশ আধিকারিক অভিষেক মোদী। নামে র‍্যাফ। এরই মধ্যে সেখানে পৌঁছে যান তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। তাঁকে দেখেই ফুঁসে ওঠে লাইনে দাঁড়ানো জনতা। বুথের মধ্যেই শুরু হয় অশান্তি। বেপরোয়া লাঠিচার্জ শুরু করে কেন্দ্রীয়বাহিনী।

বুথ থেকে রাস্তায় নেমে আসে সেই অশান্তি। অভিযোগ স্থানীয় দোকানদের উপরেও লাঠিচার্জ করে পুলিশ এবং র‍্যাফ। বাদ যায়নি শিশুও। যাঁরা ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন, আতঙ্কে তাঁরাও বুথ ছাড়তে শুরু করেন।

বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর মিলেছে বহরমপুরের বিভিন্ন বুথে। খবর পেয়ে কখনও মোটর সাইকেল বা কখনও গাড়ি নিয়ে সেই বুথে পৌঁছে যান কংগ্রেস প্রার্থী অধীররঞ্জন চৌধুরী। বহরমপুরে বিটি কলেজে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ছাপ্পা ভটের অভিযোগ তোলে কংগ্রেস। এক তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতারও হয়েছে।

কেতুগ্রামের একটি বুথে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সবচেয়ে অবাক কাণ্ড যে বুথে এই অভিযোগ উঠেছে, সেখানে মোতায়েন রয়েছে কেন্দ্রীয়বাহিনী। খবর পাওয়ার পনেরো মিনিটের মধ্যে ওই বুথের প্রিসাইডিং অফিসারকে সরিয়ে দেয় কমিশন।

আসানসোলের বারাবনির একটি বুথে বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়কে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূলকর্মীরা। গাড়ি ঘিরে চলে বিক্ষোভ। তৃণমূলের অভিযোগ, বুথে ঢুকে গুণ্ডামী করেছেন বাবুল। পাল্টা বাবুল বলেন, “আমাকে এক জায়গায় ব্লক করে রাখার ছক কষেছে তৃণমূল। কিন্তু কোনও লাভ নেই। আমি সব জায়গায় ঘুরব।”

দক্ষিণবঙ্গে ভোট শুরু হতেই অশান্তি বাড়তে শুরু করল। চতুর্থ দফার প্রথম দু’ঘণ্টায় আট কেন্দ্র থেকে যে ছবি উঠে এসেছে, তা গত তিন দফায় দেখা যায়নি। এখনও বাকি গতা দিন।

বিজেপি এজেন্টকে তুলে দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল আসানসোল কেন্দ্রের বারাবনির কাশিডাঙায়। বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়কে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ তৃণমূলকর্মীদের। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পাল্টা তৃণমূলের অভিযোগ, বুথে ঢুকে গুন্ডামি করেছেন বাবুল। গোটা ঘটনায় জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট চাইল কমিশন।

কাশিডাঙা প্রাথমিক স্কুলে বিজেপি এজেন্ট কে তুলে দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে সেখানে পৌঁছন বাবুল। বাড়ি থেকে ওই এজেন্টকে নিয়ে বুথে যান বাবুল। প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে শুরু হয় বচসা। অভিযোগ, এরপরই উত্তেজিত বাবুল ধমকের সুরে প্রিসাইডিং অফিসারকে বলেন, “আপনার কেরিয়ার শেষ করে দেব।” এরপর বুথের বাইরে এলেই তাঁর গাড়ি ধরে শুরু হয় বিক্ষোভ। তৃণমূলকর্মীদের অভিযোগ, বুথের মধ্যে ঢুকে গুন্ডামি করেছেন বাবুল। ভেঙে দেওয়া হয় আসানসোলের বিদায়ী সাংসদের গাড়ির কাচ।


পুরো ঘটনায় জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছে নির্বাচন কমিশন। আসানসোলেরই ১২৫ থেকে ১২৯ নম্বর বুথেও বিজেপি এবং সিপিএম কর্মীদের মধ্যে গন্ডগোল বাঁধে। সেখানেও নিরাপত্তা বাহিনী গেলে তাদের সঙ্গে হাতাহাতি হয় বিরোধী কর্মী, সমর্থকদের। আসানসোলের জামুড়িয়াতে ভোটারদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে বুথমুখী করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here