দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ এরাজ্যের প্রার্থী নিয়ে কম সমস্যায় পড়েননি বিজেপি নেতৃত্ব।দিকেদিকে প্রার্থীদের নিয়ে ক্ষোভ হয়েছে দিনের পর দিন।এবার প্রার্থী নিয়ে শোরগোল ফেললেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বাংলা থেকে প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রস্তাব দিলেন মুকুল।

শনিবাসরীয় দুপুরে বাংলায় এ বার নতুন জল্পনার কথা উস্কে দিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। এ দিন দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে সভা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। ওই সভাতেই বোমাটি ফাটিয়েছেন মুকুল।

হেলিকপ্টার থেকে নেমে মোদী তখন সবে মঞ্চে এসে বসেছেন। হাতে মাইক নিয়ে মুকুলবাবু তখন জনতার উদ্দেশে বলেন, “বাংলায় গণতন্ত্র নেই। অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চলছে। তা খতম করতে আমরা চাই নরেন্দ্র মোদী বাংলায় প্রার্থী হোন”। মুকুলবাবুর কথা শুনেই হাততালিতে ফেটে পড়ে ভিড়ে ঠাসা সভাস্থল।

তা হওয়ারই কথা! কিন্তু প্রশ্ন হল, এটা কি শুধুই কথার কথা। নাকি এ কথার মধ্যে দম রয়েছে।

সভার পর এ দিন মুকুলবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি হাতের তাস পুরোটা দেখাতে চাননি। বলেন, দেখুন না কী হয়! আবার বিজেপি রাজ্য নেতাদের অনেককে প্রশ্ন করা হলে, বোঝা যায় তাঁদের কাছে এ রহস্যের কোনও হদিশ নেই।
তা হলে?

মাস ছয়েক আগেও রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ আকছার বলতেন, প্রধানমন্ত্রী, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে বলেছি বাংলা থেকে প্রার্থী হতে। তবে সেটা যে দলের কর্মীদের মনোবল বাড়ানোর টোটকা তা তাঁর কথাতেই প্রকাশ পেত। মুকুলবাবুও যে এমনটা করেন না তা নয়। কিন্তু রাজ্য রাজনীতিতে খটকা লাগছে শুধু একটা ঘটনায়। তা হল, মোদীকে মঞ্চে বসিয়ে এ কথা বলেছেন মুকুলবাবু। তাই এই প্রশ্নও উঠছে যে, সবটাই কি আগাম চিত্রনাট্য মেনেই হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ বারও বারাণসীতে প্রার্থী হচ্ছেন। তাৎপর্যপূর্ণ হল, সেখানে কংগ্রেসও মোদীকে রহস্যের মধ্যে রেখেছে। দু’দিন আগেও রাহুল গান্ধী হেঁয়ালি করে বুঝিয়েছেন, বারাণসীতে মোদীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হতেই পারেন তাঁর বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢড়া। সন্দেহ নেই, বারাণসীতে তখন লড়াই জমজমাট হয়ে যাবে।

তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, ব্যাপারটা শুধু তা নয়। এ বার অমেঠী আসনও রাহুলের জন্য পুরোপুরি নিরাপদ বলা যায় না। তবে রাহুল কেরলের ওয়ানাড় আসন থেকে লড়ছেন কৌশলগত কারণে। দক্ষিণ ভারত থেকে এ বার আসন বাড়ানোর আশা করছে কংগ্রেস। সেখানকার ভোটকে প্রভাবিত করতেই রাহুল এই কৌশল নিয়েছেন।

সেই আঙ্গিকে দেখলে বোঝা যাবে, মোদী-অমিত শাহদের এ বার গোড়া থেকেই নজর কিন্তু পূর্ব দিকে। কারণ, উত্তর ভারতে তাঁদের আসন বাড়ানোর জায়গা নেই। সম্পৃক্ত হয়ে গিয়েছে। সেখানে আসন কমবে। ফলে বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, অসম, ত্রিপুরা, ঝাড়খণ্ড সহ উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে। কলকাতা তথা দক্ষিণবঙ্গকে পূবের গেটওয়ে বলা হয়। হতেই পারে পূর্ব ভারতের ভোটকে প্রভাবিত করতে বিজেপি নেতারা মোদীকে দক্ষিণ বাংলার কোনও আসনে প্রার্থী করার কথা ভাবছেন।

বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সূত্রে বলা হচ্ছে, এমন কোনও সম্ভাবনা তৈরি হলে তা খুব শিগগির ঘোষণা হবে। কারণ, দক্ষিণবঙ্গের আসনগুলিতেও মনোনয়ন পেশ করার জন্য খুব বেশি সময় হাতে নেই। মোদীর মনে কী আছে এখন সেটাই দেখার।

কথায় বলে, রাজনীতি সম্ভাবনার খেলা!

হক কথা। নইলে দেড় মাসে আগেও কে জানতেন যে উত্তরপ্রদেশের অমেঠী লোকসভা আসনের পাশাপাশি এ বার সুদূর দক্ষিণে কেরলের ওয়ানাড় আসন থেকেও প্রার্থী হবেন রাহুল গান্ধী!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here