পার্থ সারথি নন্দী – বনগাঁঃ বেশ কিছু বনেদি বাড়ির – পুজোর গল্প কথার রেশ রয়ে গেছে,দশকের পর দশক ধরে৷ তেমনই একটি বনেদি বাড়ী উত্তর ২৪পরগনার বনগাঁর গোপাল নগরে চাঁদ সওদাগরের বংশধর দাঁ বাড়ি৷ এই বাড়ীর পুজোতে প্রাচীন রীতি মেনেই পুজিতহন কমলেকামিনী দূর্গা
প্রায় ৩০০ বছর আগে চাঁদ সওদাগরের বংশধর দাঁ পরিবারের সদস্যরা স্বপ্নে পাওয়া দেবীমূর্তির আদলে মূর্তি বানিয়েই বর্ধমানের বৈচিতে প্রথম শুরু করেছিলেন কমলেকামিনী দূর্গাপুজো।
পরবর্তি সময়ে বংশধরদের একাংশ বনগাঁ মহকুমার গোপালনগরে চলে আসেন ব্যবসার সুবাদে,সেখানেই চাঁদ সওদাগড়ের বংশধরেরা শুরু করেন কমলেকামিনী দূর্গাপুজো।প্রায় তিনশো বছর ধরে প্রাচীন ঐতিহ্য মেনে এখনও সেই পুজোর আয়োজন হয়ে আসছে।
পরিবার সূত্রে জানাযায় চাঁদ সওদাগরের ছেলে সুমন্তকে যখন এক রাজা মাঝ সমুদ্রে ফেলে দেন, উদ্ধার করেন দেবী দূর্গা। সেই থেকেই পরবর্তিতে এই বংশের সদস্যরা অসুরবিহীন দূর্গা প্রতিমার পুজো শুরু করেন। এখানে দেবীর দশ হাত নয় ,দুটি হাত দেবী দূর্গার। একহাতে সুমন্ত,আর অন্য হাতে পদ্ম। সুমন্ত কে সমুদ্র থেকে উদ্ধারের সময়ের সেই রুপই প্রতি বছর ধরে দূর্গা মূর্তি তে ফুটে ওঠে।
দাঁ পরিবারের বৃদ্ধা এক গৃহবধূ পুষ্পরানী দাঁ জানালেন, জন্মাষ্টমীর দিন থেকে প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু হয়। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত কুমড়ো, আঁখ, বলি হয়। এলাকার প্রচুর মানুষ মানসা করেন। দন্ডি কেটে বুক চিরে রক্ত দেন। অষ্টমীতে এলাকার প্রচুর মানুষ প্রসাদ নিতে হাজির হন। দশমীর দিন আদিবাসীদের কাঁধে চড়ে দাঁ বাড়ির পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার নিয়ম পালন করা হয়।
দাঁ বাড়ির এই কয়েক শতাব্দী প্রাচীন পুজোতে অংশ নেবার জন্য ভিড় করেন গোপালনগর এলাকা সহ বিভিন্ন প্রান্তের বহু সাধারন ধর্মপ্রাণ মানুষ৷ বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজীৎ দাস বলেন দাঁ বাড়ীর এই পুজো ঘিরে এখনও যথেষ্ট উন্মাদনা রয়েগেছে এলাকার মানুষের মনে৷ ছোটবেলায় বইতে পড়া চাঁদ সওদা গড়ের গল্প কথার রেশরয়ে গেছে আমাদের মনেএই পুজো তার পরিপুরক৷ -দেশের সময়: