দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ এনআরসিও ক্যাব ইস্যুতে শনিবার সকাল থেকে তেতে উঠল গোটা জেলা। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ, ইটবৃষ্টি, বাসে আগুন পরের পর ঘটনাক্রমে বিপর্যস্ত হাওড়ার জনজীবন।
এ দিন সকালে হাওড়ার সলপ মোড়ে জমা হন বিক্ষোভকারীরা। শুরু হয় অবরোধ। রাস্তার উপরেই টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে জনতা। থমকে যায় যানবাহন। পরে পুলিশ গিয়ে হটিয়ে দেয় অবরোধকারীদের।
এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই জনতা পুলিশ খণ্ডযুদ্ধে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গড়পার কাছে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে। শুরু হয় অবরোধ। পুলিশ পৌঁছতেই জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে শুরু করে বলে অভিযোগ। দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয় কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে। তাই অবরোধ তুলতে লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। আরও তেতে ওঠে এলাকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস শেল ছোড়ে।
কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপর মোট দশটা যাত্রীবাহী বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। আচমকা অশান্তির মধ্যে পড়ে প্রাণের দায়ে ছোটাছুটি শুরু করেন বাসের যাত্রীরা। পালাতে গিয়ে বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন বলে জানা গেছে। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই বয়স্ক মানুষ ও শিশু। আগুন লাগানো হয় ট্রাকেও।
এ দিকে সকাল থেকে হাওড়া শাখার বিভিন্ন স্টেশনে অবরোধ-বিক্ষোভের জেরে থমকে গেছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ট্রেন চলাচল। সাঁকরাইল, আবাগা-সহ একাধিক স্টেশনে ট্রেন অবরোধের জেরে বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে একাধিক দূরপাল্লার ও লোকাল ট্রেন।
সাঁকরাইল স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ। জেলায় বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ হটাতে গিয়ে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে শনিবার ভোর তিনটে নাগাদ হাওড়ার বাগনান থানা এলাকার লাইব্রেরি মোড়ে। বাগনান থানার পুলিশ সূত্রে খবর, এদিন ভোরে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা আগুন লাগিয়ে চম্পট দেয়।
দরমা, অ্যাসবেস্টস, টিন, বেড়া, বাঁশ, প্লাইউড দিয়ে তৈরি দোকানঘরগুলিতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আগুন। প্রথমে দোকানমালিক এবং স্থানীয়রাই আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে উলুবেড়িয়া থেকে দমকলের দুটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দমকল আসার আগেই দোকানঘরগুলি ভস্মীভূত হয়ে যায়। আনুমানিক কয়েক লক্ষ টাকার লোকসান হয়েছে।
এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয় বিধায়ক অরুণাভ সেন পঞ্চায়েত সমিতির তরফে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ত্রিপল বিলি করেন।
বিধায়ক বলেছেন, জাতীয় সড়কে থাকা সিসিটিভি দেখে দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করে দ্রুত পাকড়াও করে কড়া শাস্তি দেওয়া হবে। পুলিসের কোনও গাফিলতি প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থাগ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন বিধায়ক। এলাকা থমথমে থাকায় প্রচুর পুলিশ এবং র্যাফ মোতায়েন রয়েছে।