টিটাগড়ে গুলিবিদ্ধ তৃণমূল নেতার মৃত্যুকে ঘিরে উত্তেজনা, ধৃত ৪,চলছে পুলিশের টহলদারি:

0
732

নিলাদ্রী ভৌমিক:টিটাগড়: দেশের সময়ঃ সোমবার ভরদুপুরে টিটাগড় পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের একটি পুজো মন্ডপের সামনে দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখম হন তৃণমূল টিটাগড়ের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল সভাপতি সতীশ মিশ্র। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার গভীর রাতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। ঘটনার পরই পুলিশ ভোলা প্রসাদ এবং কালা মুন্না নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের আজ বারাকপুর আদালতে তোলা হলে পুলিশের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক। এদিন, দক্ষিণ ২৪পরগনা থেকে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করেছে টিটাগড় থানার পুলিশ। এই খুনের ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুর থেকেই শুরু হয়েছ, রাজনৈতিক চাপান-উতোর। স্থানীয় বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত, ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিং অভিযোগ করেন, দুষ্কৃতীরা স্থানীয় কাউন্সিলর মনীশ শুক্লাকে মারতে এসেছিল। কারণ, এলাকায় গুন্ডারাজ খতম করে ,শান্তি ফিরিয়ে এনেছে মণীশ। ধৃত ভোলা আগে সিপি এম করত এবং প্রাক্তন সাংসদের ঘনিষ্ট ছিল। আমরা ওদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এদিকে, খুনের ঘটনায় বিজেপি একটি কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। এলাকায় এদিন তৃণমূলের একাংশ অবশ্য দলের অন্তর্কলহের ছাপ দেখছে খুনের ঘটনায়৷ তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, সিপিএমের দুষ্কৃতীরা এখন বিজেপি তে ভিড়েচ্ছে। আমাদের নেতা মণীশ শুক্লাকে মারতে এসেছিল পরিকল্পিত ভাবে দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার নেপথ্যে বি জে পির চক্রান্ত রয়েছে। এদিন সকালে সাংবাদিক বৈঠকে ব্যারাকপুর পুলিস কমিশনারেটের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ধৃত দুই ভাইয়েরই বয়স ২০ বছরের আশেপাশে। তারা টিটাগড়েই কোনও কারখানায় শ্রমিকের কাজ করত। তাদেরকে সম্ভবত ভাড়া করা হয়েছিল সতীশকে খুনের জন্যই। কেন এই খুন তা জানতে ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে। চারজনকেই মুখোমুখি বসিয়ে জেরার পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিস। ধৃত চারজনের মধ্যে একজন পেশায় ব্যবসায়ী। তদন্তের আগে এব্যাপারে কিছুই নির্দিষ্টভাবে জানানো যাবে না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছে পুলিস। সোমবারই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল কালু গুন্ডা এবং ভোলা প্রসাদকে। গ্রেপ্তারের পরই ভোলাপ্রসাদ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফলে সে বাদে বাকি তিনজনকে মঙ্গলবার ব্যারাকপুর আদালতে তুলে নিজেদের হেপাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হবে বলে জানিয়েছে কমিশনারেট। মঙ্গলবার বিকেলে মৃত তৃণমূল নেতার মরদেহ বাড়িতে আনার পর কোনওরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে টিটাগড়ের ব্রহ্মস্থানে মোতায়েন করা হয়েছে ভারী সংখ্যায় পুলিসকর্মী, কমব্যাট ফোর্স এবং র‌্যাফ। ইতি মধ্যে চারজন গ্রেফতার হয়েছে। পুলিশ সঠিক ভাবেই খুনের তদন্ত করছে,দোষীরা পার পাবে না। যদিও, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই খুনের পিছনে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও এলাকা দখলের লড়াই বলে অভিযোগ করেছেন। বিটি রোডের সিসিটিভি ফুটেজ এবং স্থানীয় সোর্সের মাধ্যমেই অভিযুক্তদের সন্ধান পায় পুলিস।
সোমবার দুপুর একটা নাগাদ কাজ থেকে ফিরে স্থানীয় একটি নির্মীয়মাণ কালীপুজোর মণ্ডপে বসে ঘনিষ্ঠ বন্ধু তথা স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর মণীশ শুক্লার সঙ্গে কথা বলছিলেন টিটাগড়ের ওয়াগন সুপারভাইজার সতীশ। সেসময় তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় আততায়ীরা। গুলি লাগে সতীশের বুকের বাঁদিকের পাঁজরে। এরপর আততায়ীরা হেঁটেই পালিয়ে যায় ঘটনাস্থল থেকে। রক্তাক্ত সতীশকে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয় রাতেই। কিন্তু গুলি বের করতে পারেননি চিকিৎসকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলেই এই মৃত্যু কারণ, গুলিতে সতীশের হৃৎপিণ্ড ফেটে গিয়েছিল। তৃণমূল কাউন্সিলর মণীশ শুক্লার দাবি, তাঁকে খুন করতে গিয়ে গুলি লক্ষভ্রষ্ট হওয়ায় মারা গিয়েছেন সতীশ। এলাকায় শান্তশিষ্ট মানুষ হিসেবে পরিচিত সতীশের কারও সঙ্গে শত্রুতা ছিল না বলে দাবি করেছেন দলীয় নেতাকর্মী এবং স্থানীয় বাসিন্দারাও। ঘটনায় অভিযোগের তির বিজেপির দিকে।
এলাকায় পুলিশ,কমব্যাট ফোর্স ও র‍্যাফ মোতায়েন করা হয়েছে। সতীশ মিশ্রর মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

Previous article‘কিশোর কুমার জুনিয়র’
Next articleনিম্নচাপ ঘনীভূত হওয়ায়,দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি বাড়বে:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here