দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কোভিড পরিস্থিতিতে এবছর উত্তর ২৪পরগনার টাকিতে ইছামতী নদীতে বিসর্জনের উৎসবেও বাঁধা পড়তে চলেছে। এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে কোনও সবুজ সঙ্কেত মেলেনি। টাকি পুরসভার পুরপ্রধান সোমনাথ মুখার্জি জানান, ‘এবছর টাকিতে ইছামতীর বুকে বিসর্জনের উৎসব করা যাবে বলে এরকম কোনও সিদ্ধান্ত আমরা এখনও পর্যন্ত নিতে পারিনি। মহকুমা প্রশাসন থেকে যা নির্দেশ আছে, তাতে করোনা পরিস্থিতির কারণে এবছর টাকিতে প্রতিমা বিসর্জন নদীতে করা যাবে না।’
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজোর আয়োজক ক্লাবগুলি এবারে করোনা মোকাবিলায় শামিল নানা ভাবে। মানুষের মনে কোভিড শঙ্কা এখনও তাড়াকরে বেড়াচ্ছে। সরকার, প্রশাসনও উৎসবে মানুষকে সংযত থাকার কথাই বলছে। এই পরিস্থিতিতে টাকিতে বিজয়ার উৎসব হবে কিনা তা নিয়ে অনেকের মনে জিজ্ঞাসা চিহ্ন বাসা বেঁধেছে । টাকির ইছামতীর বুকে বিসর্জনের উৎসবের ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের।
দেশ ভাগ হওয়ার পরও সেই চিরাচরিত উৎসবের চেহারায় কোন পরিবর্তন হয়নি। বিজয়ার দিন ইছামতীর বুকে দুই বাংলা এক হয়ে যায়। দু’দেশের সীমারেখার কোনও ভেদ থাকে না। একই নদীর বুকে ভারত বাংলাদেশের নৌকা নামে। দু’দেশের প্রতিমা নিয়ে নদীর বুকে চলে ‘কার্নিভাল’। ইছামতীর দু’পাড়ে দুই বাংলার গ্রাম শহর যেন এক হয়ে যায়। কয়েক লক্ষ মানুষকে সাক্ষী রেখে দেশ কালের গণ্ডি পেরিয়ে খণ্ডিত বাংলা ওই একদিন কিছু সময়ের জন্য মিলে যায়।
নিরাপত্তার কারণে ইদানীং কয়েক বছর টাকির বিজয়ার উৎসবে দু’দেশের সীমান্ত পাহারায় কড়াকড়ি হয়েছে। কিছু বিধিনিষেধ আরোপ হয়েছে। তবু উৎসবে দুই বাংলার মিলনের সুরটি আজও অটুট। যার টানে দূর–দূরান্ত থেকে পর্যটকরা টাকিতে ছুটে আসেন। এবারে সেই সুর আর হয়তো বাজবে না ইছামতীর পাড়ে।
টাকির ক্লাব কর্তা–সহ পুলিশ প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন টাকির পুরপ্রধান সোমনাথ মুখার্জি। সোমনাথবাবু বলেন, ‘মহকুমাশাসকের নির্দেশ অনুসারে এখনও পর্যন্ত নদীতে বিসর্জনের শোভাযাত্রা অনিশ্চিত। সেক্ষেত্রে দূরত্ব বিধি মেনে প্রতিমা নদীতে এনে বিসর্জন দেওয়া হবে বলেই ধারনা।’