দুর্গাপূজায় এবং নানান মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে-উৎসবে-বিবাহে দুয়ারের পাশে, মন্দিরের প্রবেশপথে, মণ্ডপে-প্রতিমার সামীপ্যে একফালি কাটা কলাগাছের উপকাণ্ড এনে সাজানো হয়। দুর্গাপূজার বোধনেও বিল্ববৃক্ষের ডাল রাখা হয়; তা অল্পসময়ের মধ্যে নিতান্তই প্রাণহীন, শুষ্ক হয়ে হরেক সাজসজ্জার মাঝে বেমানান লাগে। এইভাবে অনেক কলার চারাও নষ্ট হয়, যা ফুল-ফল দিতে পারতো। বেলের ডালও অকারণে বিনষ্ট হয়।

এই গাছগুলিই যদি যত্ন করে টবে লালন-পালন করে চারাকুশলী/নার্সারীম্যান/ফুলমালী উৎসবের দিনগুলিতে বিক্রি করেন, তাদের বেশ কিছুটা আয় হতে পারে। মাঝারি/বড় টবে রোপণ করা কলাগাছের চারা বা বেঁটেজাতের (যেমন গ্র্যাণ্ড নাইনি) ফলন্ত গাছগুলি কমকরে তিন চারশো টাকায় বিকোবে। এমনকি তার চেয়েও বেশি দাম পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। পুজোর পর তা মানস-ভাসান দিয়ে উদ্যোক্তাদের কাউকে উপহার দেওয়া যেতে পারে। একফালি জমি থাকলে সেখানে গাছগুলি লাগিয়েও দেওয়া যায়।

একইভাবে বোধনের সময় বেলগাছের বড় ডাল গাছ থেকে ভেঙে না এনে, বেলগাছের কলমের চারা টবে রোপন করে পূজায় দশকর্মার দোকানে বিক্রি হতে পারে। বারোয়ারি পুজোর নামে গাছপালা লণ্ডভণ্ড করে ভেঙে আনা ঠিক নয়। পূর্বে যেখানে পূজা হত, যে মন্দিরে, যে গৃহে, তারপাশে রোপণ করাই থাকতো বেলগাছ, প্রবেশপথে কলাগাছের সম্ভার, পুজোর কাজে লাগানো তুলসির কেয়ারি ও তুলসীমঞ্চ, নীলকণ্ঠ-অপরাজিতা-অতসী-জবা ইত্যাদির বাগান; কখনও মন্দির সন্নিহিত পুষ্করিণীতে পদ্ম।

টবে রক্ষিত কলা, বেল, তুলসী ইত্যাদির চাহিদা থাকলে নার্সারী ম্যান বা ফুলের দোকানদার সেই মতো তৈরি থাকবেন। সতেজ গাছ বিক্রি হবে। যারা পুজো উদ্বোধনে আসবেন, তাদের ফুলের স্তবক না দিয়ে হাতে সুদৃশ্য টবের ফুলগাছ দিয়ে বরণ করে নিন। ফুল এবং গাছের অনাবশ্যক অপচয় বন্ধ হোক।

পরিশেষে/পূজা সম্পন্ন হয়ে গেলে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ ফুল-মালা-বেলপাতা ইত্যাদি পচনশীল দ্রব্য মণ্ডপ-সন্নিহিত স্থানে বড় গর্ত করে তা পচিয়ে জৈব সার তৈরি করে নিন, দূষণ বন্ধ করুন, পুজোর স্থান আবর্জনা মুক্ত রাখুন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here