দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতা ও হেনস্থার অভিযোগ করে রবিবার রাতেই সিবিআইয়ের অন্তর্বর্তী প্রধান এম নাগেশ্বর রাও জানিয়েছিলেন, আজ সোমবার এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টে যাবেন তাঁরা। পাল্টা প্রস্তুতি নিয়েছে রাজ্য সরকার তথা কলকাতা পুলিশও। সম্ভবত রাজ্য সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করবেন কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ তথা আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি।

সার্বিক এই পরিস্থিতিতে বাংলা তথা গোটা দেশের নজর এখন রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের দিকে। সর্বোচ্চ আদালত কী রায় দেয়, বিচারপতিরা রায় দিতে গিয়ে কোনও বিশেষ পর্যবেক্ষণ করেন কি না, কিংবা বিষয়টিকে প্রথমে হাইকোর্টের বিবেচনার জন্য পাঠিয়ে দেয় কি না সুপ্রিম কোর্ট– এ সব সম্ভাবনা ও প্রশ্ন ঘনাচ্ছে সব মহলে।

সিবিআইয়ের অন্তর্বর্তী প্রধানের বক্তব্য, চিটফান্ড তদন্তের ভার সিবিআই হাতে পাওয়ার পর থেকেই অসহযোগিতা করছে রাজ্য সরকার। চিটফান্ড কেলেঙ্কারির তদন্তের জন্য এক সময়ে রাজীব কুমারের নেতৃত্বেই স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেটিং টিম গঠন করেছিল রাজ্য সরকার। সিবিআই তদন্তভার পাওয়ার আগে এসআইটি চিটফান্ড সংক্রান্ত প্রচুর নথি, ইলেকট্রনিক তথ্য-প্রমাণ, কম্পিউটার, সিডিআর বাজেয়াপ্ত করেছিল। অভিযোগ, সেগুলির হস্তান্তরের জন্য কলকাতা পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করা হলেও, তা হাতে পায়নি সিবিআই। এ ব্যাপারে প্রশাসনের শীর্ষ স্তরেও কথা বলা হয়েছিল। এমনকী সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হয়েছিল সিবিআই। তখন সর্বোচ্চ আদালতই জানিয়েছিল, তদন্তে যেন সবাই সহযোগিতা করে।

সিবিআই অন্তর্বর্তী প্রধানের বক্তব্য, এর পরেও কোনও সহযোগিতা না পেয়েই রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে গিয়েছিলেন সিবিআইয়ের অফিসাররা। তাঁর এ-ও বক্তব্য, এ জন্য কোনও আগাম অনুমতির দরকার ছিল না।

রাজ্য সরকার তথা কলকাতা পুলিশের পাল্টা বক্তব্য, পুলিশ কমিশনারের মতো পদমর্যাদার এক কর্তার বাড়িকে সিবিআই যাওয়ার আগে বৈধ অনুমতিপত্র বা সার্চ ওয়ারেন্ট থাকা দরকার ছিল। প্রথমত, এ রকম কোনও কাগজ রবিবার দেখাতে পারেননি সিবিআইয়ের অফিসাররা। দ্বিতীয়ত, ফৌজদারি আইনের ১৬০ ধারায় রাজীব কুমার এবং অন্য পুলিশ কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমন পাঠিয়েছিল সিবিআই। কিন্তু সে ব্যাপারে হাইকোর্ট জানিয়েছিল, ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওই সব সমনের ব্যাপারে স্বগিতাদেশ জারী থাকবে।

কলকাতা পুলিশ সূত্রে বলা হচ্ছে, এ দিন শেক্সপিয়ার সরণী থানায় সিবিআই অফিসারদের সঙ্গে আলোচনায় যখন সেই প্রসঙ্গ ওঠে, তখন দেখা যায় সিবিআইয়ের অফিসাররা তা জানতেনই না।

তবে এ সবের পরেও আরও কিছু বিষয় রয়েছে। সিবিআইয়ের অফিসাররা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের হেনস্থা করেছে কলকাতা পুলিশ। পাঁচ জন সিবিআই অফিসারকে আটক করে রাখা হয়েছিল শেক্সপিয়ার সরণী থানায়। তা ছাড়া সিবিআইয়ের কলকাতায় থাকা ডেপুটি ডিরেক্টর পঙ্কজ শ্রীবাস্তবের বাড়ির বাইরে এবং সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআইয়ের অফিসও ঘিরে ফেলেছিল কলকাতা পুলিশ। এ বিষয়টিও তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে জানাবেন বলে জানিয়েছেন। এ জন্য রবিবার মধ্য রাত পর্যন্ত নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে বৈঠক হয়েছে। তা ছাড়া ভিডিও ফুটেজও সংগ্রহ করেছে সিবিআই।

সব শুনে সর্বোচ্চ আদালত কী রায় দেয়, এখন তারই অপেক্ষায় গোটা দেশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here