দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ লকডাউনের মধ্যে পুলিশের মানবিক মুখ দেখল কলকাতা। কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় অসহায় প্রসূতিকে নিজেদের গাড়িতে তুলে সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছে দিল পুলিশ। তাতে প্রাণও রক্ষা হয়েছে প্রসূতি ও সন্তানের।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরে প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকা অসহায় এক মহিলা এবং তাঁর পরিবারের লোকজনকে নিজেদের গাড়িতে চাপিয়ে বুধবার হাসপাতালে পৌঁছে দেয় সোনারপুর থানার পুলিশ। কলকাতা পুলিশ এলাকাতেও প্রায় একই ঘটনা ঘটেছে।
ডিসি ইএসডি অজয় প্রসাদ বলেন, “বিপদে পড়া মানুষজনের পাশে দাঁড়াতে ও সব রকম সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। আমরা দিনরাত সেই চেষ্টাই করে চলেছি।”
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে যে ওই প্রসূতির নাম ইতিশা দাস। তাঁর প্রসব যন্ত্রণা শুরু হওয়ায় তাঁকে নিয়ে একটি প্রাইভেট গাড়িতে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য রওনা হন তাঁর পরিবার। ওই মহিলার বাড়ি মানিকতলার ক্যানাল সার্কুলার রোডে। তবে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর ইদানীং তিনি প্রগতি ময়দান এলাকার দক্ষিণ ট্যাংরা রোডে বাপের বাড়িতে থাকছিলেন।
বুধবার রাতে ওই প্রসূতিকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন পরিবারের লোকেরা কিন্তু মাঝ পথে সেই গাড়ি খারাপ হয়ে যায়। তারপরই পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে।
সোনারপুর স্টেশনের কাছে বুধবার দুপুরে একই ধরনের ঘটনা ঘটে। প্রসূতি স্ত্রী তখন বাড়িতে প্রসব যন্ত্রণায় কাতরালেও গাড়ির ব্যবস্থা না করতে পারছিলেন না সুকান্ত সরণির বাসিন্দা সুরেন্দ্র গুপ্ত। কী করবেন বুঝে উঠতে না পেরে সোনারপুর স্টেশনের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় সোনারপুর থানার আইসি সঞ্জীব চক্রবর্তী তাঁকে দাঁড়িয়ে থাকার কারণ জিজ্ঞেস করেন। সুরেন্দ্র তখন তাঁর অসহায় অবস্থার কথা জানান। স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার দরকার কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্স পাচ্ছেন না। প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করার টাকা তাঁর নেই। তাই সাহায্যের আশায় রাস্তায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন।
এরপরে আইসি নিজের গাড়িতে তুলে নেন সুরেন্দ্রকে। সুকান্ত সরণিতে সুরেন্দ্রর বাড়িতে গিয়ে দুই প্রতিবেশীর সাহায্যে কাতরাতে থাকা সুরেন্দ্রর স্ত্রী জ্যোতিকে নিজের গাড়িতে তুলে নেন আইসি। রওনা দেন সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালে উদ্দেশে তবে মাঝপথে গাড়িতেই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন জ্যোতিদেবী। আইসি সঞ্জীব জানিয়েছেন যে মা ও সদ্যোজাত দু’জনেই হাসপাতালে ভর্তি এবং উভয়েই সুস্থ আছেন।